মশা ক্ষুদ্র মশা!
আকারে ছোট হলে কী হবে! ক্ষুদ্র মশাই এখন কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিদের মাথাব্যাথার কারণ। দিনভর মশার কামড় আর ভনভনাতিতে বন্দিদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। গত মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর জেল পরিদর্শনে আসা কারামন্ত্রী অবনী জোয়ারদারকেও বন্দিদের কাছে মশা-কাহিনি শুনতে হয়েছে। জেল সূত্রে খবর, বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের মধ্যে ওই দিন মন্ত্রীর কাছে সব থেকে বেশি নালিশ এসেছিল এই মশার কামড় নিয়েই! যেমন এক বন্দি নালিশ করেন, ‘মশার কামড়ে টেকা যায় না। শুধু রাতে নয়, দিনের বেশিরভাগ সময়ই মশা ভনভন করে উড়ে বেড়ায়। রক্ত খেয়ে শেষ করে দেয়।’ কয়েকজন বন্দি আবার একযোগে আর্জি জানান, ‘এত মশার কামড় সহ্য করা যায় না। একটা করে মশারি পেলে ভাল হয়।’ বন্দিদের মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার নজিরও রয়েছে।
মন্ত্রী অবশ্য তাঁর অসহায়তার কথা জানিয়ে দেন। জেলের মধ্যে মশা দমনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অবনীবাবু জানান, জেলের মধ্যে বন্দিদের এ ভাবে মশারি দেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে তাঁর কিছু করার নেই।
পরে কারামন্ত্রী বলেন, “বন্দিদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে একটা কথাই শুনেছি, এখানে খুব মশা। জেলে স্প্রে করা হয়। তাতেও নাকি মশা যায় না।” মন্ত্রীর কথায়, “বন্দিরা মশারি চেয়েছে। কিন্তু, জেলে তো এ ভাবে মশারি দেওয়া যায় না। জেলের হাসপাতালে যারা থাকে, তারা মশারি পায়। এটা বন্দিদের বুঝিয়ে বলেছি।” ওই দিন মন্ত্রীর সঙ্গে জেল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। মৃগেনবাবুও মানছেন, “অন্য কিছু নিয়ে বন্দিদের অভিযোগ নেই। এখানে খাবার ভাল। পরিবেশ ভাল। শুধু মশা নিয়েই বন্দিদের অভিযোগ রয়েছে।” বিধায়কেরও আশ্বাস, “মশারি দেওয়া না গেলেও মশা দমনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও বেশি স্প্রে করা হবে।”
সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন মিলিয়ে মেদিনীপুর জেলে প্রায় ১,২৫০ জন বন্দি রয়েছে। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে একটা বড় অংশ আবার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। এখানে মোট ওয়ার্ড রয়েছে ১৪টি, সেল ৫২টি। সেলে সাধারণত একজন করে বন্দি থাকে। ওয়ার্ডে থাকে অনেকে। এক জেলবন্দির পরিজনও বলছিলেন, “শুনেছি এখানে খুব মশা। জেল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
অভিযোগ, মেদিনীপুর জেল চত্বর বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়। জেল আগাছা ও ঝোপঝাড় রয়েছে। সেখানেই মশা বংশবৃদ্ধি করছে। জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, “জেলের পরিবেশ খুব ভাল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy