Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সম্প্রসারণ হয়নি ফুটব্রিজ

প্রাণ হাতে লাইন পার মাদপুরে

খড়্গপুর থেকে হাওড়া যাওয়ার পথে দ্বিতীয় স্টেশন মাদপুরের পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। কারণ, ওই স্টেশনের উত্তর দিকে পঞ্চম লাইন তৈরি হলেও নতুন করে প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার কোনও ফুটব্রিজ গড়ে তোলা হয়নি। ফলে স্টেশনের উত্তর দিকে বছর তিনেক ধরে লাইন পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের।

নজর-নেই: ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মেই শেষ হয়ে গিয়েছে ফুটব্রিজ। নিজস্ব চিত্র

নজর-নেই: ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মেই শেষ হয়ে গিয়েছে ফুটব্রিজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাদপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

নতুন লাইন হয়েছে। কিন্তু ফুটব্রিজের সম্প্রসারণ হয়নি। তাই ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার চলছে মাদপুর স্টেশনে।

সম্প্রতি ভোগপুরে লাইন পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক অস্থায়ী রেলকর্মীর। ফুটব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহার করেননি তিনি। খড়্গপুর থেকে হাওড়া যাওয়ার পথে দ্বিতীয় স্টেশন মাদপুরের পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। কারণ, ওই স্টেশনের উত্তর দিকে পঞ্চম লাইন তৈরি হলেও নতুন করে প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার কোনও ফুটব্রিজ গড়ে তোলা হয়নি। ফলে স্টেশনের উত্তর দিকে বছর তিনেক ধরে লাইন পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের। কৃষ্ণচরণপুরের বাসিন্দা মুসু কিস্কু বলেন, “লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ ফুটব্রিজ না করায় আমরা সমস্যায় রয়েছি। এমনকী, মালগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে মালগাড়ির তলা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার চলছে।’’

ফুটব্রিজ সম্প্রসারণ নিয়ে কী ভাবছেন রেল কর্তৃপক্ষ? খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “আমাদের অনেক স্টেশনে ফুটব্রিজ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কাজ চলছে। তবে তার মধ্যে মাদপুর রয়েছে কি না, দেখতে হবে। যদি স্টেশন থেকে বাইরে যাওয়ার ফুটব্রিজ না থাকে পদক্ষেপ করব।” মাদপুর বাজার রয়েছে স্টেশনের দক্ষিণ অংশে। আর বিডিও অফিস আছে উত্তর দিকে। একসময়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে আসতে স্টেশনের পূর্ব অংশে থাকা রেলগেট পেরিয়ে যাতায়াত করতেন মাদপুরের বাসিন্দারা। কয়েকবছর আগে সেই রেলগেট তুলে দেন রেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দক্ষিণ থেকে উত্তরে আসতে স্টেশনের পশ্চিমাংশে থাকা একটি রেলগেট দিয়ে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয়দের। অধিকাংশ যাত্রীকে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ যেতে হয়। স্টেশনের উত্তর দিকে রয়েছে ভৈরবপুর, মামুদপুর, কাপাসগেড়িয়া, কৃষ্ণচরণপুর, বলরামপুর, রামচন্দ্রপুর, বড়গেড়িয়া, বৈতা-সহ বহু গ্রাম। এই গ্রামগুলির যাত্রীদের ট্রেন থেকে নেমে লাইন পেরোতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে। পঞ্চম লাইনে মালগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলে ভোগান্তি চরমে পৌঁছচ্ছে। দক্ষিণ প্রান্তে থাকা একটি মাত্র টিকিট কাউন্টারে পৌঁছতেও নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের।

শুধু স্থানীয় বাসিন্দা নয়। দূর-দূরান্ত থেকে মাদপুর বিডিও অফিসে আসা মানুষও স্টেশন থেকে এই লাইন পেরিয়েই যাতায়াত করেন। ফলে প্রতিনিয়ত রয়েছে বিপদের আশঙ্কা। মাদপুর স্টেশনে দুর্ঘটনা ঘটেছে আগেও। ২০১৫ সালের জুনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আঞ্চলিক আধিকারিক (মেদিনীপুর) লিয়াকত আলি কাপাসগেড়িয়ার বাড়ি থেকে মেদিনীপুর অফিসে যাচ্ছিলেন। ট্রেন ধরতে স্টেশনে যাওয়ার পথে লাইন পার হওয়ার সময় আদ্রা-হাওড়া শিরোমণি প্যাসেঞ্জারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর। ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি খড়্গপুরের পাঁচেরপল্লির বাসিন্দা বছর সত্তরের রুইদাস বণিক মাদপুরে কাজে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে মালগাড়ির তলা দিয়ে লাইন পেরোতে গিয়ে পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে কাটা পড়েন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE