Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে জ্বলল না রাবণ, দশেরা ফিকে রেলশহরে

অবশ্য ঐতিহ্যবাহী এই রাবণবধ ছাড়াও শহরের ভবানীপুরে একটি রাবণ বধ উৎসবের আয়োজন করেছিল স্থানীয় বজরং কমিটি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২০
Share: Save:

সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। দফায় দফায় বৃষ্টিও চলছে। তার জেরে ফিকে হল খড়্গপুরে রাবণ বধের ঐতিহ্যও। আতসবাজির রোশনাইয়ে অতিকায় রাবণের একাংশে আগুনই লাগল না।

শনিবার, দশমীর বিকেলে রেলনগরীর নিউ সেটলমেন্ট সংলগ্ন রাবণ ময়দানে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। দিল্লির রামলীলা ময়দানের ঘরানায় ৯২ বছরের এই রাবণ পোড়া উৎসবে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সামিল হয়েছিল কয়েক লক্ষ জনতা। তবে রাবণ পুরোপুরি না না জ্বলায় দর্শনার্থীরা খুশি হননি। সেই সঙ্গে নিজস্বীর ভিড়ে ভেস্তে গিয়েছে রাম-রাবণের নকল যুদ্ধও।

অবশ্য ঐতিহ্যবাহী এই রাবণবধ ছাড়াও শহরের ভবানীপুরে একটি রাবণ বধ উৎসবের আয়োজন করেছিল স্থানীয় বজরং কমিটি।

অশুভের বিনাশ আর শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বানে ১৯২৫ সাল থেকে দশেরা উৎসব কমিটি খড়্গপুরে এই উৎসব করে আসছে। বাঙালি, গুজরাতি, মারোয়াড়ি, তেলুগু, বিহারি-সহ নানা সম্প্রদায়ের মানুষ এতে সামিল হন। মেদিনীপুরের তিন জেলা এবং পড়শি রাজ্য ওডিশা, ঝাড়খণ্ড থেকেও লোকজন আসেন। গেটবাজার সংলগ্ন রাবণ ময়দানে বধ করা হয় নারকেল বোমা, আতসবাজিতে মোড়া দশাননের বিশালাকার কুশপুতুল।

এর আগে ২০১৩-তে বৃষ্টিতে তাল কেটেছিল দশেরার। সে বছর রাবণের ১০টি মাথার ৯টিই জ্বলেনি। এ বার বৃষ্টি ভেজা পুজোর মধ্যেই ৫৮ ফুটের রাবণের কুশপুতুল বানানো হয়। লঙ্কেশ এ বার ছিলেন রথে। তবে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় দশটি মাথার ন’টিই পায়ের দিকে ঝুঁকে যায়, ভেঙে য়ায় রথও। এ দিন সলতে পাকানো তির ছুড়েছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ছিলেন দশেরা কমিটির সভাপতি তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা প্রমুখ। তবে রাবনের শরীরে আগুন লাগলেও জ্বলেনি উপরের অংশ। তা দেখে ভিড়ে দাঁড়ানো সঞ্জয় বিশ্বাস বলছিলেন, “দুই ছেলেকে রাবণ বধ দেখাব বলে নিয়ে এসেছিলাম। তব ভেস্তে গেল।”

প্রতিবার রাবণ পোড়ার আগে যে রাম-রাবণের যুদ্ধ হয় তাও এ বার হয়নি। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি আখড়া এসেছিল। সেখানে অনেকেই রাম-রাবণ সেজেছিলেন। কিন্তু মাঠে পৌঁছতেই রাম-রাবণের সঙ্গে সকলে নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে, নকল যুদ্ধ আর হয়নি। দশেরা উৎসব কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি প্রদীপ সরকার বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে তো আর লড়াই সম্ভব নয়। তবে ঐতিহ্য বজায় রেখে সুষ্ঠুভাবে রাবণ বধ হয়েছে। আমরা এর মাধ্যমে অশুভ শক্তি বিনাশের বার্তা দিতে চেয়েছি।” এ দিন শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও ছিল খুব ভাল। যানজট হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur Dussehra rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE