নেট দুনিয়ায় ‘আত্মনির্ভর’ হওয়াই লক্ষ্য। আর তা পূরণে এ রাজ্যে ‘কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন’ গড়ার ঘোষণা করেছেন রিলায়েন্স-কর্তা মুকেশ অম্বানি। সেই সূত্রে দিঘায় সমুদ্রের নীচে কেব্ল পাতা হবে। এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দেখা ও সে ব্যাপারে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের (ডিএসডিএ) সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা শুরু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
গত বছর ‘বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স’ আয়োজিত ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক কনক্লেভ’-এ গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, ২০২৬-এর মার্চের মধ্যে দিঘায় সমুদ্রের নীচে ‘কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন’ চালু হয়ে যাবে। বর্তমানে পূর্ব ভারতে সিগনাল আসে মুম্বই এবং চেন্নাই থেকে। ফলে, দেরি হয়। দিঘায় ‘কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন’ চালু হলে, গোটা পূর্ব ভারতে ইন্টারনেট আরও শক্তিশালী হবে। ‘ডেটা ট্রান্সফার’ সহজ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প-সহ অন্য ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটবে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০২০ সালেই এক হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য। এ বারের বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনেও এই প্রকল্পের কথা উঠে এসেছে। ডিএসডিএ-র এগজ়িকিউটিভ অফিসার অপূর্বকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘দিঘায় কেবল্ ল্যান্ডিং স্টেশন গড়ে উঠবে। তবে এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।’’ পর্ষদ সূত্রের খবর, গত ডিসেম্বরে রিলায়েন্স জিও-র এক প্রতিনিধি দিঘায় পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন। পর্ষদ জানতে চায়, পরিবেশ মন্ত্রক-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের কোন কোন দফতরের ছাড়পত্র তাদের রয়েছে। জানানো হয়, সে সবের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদন জানানো হয়েছে। পর্ষদ আশ্বস্ত করে, সংশ্লিষ্ট সব ছাড়পত্র থাকলে, জমির ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
জানা গিয়েছে, নিউ দিঘায় কনভেনশন সেন্টার ‘দিঘাশ্রীর’ কাছেই একটি জমি জিও-র তরফে পছন্দ করা হয়েছে। প্রায় তিন একর ওই জমি ডিএসডিএ-র হাতেই রয়েছে। রিলায়েন্স জিও-র সাউথ-কোস্টাল জ়োনের কাঁথি শাখার আধিকারিক সৌমিত্র মিত্র বলেন, ‘‘দিঘায় সমুদ্রের নিচে ফাইবার পাতা হবে। সংস্থার তরফে কাজ এগোচ্ছে।’’
তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর রয়েছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘তাজপুরে বন্দরের মতো দিঘায় কেব্ল ল্যান্ডিং সেন্টার নিয়েও কুমির ছানা দেখানো হচ্ছে।’’ তবে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির বক্তব্য, ‘‘রিলায়েন্সকে জমি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন হবেই।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)