Advertisement
E-Paper

‘বাঘবন্দি খেলা’ শুধুই স্মৃতি, স্টেশনও সেই তিমিরে

১৯৭৫ সালে পাওয়া পীযূষ বসুর পরিচালনায় উত্তম কুমার-সুপ্রিয়াদেবী অভিনীত ‘বাঘবন্দি খেলা’-র প্রথম দৃশ্যটিতে যে স্টেশন চত্বরটি দেখা যায়, সেটি ঝাড়গ্রামের সারদিয়া (সর্ডিহা) রেল স্টেশন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০২:০৩
সেই স্টেশন, বেহাল ফুটব্রিজ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

সেই স্টেশন, বেহাল ফুটব্রিজ (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

স্টেশনের ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে নামছেন পার্থ মুখোপাধ্যায়। সিঁড়ি থেকে নামতেই গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায় থাকা উত্তমকুমারের সেই গুরুগম্ভীর গলায় ডাক, ‘‘কেমন আছিস রাজু (পার্থ অভিনীত চরিত্রের নাম রাজেশ)!’’

১৯৭৫ সালে পাওয়া পীযূষ বসুর পরিচালনায় উত্তম কুমার-সুপ্রিয়াদেবী অভিনীত ‘বাঘবন্দি খেলা’-র প্রথম দৃশ্যটিতে যে স্টেশন চত্বরটি দেখা যায়, সেটি ঝাড়গ্রামের সারদিয়া (সর্ডিহা) রেল স্টেশন। এই ছবিতে একাধিকবার স্টেশ‌নটি দেখা গিয়েছে। সারদিয়া স্টেশনটি রয়েছে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া এলাকায়। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি ছবির শ্যুটিংয়ে মানিকপাড়ায় এসেছিলেন উত্তমকুমার, সুপ্রিয়াদেবী ও পার্থ মুখোপাধ্যায়। দিন চারেক শ্যুটিং হয়েছিল স্টেশন চত্বরে। শ্যুটিংয়ের সময় শেড বিহীন জরাজীর্ণ ফুটওভার ব্রিজ আর নিচু প্ল্যাটফর্ম দেখে অবাক হয়েছিলেন স্বয়ং মহানায়ক। এলাকার প্রবীণরা জানাচ্ছেন, শ্যুটিংয়ের সময়ে সিঁড়ি দিয়ে পার্থ নামার রিহার্সাল দেওয়ার সময় মহানায়ক সতর্ক দিয়েছিলেন, ‘‘পার্থ সাবধানে নামিস!’’ এত বছর পরেও ঝাড়গ্রাম জেলার অন্যতম দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনটি কার্যত আগের মতোই থেকে গিয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে সামান্যই।

সম্প্রতি স্টেশনটির পরিষেবাগত প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য সঞ্জয় হাজরা। এলাকাবাসীরা উত্তমকুমারের ছবির সময়কার উদাহরণ দিয়ে সঞ্জয়বাবুকে জানিয়েছেন, ৪৫ বছর পরেও স্টেশনটির তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। ১৮৯৬ সালে তৈরি হয়েছিল সারদিয়া স্টেশন। সর্ডিহা গ্রামটি অবশ্য স্টেশন থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরে। সর্ডিহা-র ইংরেজি অপভ্রংশে স্টেশনটির নাম সারদিয়া হয়ে যায়। স্টেশন থেকে বোরোলেই মানিকপাড়া মফসসসল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার এই স্টেশনটিতে আগে টাটা ও খড়্গপুরের মধ্যে যাতায়াতকারী গুটিকয় প্যাসেঞ্জার আর লোকাল ট্রেন থামত। এখন লোকাল ও প্যাসেঞ্জারের পাশাপাশি, কেবলমাত্র স্টিল এক্সপ্রেস থামে।

‘বাঘবন্দি খেলা’র সেই দৃশ্য।

মানিকপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঘবন্দি খেলা ছবির শ্যুটিংয়ের সময় আমি একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। ওই সময় এত ছোট স্টেশন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন উত্তমকুমার।’’ বাসিন্দারা জানালেন, এখনও প্রায় একই রকম রয়েছে স্টেশনটি। কেবল হাওড়াগামী ডাউন লাইনের প্ল্যাটফর্মটা উঁচু করা হয়েছে। দৈর্ঘ্য বাড়েনি। টাটাগামী লাইনে প্ল্যাটফর্ম এখনও নিচু। ফলে স্টিল এক্সপ্রেস থামলে শেষের দিকের বগিগুলি প্ল্যাটফর্ম পায় না। উত্তমকুমারের আমলে ফুট ওভার ব্রিজে শেড ছিল না। এখন শেড হয়েছে। ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে এখনও ফুট ব্রিজ নেই। সঞ্জয় বলেন, ‘‘সারদিয়া স্টেশনের ফুট ওভার ব্রিজটির অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্কার প্রয়োজন। প্ল্যাটফর্মে পর্যাপ্ত শেড প্রয়োজন। আলো-পাখাও দরকার। বিষয়গুলি রেল প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যাত্রীদের দাবি গুলি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Bagh Bondi Khela Sardiha Station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy