E-Paper

পার্শ্ব-শিক্ষকেরা ফিরলেন, স্বস্তি হেডস্যরদের

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের হাই স্কুলগুলিতে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কর্মবিরতি শেষ। শুক্রবার স্কুলে ফিরেছেন জেলার পার্শ্ব-শিক্ষকেরা। তাতেই কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা। এই পার্শ্ব-শিক্ষকদের উপরেই ভরসা করে এ দিন স্কুলগুলিতে সামাল দেওয়া গিয়েছে প্রথম পার্বিক মূল্যায়ন।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের হাই স্কুলগুলিতে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল ওই নির্দেশের পরে জেলার হাই স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে ও পরীক্ষা গ্রহণ করা নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েন প্রধান শিক্ষকেরা। গোদের উপরে বিষ ফোঁড়া হয়েছে, তিন দিন ধরে চলা পার্শ্ব-শিক্ষকদের কর্মবিরতি। পার্শ্ব শিক্ষকরা বেতন বৃদ্ধি ও স্থায়ীকরণের দাবিতে গত ৭ এপ্রিল, (সোমবার থেকে বুধবার) তিনদিন কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছিলেন। ফলে স্কুলগুলিতে সমস্যা আরও বাড়ে। একাধিক স্কুলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির প্রথম পার্বিক পরীক্ষা ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন চালাতে কার্যত কালঘাম ছুটে যায়।

বৃহস্পতিবার মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে স্কুল ছুটি ছিল। শুক্রবার স্কুল খোলে। এ দিন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অধিকাংশই স্কুলে না এলেও পার্শ্ব শিক্ষকরা স্কুলে আসেন। কর্মবিরতি শেষের পরে তাঁরা এ দিন স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া ও পঠনপাঠনে সাহায্য করেছেন। ফলে এদিন কিছুটা হলেও প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্বস্তিতে ছিলেন। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কৃষ্ণগঞ্জ কৃষি-শিল্প বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরুণ কুমার দাস বলেন, ‘‘আমাদের চারজন পার্শ্ব-শিক্ষকের সবাই সোমবার থেকে বুধবার কর্মবিরতি পালন করছিলেন। এদিকে সাতজন শিক্ষক চাকরিহারা হয়েছে। পড়ুয়াদের প্রথম পার্বিক পরীক্ষা নিতে অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল। তবে এ দিন চার পার্শ্ব-শিক্ষকই এসেছিলেন। কাজে সাহায্য করেছেন।’’ পাঁশকুড়ার ব্রাডলি বার্ট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস কামিলা বলেন, ‘‘স্কুলে চারজন পার্শ্ব-শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা তিনদিন কর্মবিরতি পালনের জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। শিক্ষকের অভাবের কথা মাথায় রেখেই তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে স্কুল ছেড়ে না যান। তাঁরা সকলে অনুরোধ রেখেছেন। ফলে স্কুলে পঠনপাঠনে ব্যঘাত ঘটেনি।’’

কর্মবিরতির মধ্যেও কাজ করেছেন কাঁথি শহরে ১০টি হাই স্কুলের পার্শ্ব-শিক্ষকরা। তাঁরা কর্মবিরতিতে যাননি। স্কুলে নিয়মিত এসে পরীক্ষা পরিচালনায় যুক্ত থেকেছেন। আবার খেজুরির সুভাষপল্লি হাই স্কুল ও হেঁড়িয়া হাই স্কুলের পার্শ্ব-শিক্ষকরা সোমবার থেকে বুধবার পড়ুয়াদের মূল্যায়ন পরীক্ষার পরে প্রতীকী অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। এ দিন সকলেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাই তাঁরা স্বাভাবিক নিয়মে স্কুলের পরীক্ষা নেওয়া এবং খাতা দেখার কাজ করেছেন। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর পার্শ্ব-শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের উপদেষ্টা রমেশ ডিন্ডা বলেন, ‘‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আমরা গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেছিলাম। এতে জেলার অধিকাংশ পার্শ্ব-শিক্ষক সামিল হয়েছিলেন। তবে অনকে স্কুলে পরীক্ষা চলায় একাংশ পার্শ্ব-শিক্ষক সেই কাজে সাহায্য করেছেন। তাঁরা প্রতীকীভাবে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ দিন সবাই স্কুলে ফিরে গিয়েছেন।’’

পার্শ্বশিক্ষকেরা পাশে থাকলেও আগামী দিনের কথা ভেবে চিন্তা একেবারে দূর হচ্ছে না প্রধান শিক্ষকদের। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেড মাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসে’র জেলা সম্পাদক মৃণ্ময় মাজি বলেন, ‘‘পার্শ্ব-শিক্ষকরা শুক্রবার কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে কিছুটা সুরাহা হয়েছে। কিন্তু চাকরিহারারা তো আসছেন না। আগামী ১৬ এপ্রিল থেকে সমস্ত শ্রেণির ক্লাস শুরু হলে এই অভাব আরও স্পষ্ট হবে। এটা ভেবেই আমাদের উদ্বেগ কাটছে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy