সমাজ মাধ্যমে প্রচারিত এসএফআই (বাঁ দিকে) ও তৃণমূলের (ডান দিকে) হেল্পলাইন-পোস্টার।
করোনা মোকাবিলায় তাদের বানানো পোস্টার ‘চুরি’ করেছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। নাম-ধাম মুছে নিজেদের ছবি, নাম সাঁটিয়ে প্রচারও চালাচ্ছেন। এমনই নালিশ সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের।
নানা প্রকল্পের নাম পরিবর্তন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সঙ্ঘাত নতুন নয়। এ বার পোস্টার চুরি নিয়ে বিরোধীদের এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলেও। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে এসএফআই।
এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি বলেন, ‘‘চুরি, মিথ্যাচার এই শাসক দলের জন্ম থেকেই মজ্জাগত! এখন আমাদের তৈরি পোস্টার ওদের নেতারা নিজেদের নামে চালাচ্ছেন।’’ পাল্টা বিঁধছে তৃণমূলও। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, ‘‘ওদের পোস্টার ধার করতে হবে, এমন দুর্দিন তৃণমূলের এখনও আসেনি। করোনা মোকাবিলায় তৃণমূলই কাজ করছে। আর কোনও দলকে দেখতে পাবেন না!’’
ঘটনাটি ঠিক কী?
করোনা মোকাবিলায় ‘টেলিমেডিসিন’ পরিষেবার ব্যবস্থা করেছে জেলা এসএফআই। মেদিনীপুর মেডিক্যালের কয়েকজন চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম তৈরি করেছে তারা। তার প্রচারে একটি পোস্টারও বানিয়েছে। সেখানে ওই চিকিৎসকদের নাম এবং ফোন নম্বর দিয়ে জানানো রয়েছে, প্রয়োজনে কবে কার সঙ্গে কখন যোগাযোগ করা যাবে। ‘ডক্টরস্ হেল্পলাইন’ নামে এই পোস্টার সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছে জেলা এসএফআই। সিপিএমের ছাত্র সংগঠনটির অভিযোগ, ওই পোস্টারই তৃণমূলের একাধিক নেতার নাম, ছবি দিয়ে সমাজ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। পোস্টারে বাকি সব হুবহু একই। শুধু যেখানে এসএফআই লেখা ছিল, সেখানে তা মুছে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতাদের নাম এবং ছবি। দেখলে মনে হবে ওই পরিষেবার বন্দোবস্ত তৃণমূলই করেছে।
এসএফআই জানাচ্ছে, তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির নাম জুড়ে ওই পোস্টার পোস্ট করেছিলেন তৃণমূলের এক কর্মী। তারা ওই কর্মীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছিল, কেন তাদের উদ্যোগকে তৃণমূলের উদ্যোগ বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওই কর্মী ভুল স্বীকার করে পোস্টটি রিমুভ করেছেন। তৃণমূলের আরেক নেতা কৌশিক কুলভীও পোস্টার থেকে এসএফআইয়ের নাম মুছে সেখানে নিজের ছবি এবং নাম দিয়ে প্রচার করেছেন। এসএফআইয়ের দাবি, তারা কৌশিকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল। তবে তিনি ভুল স্বীকার করেননি। যোগাযোগ করা হলে কৌশিক অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কিছু করিনি। ছেলে ভুল করে করে ফেলেছে। রিমুভ করে দিচ্ছি।’’
ঘটনায় প্রতিবাদ এসেছে চিকিৎসকদের তরফেও। এসএফআই মেডিক্যালের চিকিৎসকদের যে দল গড়েছে, তাতে রয়েছেন সুধানীল সরকার। সুধানীল বলছেন, ‘‘এই উদ্যোগটি এসএফআইয়েরই। অন্য কেউ তা নিজেদের নামে চালাবেন, এটা সমর্থনযোগ্য নয়।’’ সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের দাবি, বিষয়টি প্রশাসনকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে হস্তক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার দাবি, ‘‘মেদিনীপুরে আমরা দলীয় উদ্যোগেই টেলিমেডিসিন পরিষেবা চালু করেছি। অন্য কারও পোস্টারে ছাপ মারার দরকারই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy