Advertisement
E-Paper

উড়ালপুলের জন্য ভাঙা হবে দু’শো দোকান

সাধারণ মানুষের হাতে থাকা (রায়ত) জমি ছাড়াই উড়ালপুল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল পুজোর আগে বৈঠকে। কালীপুজোর পরে ডেবরার সেই বালিচক উড়ালপুলের নির্মাণকাজে হাত দিতে চলেছে পূর্ত দফতর। অবশ্য এ জন্য রেলগেটের দু’দিকে বহু দোকান উচ্ছেদ করা হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২৩
বালিচক রেলগেটে যন্ত্রণার অপেক্ষা। ফাইল চিত্র।

বালিচক রেলগেটে যন্ত্রণার অপেক্ষা। ফাইল চিত্র।

সাধারণ মানুষের হাতে থাকা (রায়ত) জমি ছাড়াই উড়ালপুল গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল পুজোর আগে বৈঠকে। কালীপুজোর পরে ডেবরার সেই বালিচক উড়ালপুলের নির্মাণকাজে হাত দিতে চলেছে পূর্ত দফতর। অবশ্য এ জন্য রেলগেটের দু’দিকে বহু দোকান উচ্ছেদ করা হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে খবর। প্রায় দু’শো দোকান ভাঙা হবে যেগুলি পূর্ত দফতরের জমিতে রয়েছে। এই খবরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শোরগোল পড়েছে। দাবি উঠছে পুনর্বাসনের। আজ, সোমবার বিষয়টি নিয়ে তাই বৈঠকে বসবে জেলা পরিষদের পূর্ত দফতর।

ডেবরা ব্লকের পুরনো শহর বালিচক। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার রেলপথে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনও। স্টেশনকে কেন্দ্র করে কাছেই ডেবরা-সবং রাজ্য সড়কে বালিচক রেলগেটের দু’দিকে প্রচুর দোকান মাথা তুলেছে। এই দোকানগুলির অধিকাংশ পূর্ত দফতরের জমিতে হওয়ায় সঙ্কীর্ণ হয়েছে সড়ক। এ দিকে ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে, বেশিরভাগ সময়েই রেলগেট বন্ধ থাকে। সবং-ডেবরা ব্যস্ত সড়কে এই রেলগেটে যানজটে নাকাল হতে হয় স্থানীয়দের। তাই উড়ালপুলের দাবি ওঠে। ২০১১ সালে ঠিক হয়, রেল-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়ালপুল তৈরি হবে। ২০১-র ৪ জুন হরিমতি হাইস্কুল ময়দানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিচক উড়ালপুলের শিলান্যাসও করেন। তবে চার বছর কেটে গেলেও কাজ হয়নি।

প্রাথমিক সমস্যা হয় সংযোগকারী রাস্তার জন্য জমি নিয়ে। রাজ্য সড়কের ধারে বালিচক বাজার এলাকায় রায়ত জমির পাশাপাশি দোকানপাট থাকায় অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা যায়। গত বছর বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জমিদাতারা আগ্রহ প্রকাশ না করায় পিছিয়ে আসে পূর্ত দফতর। তবে উড়ালপুলের দাবিতে সরব হয় বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটি। কয়েকজন জমিদাতাকে বুঝিয়ে জমির সম্মতিপত্র জোগাড় করা হয়। তবে সকলে আগ্রহ প্রকাশ না করায় ভাবনাচিন্তা শুরু করে পূর্ত দফতর। নতুন করে জমি জরিপ হয়। এ বার পুজোর আগে ব্লক অফিসে সর্বদল বৈঠক ডেকে রায়ত জমি নেওয়া হচ্ছে না বলে পূর্ত দফতর জানিয়ে দেয়। এখন ঠিক হয়েছে, পূর্ত দফতরের ১৮ মিটার জমিতেই হবে উড়ালপুল। ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরির আশ্বাস, “কালীপুজোর পরেই নির্মাণকাজে হাত দেওয়া হবে।”

কাজ চলাকালীন ওই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে। সে ক্ষেত্রে রাধামোহনপুর ও শ্যামচক ঘুরে গাড়িগুলিকে যেতে হবে। তাই ওই দু’টি রাস্তা সংস্কার করা হবে। তবে ছোটগাড়ি বালিচক দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এ সব নিয়েই আজ, সোমবার জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগে বৈঠক হবে। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবালবাবু বলেন, “এ বছর আমাদের জেলায় রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা সেই নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। সেখানে বালিচক উড়ালপুলের কাজের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হবে।”

উড়ালপুল নির্মাণের খবরে বালিচকের বাসিন্দারা খুশি। যদিও দোকান উচ্ছেদ নিয়ে আলোড়ন পড়েছে। রেলগেটের উত্তরে একটি মিষ্টি দোকানের মালিক রাজেশ দে যেমন বলেন, “আমরা সকলেই চাই উড়ালপুল হোক। কিন্তু দোকান উচ্ছেদ হলে আমাদের পেট চালানো দায় হয়ে যাবে। তাই পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি।” একই সুর শোনা গিয়েছে রেলগেটের দক্ষিণ দিকের সোনা দোকানি অনীশ দাসের গলায়। তিনি বলেন, “বালিচকের বাসিন্দা হিসাবে উড়ালপুল সকলের প্রয়োজন। তবে একজন ব্যবসায়ী হিসাবে আমি ব্যক্তিগতভাবে পুনর্বাসনের লিখিত আশ্বাস চাই। তবেই আমি নিজের দোকান ছাড়ব।”

এই জট কী ভাবে কাটবে, তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছে। যদিও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বক্তব্য, “উড়ালপুলের কাজ করতে গেলে দফতরের জমিতে থাকা দোকান উচ্ছেদ করতেই হবে। দোকানিরাও উন্নয়নের স্বার্থে স্বেচ্ছায় দোকান ছেড়ে দেবে আশা করছি। তবে আমরা দোকানিদের কথা ভেবে নিশ্চয় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব।”

flyover Shops
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy