Advertisement
E-Paper

সাইরেন সারাই হলেও বসেনি সিসি ক্যামেরা

কড়া নজরদারি! থোড়াই কেয়ার। টাকা খরচ করলেই হাতে আসবে মোবাইল। তারপর...। গরাদের ভিতরেই কি পালানোর পরিকল্পনা করেছিল জেলপালানোয় সিদ্ধহস্ত কাঁথির কুখ্যাত দুষ্কৃতী কর্ণ বেরা! সেই ঘটনার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কী অবস্থা কাঁথি সংশোধনাগারের? কী বলছেন সুপার? কর্মি কি পর্যাপ্ত? পরিকাঠামোই বা কেমন? খোঁজ নিল আনন্দবাজার।জেল থেকে বার বার পালানোর বিচারাধীন বন্দি পালানোর ঘটনায় কাঁথি  সংশোধনাগার এবং ৪ অক্টোবরের ঘটনার প্রেক্ষিতে কাঁথি আদালতের নিরাপত্তা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাওয়ায় চিন্তায় সংশ্লিষ্ট মহল। 

শান্তনু বেরা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫৭
কাঁথি সংশোধনাগার। নিজস্ব চিত্র

কাঁথি সংশোধনাগার। নিজস্ব চিত্র

২০১৭ সালের ২ মে, কাঁথি সংশোধনাগার থেকে জানালার লোহার রড কেটে পালিয়ে গিয়েছিল দাগি আসামি কর্ণ বেরা। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালানোর ক্ষেত্রে সেবার হ্যাটট্রিক হয়েছিল কর্ণের। বার বার জেল পালানোর ঘটনায় জেলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গত ৪ অক্টোবর কর্ণকে কাঁথি আদালতে তোলার সময় আদালত চত্বর থেকে গুলি ছুঁড়ে, বোমা ফাটিয়ে পুলিশকে জখম করে ফের পালিয়েছিল সে। পরে ওইদিনই অবশ্য তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। ফের অভি‌যোগ ওঠে আদালত চত্বরে উপযুক্ত নিরাপত্তা ছাড়াই কর্ণকে হাজির করা নিয়ে।

জেল থেকে বার বার পালানোর বিচারাধীন বন্দি পালানোর ঘটনায় কাঁথি সংশোধনাগার এবং ৪ অক্টোবরের ঘটনার প্রেক্ষিতে কাঁথি আদালতের নিরাপত্তা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু তারপরেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাওয়ায় চিন্তায় সংশ্লিষ্ট মহল।

কর্ণর ঘটনার পর কাঁথি সংশোধনাগারের ছবিটা অনেকটাই বদলেছে। খারাপ থাকা সাইরেন সারানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসেনি। কয়েদিদের বাড়ির লোকেরা খাবার বা অন্য কিছু কয়েদিদের দিতে এলে, সংশোধনাগারের কাছে একটি কন্টেনারে তা রাখতে হয়। কারাকর্মীরা সে সব পরীক্ষার পর তা কয়েদিদের কাছে পাঠানো হয়। কাঁথির সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট তথা কাঁথির মহকুমা শাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই সংশোধনাগার প্রায় একশ বছর পুরনো। তাই পরিকাঠামোর অনেক কিছুই বদলানো হয়েছে। কারা দফতরের কাছে সিসি টিভির জন্য আমরা আবেদন জানিয়েছি।’’

কাঁথি সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, কারা দফতরের মধ্যে থাকা বেশ কয়েকটি অব্যবহৃত কটেজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সংশোধনাগারের প্রাচীরের উচ্চতা। পুরুষ ও মহিলা বিভাগের যাতায়াতের রাস্তা আলাদা করা হয়েছে। সংশোধনাগারে চারটি ওয়ার্ড রয়েছে। তিনটি পুরুষদের ও একটি মহিলাদের। আগে একদিনে সকলের চুলদাড়ি কাটা হত। এখন আলাদা আলাদা দিনে, এক একটি ওয়ার্ডে চুল-দাড়ি কাটার ব্যবস্থা হয়েছে। কয়েদিদের সঙ্গে বাড়ির লোকেদের দেখা করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।

শুধু সংশোধনাগার নয়, কাঁথি আদালত চত্বর থেকেও কর্ণর পালানোর আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। তবে নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগও থেমে নেই। কাঁথি ক্রিমিনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, আদালত চত্বরে প্রায় ৫০০ জন আইনজীবী প্রতিদিন থাকেন। অনেক বহিরাগত আদালত চত্বরে গাড়ি নিয়ে অবাধে ঢুকে পড়ে। অবৈধ পার্কিং হয়। এ সবে নজরদারি তেমন নেই। আদালতে আসা যাওয়ার পথে কোনরকম চেকিং করা হয় না। তবে কর্ণকাণ্ডের পর, বিচারকদের কক্ষ থেকে আদালতের জেল হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আসামি পিছু পুলিশকর্মীর সংখ্যা ও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কাঁথি আদালতের আইনজীবী আনন্দ দাস বলেন, ‘‘ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোয় কে অপরাধ করছে, তা বোঝা যাবে। তবে আদালত চত্বরে বহিরাগত আটকাতে আরও কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’

কাঁথি ক্রিমিনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অসিত বরণ মাইতি বলেন, “আমরা এসিজেএমকে নিরাপত্তা বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। তারপরই ক্লোজ সার্কিট টিভি, ক্যামেরা বসেছে। এসিজেএম আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, পুজোর ছুটির পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’’

Jail Siren CCTV
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy