Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৩

গরমে হাল্কাই ‘হট কেক’ কাঁথির শাড়ি মেলায়

হলুদ রঙের ঢাকাই শাড়িটা প্রথম দিন মেলায় এসেই পছন্দ হয়েছিল গৃহবধূ প্রমিতা পালের। কিন্তু এত ভাল একটা ঢাকাইয়ের অনেক দাম হবে, ভেবে আর দাম জিজ্ঞাসা করেননি। কিন্তু শাড়ি তো! তাই ইতস্তত করেও দামটা জিজ্ঞাসাই করে ফেলেছিলেন।

কেনাকাটা: শাড়ি কিনতে স্টলে ভিড় মহিলাদের। নিজস্ব চিত্র

কেনাকাটা: শাড়ি কিনতে স্টলে ভিড় মহিলাদের। নিজস্ব চিত্র

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০২:১৫
Share: Save:

হলুদ রঙের ঢাকাই শাড়িটা প্রথম দিন মেলায় এসেই পছন্দ হয়েছিল গৃহবধূ প্রমিতা পালের। কিন্তু এত ভাল একটা ঢাকাইয়ের অনেক দাম হবে, ভেবে আর দাম জিজ্ঞাসা করেননি। কিন্তু শাড়ি তো! তাই ইতস্তত করেও দামটা জিজ্ঞাসাই করে ফেলেছিলেন। আর দাম শুনে তো তিনি থ! সাড়ে ন’শো টাকায় হলুদ ঢাকাই কিনে মেলা ছেড়েছেন শেষে।

প্রমিতদেবীর কথায়, ‘‘এটা তো একেবারে তাঁতির ঘরের দাম। এত কম টাকায় এত ভাল একটা কাপড় ছাড়া যায়, বলুন!’’

প্রতিযোগিতার দৌড়ে রাজ্যের তাঁত শিল্প এখন অনেকটাই রুগ্ন। সেই তাঁত শিল্প ও তাঁতিদের প্রচার-প্রসারের জন্য শনিবার থেকে কাঁথির শ্রীঅরবিন্দ স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ‘তাঁত বস্ত্র প্রদর্শনী ও মেলা’। মেলার আয়োজক ‘ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট হ্যান্ডলুম ওয়েভার্স
কো-অপারেটিভ সোসাইটি।’

সোসাইটির দাবি, নতুন প্রজন্মের তন্তুবায়দের এই মেলা বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে। কারণ, মেলার জন্য বিভিন্ন জেলার তাঁতিরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেরা কাপড়ের সম্ভার নিয়ে এনেছে। মেলার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কাঁথি মহকুমা প্রশাসন ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদও।

হাল ফ্যাশনের ডিজাইন ও নিত্যনতুন কাপড়ের সম্ভার নিয়ে এই মেলা নতুন নয়। এখানে তাঁতিরা ফড়েদের মাধ্যমে নয়। সরাসরি ক্রেতাদের কাছে শাড়ি বিক্রি করেন।

এ বারের মেলায় মুর্শিদাবাদ, নাদিয়া, বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, কুচবিহার, বীরভূম, হাওড়া-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় কয়েকশো‌ তাঁতি এসেছেন। নদিয়ার তাঁতি বিষ্ণু বসাক বলেন, “এই মেলার নাম রয়েছে। ভাল বিক্রি হয়। তাই প্রতি বছর আসি।’’ মেলার প্রথম দিন উপচে পড়া ভিড় ক্রেতাদের এই আস্থারই প্রমাণ দেয়।

মেলার শাড়ির মান ও সম্ভারে খুশি ক্রেতারাও। বালুচরী, জামদানি, কড়িয়াল, টাঙ্গাইল, ধনেখালি ও বেগমপুরী শাড়ির কেনাকাটা চলছে রমরমিয়ে। এছাড়া নতুন রকমের কিছু ছাপা শাড়ি তৈরি করেছেন তাঁতিরা, যা গরমের জন্য একেবারে আদর্শ। হাল্কা রং আর সুতির এই শাড়ি একেবারে ‘হট কেক।’

মেলার শাড়ির সর্বনিম্ন দাম ২০০। দাম ছাড়িয়েছে ৫ হাজারেও। আঠিলাগড়ির কুহেলি রায়, রামনগরের মৌমিতা হাজরাদের দাবি, “এক ছাদের তলায় এত বৈচিত্র্যপূর্ণ তাঁতের সম্ভার প্রশংসার যোগ্য। আর তাঁতির থেকে শাড়ি কেনার মজা আলাদা।’’

৯৪ টি স্টল নিয়ে এই প্রদর্শনী ও মেলা চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। মেলার কর্মকর্তা শুভ্রকান্তি পাল বলেন, “তাঁতশিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে এবং খোলা বাজার অর্থনীতিতে এই ধরনের উদ্যোগ খুবই কার্যকরী। এতে তাঁত শিল্পের উৎপাদন বাড়বে। আবার বাড়বে তাঁতের বাজারও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE