Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পদে না পদত্যাগ, ধন্দ

তৃণমূলের ভাঙন নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে। কাঁথি-১ ব্লকে সভাপতি হিসেবে গৌতম মাইতিকে দায়িত্ব দিয়েছে যুব তৃণমূল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কাঁথি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৬
Share: Save:

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নিঘর্ণ্ট ঘোষণার আগেই পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা কমিটির দুই সদস্য-সহ চার জন ইস্তফা দিলেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরির কাছে। সকলেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ কাঁথি মহকুমা এলাকার বাসিন্দা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বিধানসভা ভোটের মুখে ফের পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূলে বড় রকমের ভাঙন ঘটতে চলেছে! জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশের অবশ্য দাবি, ‘‘যাঁদের কথা বলা হচ্ছে তাঁরা সকলেই পদে রয়েছেন। তাই পদত্যাগের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’

শুক্রবার জেলার ২৫টি ব্লক এবং পাঁচটি শহরের সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির নাম ঘোষণা করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুরনোদের সভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে। তবে কাঁথি শহরে দীর্ঘদিনের পুরনো যুব সভাপতি শেখ ইমরানকে সরিয়ে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। পরিবর্তে নতুন শহর সভাপতি করা হয় সুরজিৎ নায়ককে। সুরজিৎ সম্পর্কে রামনগরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরির ভাগ্নে।

জেলা যুব তৃণমূল সূত্রের খবর, পদ থেকে সরানোর পরেই যুব তৃণমূল ছাড়ার কথা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে কাজ করা সম্ভব নয়। আমাকে যুব তৃণমূলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। তবে আমি তৃণমূল কর্মী হিসাবে কাজ করতে চাই।’’ ইমরানের পরে যুবর জেলা সভাপতির কাছে লিখিতভাবে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দেন কাঁথি-১ ব্লকের দুই সহ-সভাপতি নন্দ বেজ এবং পলাশ খাটুয়া। পরে জেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি সরতে চেয়েছেন আমিন সোহেল নামে আরেক যুব নেতা। এই তিনজনেই কাঁথি-১ ব্লকের বাসিন্দা। আর মোট চারজন যুব তৃণমূল ছেড়েছেন, তাঁরা সকলেই দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত।

এতেই তৃণমূলের ভাঙন নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে। কাঁথি-১ ব্লকে সভাপতি হিসেবে গৌতম মাইতিকে দায়িত্ব দিয়েছে যুব তৃণমূল। তিনিও অখিল গিরির পরিবারিক আত্মীয় বলেই বিক্ষুব্ধদের দাবি। এ প্রসঙ্গে আমিন সোহেল বলেন, ‘‘আমাদের তিনজনকেই ব্লকের কোনও কর্মসূচিতে ডাকা হতো না। তাছাড়া দলে ফের পরিবারতন্ত্র তৈরির চেষ্টা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই যুব তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।’’

দুমাস হল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তারপর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি চর্চিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। শুভেন্দুর হাত ধরে যাতে তৃণমূলে ভাঙন না ধরে, তার জন্য নিয়মিত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শাসকদল। কিন্তু যুবর চার নেতার ইস্তফায় প্রশ্ন, তাঁরাও কি বিজেপিতে যাচ্ছেন! ওই জল্পনায় অবশ্য জল ঢেলে এঁদের সকলের দাবি, তাঁরা তৃণমূলেই সাধারণ কর্মী হিসাবে থাকবেন। শুধু যুবর পদ ছেড়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওদের পার্টিটা তো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। সেখানে কে, কখন, কোন দায়িত্বে থাকে, আর কাকে কখন সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তা বলা মুশকিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE