ড্রাম রেখে প্রতিবাদ।
করোনা কালে যাঁদের ভূমিকা সর্বাধিক, সেই যোদ্ধারাই মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না অভিযোগ উঠেছে হলদিয়ার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এর প্রতিবাদে পুজোর আগে থেকেই ওই হাসপাতলের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।
হলদিয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা হিসাবে রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, প্রায় ১৮ মাস তাঁরা বেতন পাননি। আর ২২ মাস বেতন পাননি বলে দাবি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মীদের একাংশের। এই অবস্থা লকডাউনের বহু আগে থেকেই চলছে। কর্মীদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্মীদের প্রাপ্য টাকা আত্মসাৎ করে নিজেদের পকেটে ভরছেন। দিনের পর দিন অবহেলিত হচ্ছেন কর্মীরা। প্রতিবাদ করলেই পদক্ষেপ করার হুমকি দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘করোনা আবহে নিজের ও পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। আর আমাদের বেতনের টাকা না দিয়ে কর্তৃপক্ষরা নতুন নতুন দামি গাড়ি কিনছেন। মাত্র আট হাজার টাকা কর্তৃপক্ষ অগ্রিম হিসেবে দিয়েছেন কর্মীদের। ১৮ মাসে কাজ করে পেয়েছি মাত্র আট হাজার টাকা।’’
এর প্রতিবাদে পুজোর আগে থেকেই ওই বেসরকারি কলেজ ও হাসপাতালের মূল ফটকে তেলের ড্রাম বসিয়ে তা বন্ধ করে দেন কর্মীরা। হাসপাতালের চিকিৎসক বিধান রায় বলেন, ‘‘আমাদের চিকিৎসকদের পারিশ্রমিক বাকি ১৮ মাসেরও বেশি। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা চিকিৎসকরা অন্য জায়গায় কাজ করে চালিয়ে নিচ্ছি। আমি ভেবে অবাক হচ্ছি এখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা এতদিন বেতন না পেয়ে কীভাবে সংসার চালাচ্ছেন!’’
শুধু এই সংস্থার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মীরাই নন, সংস্থার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কর্মীদেরও অবস্থা প্রায় একইরকম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক কর্মী বলেন, ‘‘কর্মীদের কাঁদিয়ে এই সংস্থা এখন দুর্গাপূজা করছে। অথচ মাস পাঁচেক নিজের প্রাপ্য বেতনটুকু হাতে পাইনি।’’
বেসরকারি সংস্থাটির অন্যতম কর্তা লক্ষ্মণ শেঠকে জানতে চেয়ে এ ব্যাপারে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি কেটে দেন। তবে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরফে আশিস লাহিড়ী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজে গত দুবছর ছাত্র ভর্তি হয়নি। তাতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু কর্মীদের ভাল পরিমাণেই অগ্রিম দেওয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy