Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Education

দারিদ্রের সঙ্গে লড়ে ‘গেটে’ সফল ভগবানপুরের বুদ্ধদেব

বুদ্ধদেব জানিয়েছেন, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কথা জেনে তাঁর পড়ার যাবতীয় খরচ এবং বিনামূল্যে ছাত্রাবাসে রেখেছিলেন নয়াপুটের ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০০:৫৫
Share: Save:

দিনমজুর বাবা-মায়ের অভাবের সংসারে মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হতে চলেছিল। সেই ছেলে ‘গেট’ পরীক্ষায় ভাল স্থান দখল করে তাক লাগিয়ে দিল সকলকে।

ভগবানপুর-১ ব্লকের আবাসবেড়িয়া গ্রামের বুদ্ধদেব মণ্ডল। ‘গেট’ পরীক্ষায় ‘অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি’তে ১৮১ নম্বর স্থান দখল করেছে। বাবা জয়দেব মণ্ডল এবং মা আঙুরবালা দিনমজুর। ২০১৩ সালে সবংয়ের চাঁদকুড়ি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে কাঁথির স্কুলে ভর্তি হতে এসেছিল বুদ্ধদেব। যে স্কুলে প্রথমে ভর্তি হতে চেয়েছিল তিনি, সেখানে তাঁর ভর্তি হওয়া হয়নি। পরে নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ পেয়ে পাশ করেন বুদ্ধদেব। বেলুড় বিদ্যামন্দির থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা। স্নাতকোত্তরের শেষ সিমেস্টারের আগেই তাঁর ‘গেটে’র রেজাল্ট সামনে এসেছে।

বুদ্ধদেব জানিয়েছেন, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কথা জেনে তাঁর পড়ার যাবতীয় খরচ এবং বিনামূল্যে ছাত্রাবাসে রেখেছিলেন নয়াপুটের ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বসন্তকুমার ঘোড়ই তাঁকে নিজের বাড়িতে এনে রেখেছিলেন। প্রাক্তনীর এই সাফল্যে গর্বিত নয়াপুট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক বসন্ত বলেন, ‘‘এর আগে যাদব মাঝি এবং পিন্টু মাইতি নামে দু’জন এই স্কুল থেকে পড়ে আইআইটিতে গিয়েছে। এবার বুদ্ধদেবের এই রেজাল্টে আমরা অত্যন্ত গর্বিত।’’

বুদ্ধদেবের পারিবার সূত্রের খবর, তাঁর ছোট ভাই পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি কলেজে এডুকেশন নিয়ে পড়াশোনা করে। রাজ্য সরকারের ছাত্রবৃত্তির অর্থেই চলে তাঁর খরচ। ‘গেট’এ এমন সাফল্য পাওয়ার পরেও তাই আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকেই গিয়েছে বুদ্ধদেবের মনে। তিনি বলেন, ‘‘আইআইটিতে পড়াশোনার খরচ কত, তা এখনও অজানা। ওই টাকা কীভাবে জোগাড় করব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’ তাঁর বাবা জয়দেবের কথায়, ‘‘আইআইটি-তে ভর্তির সময় প্রায় ৫০ হাজার টাকা প্রাথমিক ভাবে প্রয়োজন। এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় করব, জানি না।’’

বুদ্ধদেবের পরিবারের পাশে থাকার অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বসন্ত বলেন, ‘‘ওদের মতো ছাত্র আমাদের গর্ব। ওদের জন্য আমি এবং আমার বিদ্যালয়ের সকলে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। এছাড়া, অন্য হৃদয়বান ব্যক্তি বা সংস্থাও ওর পাশে থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Poverty GATE
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE