মানুষ কতটা সচেতন হচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদার আন্দুলিয়া গ্রামের ঘটনা। ছবি: ফোটোপিন।
সাপে কাটার চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সরকারি ভাবে সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে জোরকদমে। কিন্তু তাতে মানুষ কতটা সচেতন হচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদার আন্দুলিয়া গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, গত ২ জুলাই, রবিবার বিকেলে মাঠে খেলার সময় ঝোপ থেকে বল আনতে গেলে সাপে কামড়ায় অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া শিবু মুর্মুকে (১৩)। বাড়ি ফিরে পরিবারের লোকজনকে তা জানালে তাঁরা তাকে এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। ওঝার পরামর্শে শিবুর শরীরে সাপের বিষ তাড়ানোর জন্য একটি পাথরের টুকরো বসানো। কিন্তু তারপরেও শিবুর অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় তাকে সোমবার দুপুর নাগাদ প্রথমে মেচেদার এক নার্সিংহোমে ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাতে মৃত্যু হয় শিবুর।
হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘সাপে কাটা রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে আনা দরকার। এতে রোগীর বাঁচার সম্ভবনা বাড়ে। কিন্তু ওই কিশোরের বাড়ির লোকজন দেরি করে ওকে এখানে আনেন।’’
মেচেদা পুরাতন বাজার লাগোয়া আন্দুলিয়া গ্রামে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের বাস। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তথা শান্তিপুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান পঞ্চানন দাস বলেন, ‘‘ওই কিশোরকে সময়মত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসায় সুবিধা হত। এত প্রচারের পরেও শুধু সচেতনতার অভাবেই প্রাণ গেল ওই কিশোরের।’’
তবে সর্পদষ্টের চিকিৎসা নিয়ে সচেতনতা যে এখনও অনেক তিমিরে তা দেখা গেল শিবুর পরিবারের লোকজনের আচরণে। মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে শিবুর মৃতদেহ নিয়ে তাঁরা ফের ওঝার কাছে রওনা দেন তার প্রাণ ফেরার আশায়। যদিও পরে বুঝতে পেরে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন তাঁরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘সাপে কাটায় অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে এ নিয়ে লাগাতার প্রচারও রয়েছে। ওই কিশোরের মৃত্যু দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা কেন ঘটনাটি জানতে পারলেন না খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy