Advertisement
E-Paper

নাগালে নেই বাস-অটো, কমছে পড়়ুয়া

পড়ুয়া নেই। খড়্গপুরের হিজলি কলেজে ফাঁকা পড়ে অনেক আসন। আইআইটি চত্বর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের এই কলেজের স্নাতকস্তরের অধিকাংশ বিভাগেই আসনের তুলনায় পড়ুয়ার সংখ্যা কম।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৫

পড়ুয়া নেই। খড়্গপুরের হিজলি কলেজে ফাঁকা পড়ে অনেক আসন। আইআইটি চত্বর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের এই কলেজের স্নাতকস্তরের অধিকাংশ বিভাগেই আসনের তুলনায় পড়ুয়ার সংখ্যা কম। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় অনেকেই এই কলেজ বাদ দিয়ে ভর্তি হচ্ছেন অন্য কলেজে।

১৯৯৫ সালে খড়্গপুর আইআইটি-র তৎকালীন ডিরেক্টর গীতিন্দ্রশরণ সান্যাল-সহ বিশিষ্টদের উদ্যোগে হিজলি কলেজের পথচলা শুরু। আইআইটি-র কর্মীদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য চালু হয় স্নাতকস্তরের এই কলেজ। যদিও দিনে দিনে এই কলেজে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা।

কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স (অনার্স)-এর আসন সংখ্যা ৩৪। পড়ুয়া মাত্র ৪ জন। কম্পিউটর অ্যাপ্লিকেশন (বিসিএ)-এর স্নাতকস্তরে ৪৩টি আসন থাকলেও পড়ুয়া মাত্র ১৭ জন। সমাজবিদ্যা (অনার্স)-এর আসন সংখ্যা ৫৫টি। ছাত্রছাত্রী সংখ্যা মাত্র ১৩ জন। কলেজের বিএসসি সাধারণ বিভাগেও পড়ুয়া সংখ্যা মাত্র ৩ জন। এক সময় এই কলেজে নানা ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও দেওয়া হত। পড়ুয়ার অভাবে এখন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের পাঠক্রমগুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

মূলত অটো-বাসের রুট না থাকাতেই কলেজে যেতে সমস্যায় পড়েন পড়ুয়ারা। যোগাযোগের সমস্যা মেটানোর জন্য একাধিকবার প্রশাসনিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও রুটের বাস-অটোগুলি কলেজের রাস্তায় যায় না। ফলে সমস্যায় পড়েন পড়ুয়ারা। ২০ কিলোমিটার দূরের ভেটিয়া গ্রাম থেকে প্রায়ই সাইকেলে কলেজে যান বাংলা অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী মৌসুমি সামন্ত। মৌসুমির কথায়, “বাসে গেলে প্রেমবাজার স্টপে নেমে দু’কিমি হাঁটতে হয়। সব সময় বাসও মেলে না। তাই অধিকাংশ দিন সাইকেলে যাতায়াত করি।”

ভূগোল অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কৌশিক সিংহও টাঙাশোল থেকে প্রতিদিন সাইকেলে ৯ কিমি রাস্তা উজিয়ে কলেজে আসেন। মৌসুমি-কৌশিকের মতো দূরের গ্রামের অধিকাংশ পড়ুয়ারা সাইকেলেই কলেজে যাতায়াত করেন। কেউ কেউ বাসে প্রেমবাজার স্টপে নেমে বাকি দু’কিমি রাস্তা হেঁটে কলেজে যান। কলেজের গ্রন্থাগারিক তাপসকুমার মাইতি থাকেন মেদিনীপুর শহরে। প্রতিদিন ট্রেনে গিরিময়দান স্টেশনে নেমে ৮ কিমি সাইকেল চালিয়ে কলেজে যান তিনিও। কলেজের অন্য শিক্ষকরা কেউ সাইকেলে, কেউ বাইকে আবার কেউ বা হেঁটে কলেজে যান।

পড়ুয়া ও শিক্ষকদের অভিযোগ, এক সময় খড়্গপুরের বোগদা ও ওয়ালিপুর থেকে হিজলি কলেজ পর্যন্ত দু’টি অটোর রুট ছিল। কিন্তু অটোগুলি এখন প্রেমবাজার পর্যন্ত যায়। তারপরে কলেজ পর্যন্ত হেঁটেই যেতে হয়। কেশিয়াড়ি, ভসরাঘাট, খড়িকামাথানি, রেহিনী রুটের বাসগুলি প্রেমবাজার মোড় হয়ে চলে যায়। কিন্তু কোনও বাসই কলেজের দিকে যায় না। অথচ কলেজ পর্যন্ত যাওয়ার ভাল পিচ রাস্তা রয়েছে। তারপরেও কেন অটো-বাস চলে না? অটো ও বাস মালিকদের দাবি, পর্যাপ্ত যাত্রী মেলে না বলে তাঁরা কলেজের দিকে যান না।

কলেজের অধ্যক্ষ আশিস দণ্ডপাট বলেন, “বাস ও অটোগুলির কর্তৃপক্ষকে পড়ুয়াদের স্বার্থে একটু মানবিক হওয়ার অনুরোধ করেছি। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়ার পরেও যোগাযোগের সমস্যার জন্য পড়ুয়ারা অন্য কলেজে চলে যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।” ২২ বছরের পুরনো কলেজে কেন যোগাযোগের রুট গড়ে তোলা গেল না? জেলার অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিক অমিত দত্ত বলেন, “কলেজ পর্যন্ত যাতে বাস-অটো চলে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

Students College Transport Problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy