পাতপেড়ে: পাতে ইলিশে পেয়ে অনেকেই খুশি। —নিজস্ব চিত্র।
খিচুড়ি, সেদ্ধ ডিম নয়তো সোয়াবিনের তরকারি। কোনও কোনও দিন সেদ্ধ ডিমের বদলে ডিমের ঝোল অথবা সব্জির ঘ্যাঁট। মিড-ডে মিলের একঘেয়ে এই রোজনামচাতেই অভ্যস্ত সকলে। মঙ্গলবার সেখানে মেঘ না চাইতেই জল! পাতে এক টুকরো ইলিশ দেখে আনন্দের শেষ ছিল না কেশপুর লক্ষ্মীনারায়ণ হাইস্কুলের পড়ুয়া অর্পণ চক্রবর্তী, ইজাজ আহমেদদের। মিড-ডে মিল খেয়ে ইজাজ বলছিল, ‘‘আজ মনে হল যেন ভোজবাড়ির খাওয়া! মাঝে মধ্যে এমন হলে বেশ ভালই হয়!”
ছেলেমেয়েদের আনন্দ দেখে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিরূপাক্ষ চক্রবর্তী বলছিলেন, “মিড-ডে মিলে একদিন বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেছি। বাজারে এখন সস্তায় ভাল ইলিশ মিলছে। তাই পড়ুয়াদের পাতে ইলিশ দেওয়া হয়েছে।” তাঁর কথায়, “স্কুলের শিক্ষকেরা মিলে ঠিক করি, একদিন ইলিশ খাওয়ানো হলে মন্দ হয় না। মিড-ডে মিলের বরাদ্দ থেকে একটু একটু করে টাকা বাঁচিয়েই এই আয়োজন। সেই টাকায় ইলিশ কেনা হয়েছে।”
মিড-ডে মিলের পাতে যে ইলিশ পড়বে, সেই খবর এ দিন সকাল থেকেই পৌঁছে গিয়েছিল স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছে। দুপুর হতেই পাত পড়তে শুরু করে। এক-এক করে মিড-ডে মিল খেতে বসে পড়ে পড়ুয়ারা। পাতে ইলিশ পড়তেই শুরু হয় কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া। ছেলেমেয়েদের লাফাতে দেখে আপ্লুত শিক্ষকেরাও।
স্কুলের এক শিক্ষিকা বলছিলেন, “ডিম, সব্জি তো রয়েছেই। একদিন একটু অন্য রকম হল। মুখে স্বাদ বদল এল।” তাঁর কথায়, “বড় ভাল লাগল আজ ছেলেমেয়েদের খাওয়া দেখে। সবাই চেটেপুটে খেয়েছে। রোজ রোজ একই খাবার কার আর ভাল লাগে। বড়দেরই ভাল লাগে না। বাচ্চাদের তো লাগার কথাই নয়।”
এ দিন স্কুলের প্রায় ৬০০ জন পড়ুয়ার মিড ডে-মিল খেয়েছে। প্রায় ৩০ কিলোগ্রাম ইলিশ কেনা হয়েছিল। মেদিনীপুর থেকে ইলিশ কিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৩০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। স্কুলের এক শিক্ষক বলছিলেন, “সীমিত বরাদ্দে মিড-ডে মিলে বৈচিত্র্য রক্ষা করা সব দিন সম্ভব নয়। তা হয়ও না। একদিন তা করা হল।”
চেটেপুটে খাওয়ার পর এক পড়ুয়ার কথায়, “ইলিশ মাছটা বেশ ভাল ছিল। আজ সত্যিই খুব মজা হয়েছে স্কুলে। এ রকম মজা যেন আবার হয়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy