বক্তা: মেদিনীপুরে সভায় সুব্রত বক্সী। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলমহলে কি তৃণমূলের জনসমর্থনের রাশ আলগা হচ্ছে?
শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলার লোধাশুলিতে দলের সাংগঠনিক সভার পর সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দলের অন্দরে। ২১ জুলাই কলকাতায় সমাবেশের প্রস্তুতিসভায় এ দিন ‘পঞ্চায়েত থেকে পার্লামেন্টে’ সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ম করে জনসংযোগের নিদান দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দলের নেতা-কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছেন, “মানুষের কথা শুনুন। মানুষের পাশে থাকুন। মানুষ ধাক্কা দিলে আপনাদের খুঁজে পাওয়া
যাবে না।’’
জঙ্গলমহলে পঞ্চায়েত স্তরের শাসক দলের নেতা–কর্মীদের ‘সীমাহীন দুর্নীতি’-কে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে বিরোধীরা। সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে গ্রামাঞ্চলে সংগঠন গড়তে নেমে পড়েছে বিজেপি।
পঞ্চায়েতের নানা কাজে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও চরমে পৌঁছেছে। কিছুদিন আগে বেলপাহাড়ি ব্লকের এড়গোদা গ্রাম পঞ্চায়েতে কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ ছিল, এক পঞ্চায়েত সদস্য টাকার বিনিময়ে একশো দিনের কাজে লাগাচ্ছেন স্ব-সহায়ক দলকে। ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে কাজের টেন্ডার নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বালি পরিবহণ নিয়ে সিন্ডিকেট-রাজের মতো ভূরি ভূরি অভিযোগে অস্বস্তি বাড়ছে শাসকদলে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, জঙ্গলমহলের মানুষের ক্ষোভে প্রলেপ লাগাতে না পারলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক ভাবে সমস্যা হতে পারে। সম্প্রতি মাতৃভাষায় শিক্ষা-সহ একাধিক দাবিতে ট্রেন-জাতীয় সড়ক অচল করে দিয়েছিল একটি আদিবাসী সংগঠন। হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে আদিবাসী ভাবাবেগ ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। তৃণমূল সূত্রে দাবি, দলের একটি অংশ সাধারণ মানুষের থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। সেই কারণেই সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে তাই জনসংযোগকেই ফের হাতিয়ার করার দাওয়াই বাতলেছেন রাজ্য সভাপতি।
এ দিন সুব্রতবাবুর উপস্থিতিতেই ঝাড়গ্রামের সংসদ উমা সরেন বলেন, “চারটে লুম্পেন জোগাড় করে দুর্নীতি করাটাকে ক্ষমতা বলা হয় না। এটা নোংরামি। মানুষের স্বার্থে দায়িত্বশীল হওয়াটাই বড় ক্ষমতা।” পরে মেদিনীপুরে প্রস্তুতি সভাতেও সুব্রতবাবু নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন, “আপনার কাজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল যাতে বিড়ম্বনায় না-পড়ে তা দেখতে হবে।”
তিনি জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরে দলে ৮১ জন কর্মী খুন হয়েছেন। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। পশ্চিম মেদিনীপুর খুন দেখেছে, লুঠ দেখেছে, আগুনে পোড়া দেখেছে। তাই এই জেলার ভয়ের কিছু নেই। মানুষের জন্যই পঞ্চায়েত নির্বাচন মোকাবিলা করতে হবে। দলীয় কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, কেউ যাতে ছোবল মারতে না-পারে সে দিকে নজর রাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy