সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। দলের অন্দরে টিকিটের জন্য দৌড়দৌড়ি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিশ্রুতির বন্যাও চলছে। টিকিট পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ব্লক এবং জেলার একাংশ নেতৃত্ব। এ কথা অজানা নয় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর। মেদিনীপুরে এসে তাই সতর্কবার্তা শুনিয়ে গেলেন সুব্রতবাবু। তাঁর বার্তা অবশ্য শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নিয়ে নয়, পুরো রাজ্য নিয়েই।
দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পঞ্চায়েতরাজ সম্মেলনে সুব্রতবাবুর বার্তা, “এমন কিছু মানুষ দলে তৈরি হয়েছেন, যাঁরা মনে করেন, আমিই সব। এ কথাও আমরা শুনতে পাই, ওই মানুষেরা বলছেন, এ বার তো টিকিট আমি বিলবো। আমি দলের পক্ষ থেকে বলি, আপনার টিকিটটা আপনি পাবেন কি না সেই কথা চিন্তা করুন। টিকিট আপনাকে বিলোতে হবে না। দলকে এত দুর্বল বলে ভাবার কোনও কারণ নেই।” তাঁর কথায়, “জেনে রাখবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করেছে। তৃণমূল জানে কী ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়।” তাঁর সংযোজন, “তৃণমূলের সার্বিক রাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সংগঠন থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি মনোনীত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।”
দলবিরোধী কাজ যে বরদাস্ত করা হবে না, সেই বার্তাও দিয়েছেন সুব্রতবাবু। তাঁর বক্তব্য, দল যাকে মনোনীত করবে সেই প্রার্থী। অন্য কেউ নয়। সুব্রতবাবুর কথায়, “এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতীক এবং পতাকা যার হাতে থাকবে সে কানা হোক, খোঁড়া হোক, ল্যাংড়া হোক, শিক্ষিত হোক, অশিক্ষিত হোক, কালো হোক, সাদা হোক, তাকে সঙ্গে নিয়েই এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপনাদের সম্মুখীন হতে হবে।”
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির আশ্বাস, “কোনও রাজনৈতিক কর্মী বঞ্চিত হবেন না, অপমানিত হবেন না, লাঞ্চিত হবেন না, এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন। ভারতবর্ষে কোনও রাজনৈতিক দল নেই যে সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারে। সবাইকে দিতে পারে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মনে করেন দলটা আমিই ব্যবহার করব। আমিই ফুলেফেঁপে উঠব। তাদের বলি, শুধুমাত্র নিজের কলেবর বৃদ্ধির জন্য দলকে ব্যবহার করা যাবে না। হোঁচট খেয়ে পড়লে পিছনে লোক থাকবে না।” সুব্রতবাবুর নির্দেশ, “যারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান না, সংগঠনের পদ চান না, শুধুমাত্র সম্মান চান, তাদের সম্মান দিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল করতে হবে।”
জেলার পঞ্চায়েতরাজ সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার মেদিনীপুরে আসেন সুব্রত বক্সী। মেদিনীপুর গ্রামীণের কেরানিচটির মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সুব্রতবাবু বলেন, “মানুষ তৈরি, পরিবেশ তৈরি, পরিস্থিতি তৈরি। আমরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে মানুষের কাছে গিয়ে সার্বিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে চাই। এই পঞ্চায়েত নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ। এই নির্বাচনের দিকে ভারতবর্ষের মানুষ তাকিয়ে আছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy