Advertisement
E-Paper

ভরা সভায় সূর্যকান্ত, পথে অধীরও

এক সপ্তাহের ব্যবধান। বিনপুর বিধানসভার পড়িহাটিতে সভা করতে এসে যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৬ ০১:৩১
 পড়িহাটিতে সূর্যকান্তর সভায় জনজোয়ার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

পড়িহাটিতে সূর্যকান্তর সভায় জনজোয়ার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

এক সপ্তাহের ব্যবধান। বিনপুর বিধানসভার পড়িহাটিতে সভা করতে এসে যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।

রবিবার জামবনি ব্লকের পড়িহাটিতে সুর্যবাবুর নির্বাচনী জনসভায় জনজোয়ার দেখে জঙ্গলমহলের নতুন জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। গত ২০ মার্চ পড়িহাটি হাটচালা ময়দানে সভা করেছিলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল রায়কে সঙ্গে নিয়ে সে দিন কপ্টারে উড়ে এসেছিলেন অভিষেক। সে দিন হেলিকপ্টার দেখার জন্য মেরেকেটে ৬-৭ হাজার লোকজনের জমায়েত হয়েছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই মাঠে সূর্যবাবুর নির্বাচনী সভায় এ দিন জনসমাগমের বহর দেখে বাসিন্দাদের একাংশ মানছেন, সে দিনের থেকে এ দিন দ্বিগুণ লোক জমায়েত হয়েছিল।

রবিবার বিকেলে বিনপুর বিধানসভার সিপিএম প্রার্থী দিবাকর হাঁসদার সমর্থনে সভা করতে আসেন সূর্যবাবু। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে মঞ্চের দিকে যাওয়ার সময় রীতিমতো উৎসাহী জনতার ভিড় ঠেলে এগোতে হয় সূর্যবাবুকে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে আদিবাসী প্রথায় বরণ করে নিয়ে আসেন মহিলারা। মঞ্চে উঠে জমায়েত দেখে দৃশ্যতই অভিভূত সূর্যবাবু জানিয়ে দেন, “এ পার্টি, ও পার্টির জোট নয়, দেখতে পাচ্ছি তৃণমূলকে বাংলা থেকে হটানোর জন্য মানুষের জোট হয়ে গিয়েছে।”

বস্তুতপক্ষে, এ দিন সূর্যবাবুর সভা ঘিরে শাসক শিবিরের অন্দরেও যথেষ্ট কৌতুহল ছিল। গত দু’দিন বিনপুর-সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় নির্বাচনী সভা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এ দিন চড়া রোদ উপেক্ষা করেও দুপুর থেকেই লোকজন সূর্যবাবুর বক্তৃতা শোনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঢ্যাংবহড়ার ভিক্টর বেরা, মুনিয়াদার বপি চন্দ, বালিবাঁধের যদুনাথ মুর্মু, বেলপাহাড়ির লীলাবতী মুর্মুরা জানালেন, গত পাঁচ বছরে তাঁরা একশো দিনের কাজ পাননি। পঞ্চায়েতের পরিষেবা পেতে গেলে তৃণমূলের নেতাদের টাকা দিতে হয়। লীলাবতীদেবীর কথায়, “শুধু সেতু, স্কুলবাড়ি, রাস্তা ধুয়ে কী জল খাব! ঝাড়খণ্ডী সমর্থক হওয়ার কারণে বার্ধক্য ভাতাই পেলাম না। এই তো মা-মাটির সরকার।” পরে গোপীবল্লভপুর বিধানসবার গজাশিমূল এলাকায় সিপিএম প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কের সমর্থনে প্রচার-সভা করেন সূর্যবাবু। সেখানেও ছিল জনজোয়ার।

রবিবার শালবনি বিধানসভার চন্দ্রকোনা রোডেও সভা করেন সূর্যকান্ত মিশ্র। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনি খালি বলছেন ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। আমিও বলছি, ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল, নিরাপত্তা বাহিনী যাবে কিন্তু জেলে যাবে তৃণমূল।’’ আরও বলেন, ‘‘ মা- মাটি- মানুষের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মাটির অনেক উঁচুতে আকাশে বিচরণ করছেন আর মাঝে মাঝে মাটিতে নামছেন হেলিকপ্টারে।’’

ঝাড়গ্রাম শহরে পদযাত্রা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। ঝাড়গ্রাম আসনে বামেদের কোনও প্রার্থী নেই। তবে বামেরা ঝাড়গ্রামে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রার্থী চুনিবালা হাঁসদাকে সমর্থন করছেন। সন্ধ্যায় কংগ্রস প্রার্থী সুব্রত ভট্টাচার্যের সমর্থনে ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কের সামনে এক নির্বাচনী সভায় অধীরবাবু বলেন, “আমরা আমাদের জোটধর্ম পালন করেছি। যাদের (সিপিএম) সঙ্গে জোট করেছি, তারাও জোটধর্ম পালন করবেন আশা করব।” অধীরবাবু বক্তৃতা করার সময় সামনের রাস্তা দিয়ে সূর্যবাবুর সভা ফেরত সিপিএম কর্মী-সমর্থক ভর্তি একটি বাস পেরিয়ে যাচ্ছিল। অধীরবাবুকে দেখে বাসের ছাদে বসা সিপিএম কর্মীরা লাল পতাকা নাড়তে থাকেন। অধীরবাবু সিপিএম কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ঝাড়গ্রাম আসনে আমাদের প্রার্থীকে একটু দেখবেন তো?” চলন্ত বাস থেকে চিৎকার করে সিপিএম কর্মীরা জবাব দেন, “হ্যাঁ দেখব।” দলীয় প্রার্থী সুব্রত ভট্টাচার্যের দিকে তাাকিয়ে অধীরবাবু বলেন, “আর ভয় কীসের!”

suryakanta mishra adhir chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy