Advertisement
E-Paper

সন্ত্রাসের স্মৃতি উস্কে ঐক্যের বার্তা শুভেন্দুর

চাওয়া-পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। দলের মধ্যেই রয়েছে চাপা ক্ষোভ। নেতাই দিবসের অনুষ্ঠানে এসে সেই অসন্তোষে মলম দেওয়ার চেষ্টা করলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নেতাইয়ের বাসিন্দাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়ে শনিবার শুভেন্দু বলেন, “অনেকে অনেক কিছু পেয়েছেন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪২
শহিদ স্মরণ মঞ্চে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নেতাই গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

শহিদ স্মরণ মঞ্চে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নেতাই গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

চাওয়া-পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। দলের মধ্যেই রয়েছে চাপা ক্ষোভ। নেতাই দিবসের অনুষ্ঠানে এসে সেই অসন্তোষে মলম দেওয়ার চেষ্টা করলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নেতাইয়ের বাসিন্দাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়ে শনিবার শুভেন্দু বলেন, “অনেকে অনেক কিছু পেয়েছেন। কারও কারও আরও কিছু পাওয়ার আশা রয়েছে। আশা থাকবেই। তবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “পুরনো দিনের কথা ভুলে গেলে হবে না। সিপিএম কী করেছিল, মাওবাদীরা কী করেছিল সকলে জানেন। তখন মানুষের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে। ওরা সুযোগ খুঁজছে। ওদের আর মাথা তুলতে দেওয়া যাবে না।”

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে রথীন দণ্ডপাটের বাড়ির সিপিএমের শিবির থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। সে দিন নিহত হন ৪ মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসী। আহত হন ২৮ জন গ্রামবাসী। নেতাইয়ের এই ঘটনার সপ্তম বর্ষে এ দিন শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠান হয়। সকালে নেতাইয়ে এসে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু শুরুতেই জানিয়ে দেন, তিনি মন্ত্রী হিসেবে এখানে আসেননি। যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন এই দিনে এখানে আসবেন।

নেতাই-কাণ্ডে নিহতদের পরিজনেরা পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। প্রতি পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য চাকরিও পেয়েছেন। আহতেরা ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেলেও কেউই চাকরি পাননি। অথচ, গুলিতে জখম হয়ে অনেকে প্রতিবন্ধী হয়ে গিয়েছেন। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। যার আঁচ পেয়ে শঙ্কিত তৃণমূল নেতৃত্ব। এ দিনের সভায় তাই মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, দীনেন রায়, প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তীরা পুরনো দিনের স্মৃতি উস্কে দিয়ে বলেছেন, “নিজেদের মধ্যে ঐক্য রাখতে হবে। কোনও শক্তি যাতে কোনও ভাবে জঙ্গলমহলে অশান্তি করতে না পারে, উন্নয়ন থামিয়ে দিতে না পারে, এটা দেখতে হবে।” শুভেন্দুও বলেন, “নেতাইয়ের ঘটনা ভুলে যেতে পারি না। তবে ২০১১ সালের পর জঙ্গলমহলে আর খুনের ঘটনা ঘটেনি।’’

নন্দীগ্রামের মতো নেতাইতেও শহিদস্তম্ভ তৈরি করা হবে বলে এ দিন আশ্বাস দেন শুভেন্দু। মন্ত্রী বলেন, “এখানে একটু জায়গা পেলেই শহিদস্তম্ভ তৈরি করে দেবো। ওই রথীন দণ্ডপাটের বাড়ির থেকেও অনেক উঁচু শহিদস্তম্ভ তৈরি করে দেবো।” ইতিমধ্যে নেতাইয়ে কংসাবতী নদীর পাড় বাঁধানো এবং ক্ষয় প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। মন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, “নেতাইয়ের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সেই দাবি মেনেই এ কাজ শুরু হয়েছে।”

নেতাই দিবস পালনেও দ্বন্দ্ব

নেতাই দিবস পালন নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছবি প্রকাশ্যে এল নারায়ণগড়ে। শনিবার বিকেলে নারায়ণগড়ের বিভিন্ন এলাকায় নেতাই দিবসের পৃথক অনুষ্ঠান হয়। তৃণমূলের জেলা নেতা সূর্য অট্ট ও দলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধের জেরেই এই অনুষ্ঠান ভাগ। বিকেলে বেলদায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও নেতাইয়ের শহিদদের স্মরণে মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সূর্য অট্ট, যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রাধাকান্ত দাঁ। বিকেলেই ব্লকের খালিনা এলাকায় নেতাইয়ের শহিদদের স্মরণে সভা হয় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের নেতৃত্বে। মিহিরবাবু বলেন, “বেলদায় একটা মিছিল হয়েছে শুনছি। কিন্তু ওই মিছিল সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই।” যদিও সূর্যবাবুর দাবি, “এই মিছিলের কথা মিহির চন্দকে জানানো হয়েছিল। আর আমরা হাজার-হাজার মানুষের মিছিল করেছি। অন্য দিকে দেড়শো জনকে নিয়ে একটা বুথে মিহির চন্দ নেতাই দিবস পালন করেছেন বলে শুনছি।

Suvendu Adhikari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy