Advertisement
১০ মে ২০২৪

নাবালক হাতে দেদার তামাক

দু’মাসের বেশি হয়ে গিয়েছে। বদলায়নি ছবি। এখনও যে কোনও রাস্তার ধারে দেদার বিক্রি হয় সিগারেট, তামাক। বাধা নেই ছোটদের কেনাকাটাতেও। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানেও নজরদারি নেই তেমন।

মাস দু’য়েক আগে প্রকাশিত হয়েছিল এই খবরই। —ফাইল চিত্র।

মাস দু’য়েক আগে প্রকাশিত হয়েছিল এই খবরই। —ফাইল চিত্র।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

দু’মাসের বেশি হয়ে গিয়েছে। বদলায়নি ছবি। এখনও যে কোনও রাস্তার ধারে দেদার বিক্রি হয় সিগারেট, তামাক। বাধা নেই ছোটদের কেনাকাটাতেও। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানেও নজরদারি নেই তেমন।

অথচ এ বছরের শুরুতেই কঠোর হয়েছে আইন। সিগারেট-সহ তামাক জাতীয় কোনও দ্রব্য যাতে নাবালকদের হাতে না-আসে, সে জন্য ২০১৫ সালে জুভেলাইন জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন অব চিলড্রেন) আইন চালু হয়েছিল। গোড়ায় ওই আইনে মামলা হলে ২০০ টাকা জরিমানা দিয়েই রেহাই মিলত অভিযুক্ত দোকান মালিকদের। কিন্তু চলতি বছরের গোড়ায় আইনটি সংশোধন হয়।

নতুন সংশোধনী আইনে শাস্তিও বেড়েছে। এখন ওই আইনে মামলা হলেই দোকান মালিকের সাত বছরের কারাদণ্ড, সঙ্গে এক লক্ষ টাকা জরিমানা হওয়ার কথা। কিন্তু সে সবই খাতায়-কলমে। এ বছরের গোড়ায় মহারাষ্ট্রে প্রথম এই আইন কার্যকর হয়। গ্রেফতার হন এক ব্যবসায়ী। তারপরই জেলার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। সে দিন জেলা পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেছিলেন, ‘‘আমরা কড়া নজরদারি চালাতে শুরু করেছি। দ্রুত ধরপাকড় শুরু হবে। হবে প্রচারও।’’

দু’মাস পরেও পুলিশ সুপারের বক্তব্যে বিশেষ বদল হয়নি। বৃহস্পতিবারও তিনি বলেছেন, “আমরা ধড়পাকড়ের সঙ্গে সচেতনতা মূলক শিবিরও করব। কেননা, এখনও এই আইন সমন্ধে সম্যক ধারণা অনেকেরই নেই।” তবে তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই জেলার সমস্ত ওসিদের নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক হয়েছে। তাঁদের কড়া নজরদারির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

ফলে গঙ্গা দিয়ে জল গড়ালেও, পরিস্থিতি বদলায়নি। আইনটির সম্পর্কে সম্যক ধারণা যে পুলিশ মহলের অনেকেরই নেই, তা আগে প্রকাশিত সংবাদেই বলা হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিকও এ দিন স্বীকার করে নেন, “আইনটি বিস্তারিত ভাবে আমাদের কাছেও অজানা ছিল এতদিন। ফলে অভিযানের প্রশ্নই ছিল না।’’ তবে এ বার তাঁরা অবগত হয়েছেন বলে তাঁর দাবি। অর্থাৎ, এ বার আশা করার পালা।

“আমরা ধরপাকড়ের সঙ্গে সচেতনতা শিবিরও করব। কারণ, এই আইন নিয়ে অনেকেরই সম্যক ধারণা নেই।

ওসিদেরও বিষয়টিকে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” —ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর। জেলা পুলিশ সুপার

যদিও একটু নজর করলেই চোখে পড়বে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়। কলকাতা-সহ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম গুলিতেও পান-বিড়ির দোকান থেকে মদের দোকানে ১৮ বছরের কম বয়সীদের ভিড়। দোকানের সামনে টাঙানো নেই সিগারেট বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা কথা লেখা বোর্ডটিও। ফলে বিভিন্ন বয়সের ক্রেতারা দোকানে আসছেন। দিব্যি সুখটানও দিচ্ছে নাবালকেরা।

পুলিশের দাবি, এ বার এ ছবি বদলাতে চলেছে জেলায়। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ইতিমধ্যেই জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে শুরু হয়েছে নজরদারি। গত বুধবার চন্দ্রকোনা থানার ওসি সুদীপ ঘোষাল দোকান মালিকদের সচেতন করতে থানায় পুলিশ কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ঠিক হয়েছে দোকানের সামনে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ঘোরাফেরা করতে দেখলেই সংশ্লিষ্ট দোকান মালিককে সতর্ক করা হবে। সুদীপ বাবু বলেন, “আমি একজন আধিকারিক এবং দুই পুলিশ কর্মীকে নির্দিষ্ট দায়িত্বও দিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, গণনার কাজ মিটলেই শুরু হবে অভিযান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

teenager smoke
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE