Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পারদ নামল নয়ে, শীতলতম দিনে জবুথবু মেদিনীপুর

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের মেটিওরোলজি পার্ক সূত্রে খবর, শুক্রবার মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি।

যত্নে: শীতের দুপুরে খড়্গপুর ইকো-পার্কে হাজির এক খুদে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

যত্নে: শীতের দুপুরে খড়্গপুর ইকো-পার্কে হাজির এক খুদে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:১৫
Share: Save:

শীতে জবুথবু মেদিনীপুর। তাপমাত্রার পারদ নামল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটাই ছিল চলতি মরসুমের শীতলতম দিন। তাপমাত্রার পারদ আরও কিছুটা নামতে পারে। এ বার ডিসেম্বরের গোড়া থেকে ঝিমিয়ে ছিল শীত। মাঝেমধ্যে একটু গা- ঝাড়া দিলেও তা স্থায়ী
হয়নি। তবে জানুয়ারির গোড়া থেকে শীতের ঝোড়ো ইনিংস শুরু হয়েছে। প্রায় দিনই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ১১-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের মেটিওরোলজি পার্ক সূত্রে খবর, শুক্রবার মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, “শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৫ ডিগ্রি ছিল। চলতি মরসুমে এর আগে কখনও তাপমাত্রা এতটা নামেনি।”

শুধু যে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে তা নয়, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম থাকছে। বাতাসের গতিবেগও কিছুটা কম। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, “সপ্তাহ কয়েক আগেও দিনের বেশির ভাগ সময়ই তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ১৩-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। ভোরের দিকে কাঁপুনি দিয়েছে। আবার সকালের রোদে সেই কাঁপুনি খানিক কমেছে। অবশ্য ঠান্ডা ভাবটা যায়নি। তবে ৯.৫ ডিগ্রিতে তাপমাত্রার নেমে যাওয়া চলতি মরসুমে এই প্রথম।” ফলে, ভোরের দিকে কিংবা দুপুর গড়ালে সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট পরে বেরোতে হচ্ছে। রাত যত বাড়ছে, ঠান্ডাও তত বাড়ছে।

শুক্রবার মেদিনীপুরের পারদ থিতু হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রিতে। স্বাভাবিক ভাবেই তাপমাত্রার পারদ এতটা নামায় জবুথবু মেদিনীপুর। আগুনের তাপে ঠান্ডা থেকে বাঁচার মরিয়া চেষ্টাও চলছে। সন্ধ্যা নামলেই এ দিকে-সে দিকে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। সকালের দিকে আবার ঘন কুয়াশা থাকছে। কুয়াশার জেরে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। ক্রমশ মেদিনীপুরের তাপমাত্রা নামায় শৈতপ্রবাহের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। আবহবিদেরা জানান, শীতে সাধারণত রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নামলেই বলা হয়, শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আচমকা পারদ পতনে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে গাড় কুয়াশা তৈরি করছে।

এর আগে শেষ কবে মেদিনীপুরের তাপমাত্রা অনেকটা নেমেছিল? বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটিওরোলজি পার্ক সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। ওই সময়ও শীতে কেঁপেছে মেদিনীপুর। একদিন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নীচে নেমে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যায়। ওটাই ছিল ওই মরসুমে মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এখন তাপমাত্রা যেখানে ঘোরাফেরা করছে, তাতে জাঁকানো শীতটা আরও কিছুদিন থাকবে বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা।

এই ঠান্ডায়ও অবশ্য উত্সবে ছেদ নেই। শীতের আমেজ সঙ্গে নিয়েই চলছে উত্সব। শীতের রোদ গায়ে মেখে শনিবারও পার্কে পার্কে ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। অনেকে পিকনিকও করেছেন। মেদিনীপুরের পার্কে চড়ুইভাতি করতে এসেছিলেন শান্তনু দাস, সোমা পালরা। সোমাদের কথায়, “সকালের দিকে শীতে কাঁপতে থাকা, পরে শীতের রোদ গায়ে মেখে ঘুরে বেড়ানো, এরমধ্যে রান্নার উনুনে হাত সেঁকে নেওয়া, জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, এ সবের মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ রয়েছে! শীতের একটা দিন একটু অন্য ভাবে কাটাতে কার না ভাল লাগে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE