E-Paper

ধর্ষণে ধৃত ম্যানেজার আগেও জেল খেটেছে ধর্ষণ মামলায়

পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০০৮ সালে ওই যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ হয়। কর্মক্ষেত্রেও ওই যুবক মহিলা কর্মীদের যৌন হেনস্থা করত বলে অভিযোগ। রবিবার জেলার ওই সরকারি হাসপাতালের স্টোররুমে বেসরকারি সংস্থার কর্মী এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:২৯

— প্রতীকী চিত্র।

পূর্ব মেদিনীপুরের সরকারি হাসপাতালে ধর্ষণে অভিযুক্ত বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজার আগেও নাবালিকা ধর্ষণে গ্রেফতার হয়ে তিন মাস জেলে ছিল। পরে জামিন পায়। সে মামলা চলছে। প্রশ্ন উঠছে, এমন এক জনকে সরকারি হাসপাতালে বহাল করা কেন! কেনই বা সংস্থার মহিলা কর্মীরা বার বার অভিযোগ জানালেও তাকে রেখে দেওয়া হল? সদুত্তর মেলেনি। তবে ধৃতের কুকর্মের প্রমাণ পেতে কর্মীদেরই একাংশ চাঁদা তুলে স্মার্টফোন কিনেছিলেন। স্টোররুমে ভিডিয়ো রেকর্ডিং অন করে রবিবার সে ফোন রাখা ছিল। ফলে, ঘটনার মুহূর্ত সেখানে ধরা পড়ার কথা। পুলিশ মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে মঙ্গলবার আদালতের পথে ধৃত যুবকের দাবি, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০০৮ সালে ওই যুবকের বিরুদ্ধে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ হয়। কর্মক্ষেত্রেও ওই যুবক মহিলা কর্মীদের যৌন হেনস্থা করত বলে অভিযোগ। রবিবার জেলার ওই সরকারি হাসপাতালের স্টোররুমে বেসরকারি সংস্থার কর্মী এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। পরে সংস্থার আরও এক মহিলা কর্মী একই অভিযোগ করেন। সোমবার অভিযুক্তকে ধরে পুলিশ। এ দিন তমলুক আদালতে তোলা হলে আট দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই মামলার সঙ্গে অতীতের ধর্ষণের মামলাটিও যুক্ত করা হবে।

জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ধৃতকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কিছু তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করা হয়েছে।’’ সরকারি আইনজীবী শফিউল আলি খান জানান, অভিযোগকারী দুই নির্যাতিতার এক জন এ দিন মুখ্য বিচারক অভীককুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন।রবিবার যে যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, পারিবারিক কারণে তিনি আসতে পারেননি। অন্য নির্যাতিতা বলেন, ‘‘আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়েছে। খুনের হুমকি মেলায় এবং কাজ চলে যাওয়ার ভয়ে এত দিন মুখ খুলতে পারিনি।’’

ধৃতের শাস্তির দাবিতে এ দিন হাসপাতালের সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা। মিছিল করে ‘অভয়া মঞ্চ’। মঞ্চের প্রতিনিধি পবিত্র গোস্বামীর দাবি, ‘‘কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, অভিযুক্তেরবাড়বাড়ন্তের কারণ বোধিসত্ত্ব মহাপাত্র। তিনি আগে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক ছিলেন।’’ বোধিসত্ত্ব প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের ছেলে। যদিও সৌমেন বলেন, ‘‘ছেলেকে বদনাম করতে মিথ্যা রটানো হচ্ছে।’’ এ দিন বিজেপির তরফে সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। হাসপাতালের গেটে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি। কাল, বৃহস্পতিবার তারা সংশ্লিষ্ট ব্লকে ১২ ঘণ্টা বন‌্ধের ডাক দিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্যাতিতার মা-ও এ দিনের বিক্ষোভে ছিলেন। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘আমার নাবালিকা মেয়ে অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েছিল।’’

হাসপাতালের সুপারের বক্তব্য, ‘‘রক্ষকই ভক্ষক হলে দুশ্চিন্তার। সবাই আমার দিকে আঙুল তুলছেন। তবে আমি কিছুই জানতাম না।’’ বেসরকারি সংস্থাটির অধীন পাঁচটি হাসপাতালের ইনচার্জ সুমন্ত পাল এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সোমবার মেল করে অভিযুক্তকে বরখাস্তের কথা জানিয়েছেন। তবে সুমন্ত ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার। ধৃতের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন। ধৃতের এক দাদার মন্তব্য, ‘‘দোষী হলে, শাস্তি পাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rape case midnapore arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy