E-Paper

আগাম পরিকল্পনায় সফল কেউ, কাউকে ভোগাচ্ছে বাস্তব সমস্যা

বাড়ি-বাড়ি ভোটদাতাদের গণনাপত্র বিলি, জমা নেওয়া এবং সংগৃহীত ফর্ম বিএলও অ্যাপে আপলোডের কাজ ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে মেটানোর কথা। তবে সময়সীমার আগেই কিছু বিএলও কাজ সেরে নজর কেড়েছেন বলে দাবি প্রশাসনের।

কেশব মান্না, সৌম্য প্রামাণিক

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:০৪

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কারও সাফল্যের চাবিকাঠি অতীত অভিজ্ঞতা এবং সে সুবাদে করা পরিকল্পনা। কেউ সাফল্য পেয়েছেন রাতে ফর্ম ‘আপলোড’ করে। উল্টো দিকে, বার বার বাড়ি গিয়েও ভোটারদের পেতে হন্যে হতে হয়েছে কাউকে, নেট-সমস্যায় কেউ হোঁচট খাচ্ছেন ‘ডিজিটাইজ়’ করার কাজে। ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজে যে জেলার বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-দের কাজ নজরকাড়া বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন, সেই পূর্ব মেদিনীপুরেই সাফল্য ও সমস্যারদুই ছবি।

বাড়ি-বাড়ি ভোটদাতাদের গণনাপত্র বিলি, জমা নেওয়া এবং সংগৃহীত ফর্ম বিএলও অ্যাপে আপলোডের কাজ ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে মেটানোর কথা। তবে সময়সীমার আগেই কিছু বিএলও কাজ সেরে নজর কেড়েছেন বলে দাবি প্রশাসনের।

পূর্ব মেদিনীপুরের এমনই ছয় বিএলও-কে সম্প্রতি সম্মান জানানো হয়। তাঁদের অন্যতম খেজুরি-১ ব্লকের বেগুনাবাড়ি বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঘুনাথ বর্মন। তাঁর লাক্ষী পঞ্চায়েতের ৬৯ নম্বর বুথে ৯৩৩ জন ভোটার। রঘুনাথ কাজ সেরেছেন ১৭ দিনে। এখন ফিরেছেন স্কুলে। পড়ানোর ফাঁকেই জানালেন, ‘‘আগে জাতিগত সমীক্ষার কাজ করায় মানসিক প্রস্তুতি ছিল। পরিকল্পনামাফিক যেখানে শিক্ষার হার, সচেতনতা কিছুটা কম, সেখানে আগে ফর্ম দিয়েছি। নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ফর্ম পূরণ ও সংগ্রহ করেছি।’’ তথ্য ‘আপলোড’ মূলত রাতে সেরেছেন রঘুনাথ। বললেন, ‘‘রাতে ইন্টারনেট পরিষেবার গতি ভাল থাকায় কাজ দ্রুত হয়েছে। স্ক্যানের জন্য আলাদা আলোর ব্যবস্থাও করেছিলাম।’’

পুরো কাজ সেরে ফেলা নন্দকুমারের বিএলও, প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষিকা সীমা কর সামন্তআবার সমাজমাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘মাথা ঠান্ডা রেখে শান্ত মনে একটু সময় নিয়ে কাজটি করলে খুব ভাল ভাবেই সম্পন্ন হবে’। হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকের বিএলও প্রাথমিক শিক্ষক অনুপকুমার পাঁজার সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো-বার্তা, ‘ভালবেসে কাজ করুন। চাপ নেবেন না। দেখবেন সহজেই হয়ে যাবে’।

প্রশাসন সূত্রে খবর, ১০০ জন বিএলও ইতিমধ্যে পুরো কাজ সেরেছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ভোটার ৪২ লক্ষ ৮২ হাজার ২৫১। ৯৯.৮৩ শতাংশ ফর্ম বিলি হয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৯৩ শতাংশের বেশি ‘ডিজিটাইজ়েশন’ হয়েছে।

কিছু বিএলও অবশ্য সমস্যাতেও পড়ছেন। যেমন, কাঁথি-৩ ব্লকের বিএলও মিলন মাইতি জানালেন, প্রান্তিক এলাকার ভোটদাতারা নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই বার বার বাড়ি যেতে হয়েছে। মিলনের বুথে ১,০২৫ জন ভোটার। সবাইকে ফর্ম দেওয়া হলেও, ‘ডিজিটাইজ়েশন’ হয়েছে ৮৯৭ জনের। মিলন বলেন, ‘‘ফর্ম সংগ্রহে দেরি হয়েছে। ইন্টারনেটও খুব ভুগিয়েছে।’’ পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভার বাহার গ্রামের বিএলও শেফালি কর গুপ্ত (দুবে) স্মার্টফোন ব্যবহারে সড়গড় নন। বছর সাতান্নর এই প্রৌঢ়া বললেন, ‘‘ফোনে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে সুপারভাইজ়ার-সহ কমিশনের আধিকারিকেরা সহযোগিতা করছেন।’’ তাঁর বুথে ১,২৫০ ভোটার। ফর্ম সংগ্রহ হয়েছে ৮৫০ জনের। তথ্য ‘আপলোড’ হয়েছে সাতশো জনের।

অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘সব বিএলও-কে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ডিজিটাইজ়েশন শেষ করতে বলা হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision West Bengal SIR Purba Midnapore BLO

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy