যুব তৃণমূলের জেলা সম্মেলনে সংগঠনের ফাটল মেরামতিই হয়ে উঠল মুখ্য আলোচ্য বিষয়। শনি-রবি দু’দিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সংগঠনে কিছু রদবদল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দল বিরোধী কাজ করলে অথবা তাতে মদত দিলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি পরিবর্তনের দাবিও উঠেছিল সম্মেলনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষমেশ সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তবে এ বারও যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি থেকে গিয়েছেন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। তাঁর অবশ্য দাবি, ‘‘সংগঠনের সব সদস্যই আমাকে চাইছিলেন। কোনও গণ্ডগোল হয়নি।’’
জেলায় তৃণমূলের যুব সংগঠন নিয়ে অস্বস্তি ছিলই। অভিযোগ, জেলার বৈঠক ছাড়া সংগঠন নিয়ে আলোচনা হত না। এ বারের সম্মেলনে তাই প্রথম থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করে সংগঠনের সঠিক দিশা নির্ধারণের দাবি ওঠে। সংগঠনকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে কর্মীদের ঠিক কী ভূমিকা পালন করতে হবে, তা স্পষ্ট করে জানানোর দাবিও ওঠে। তৃণমূলের যে কোনও কর্মসূচিতে যুব কর্মীরা কাজ করলেও কেন যুব সংগঠনের নামে প্রচারে অনীহা, সেই প্রশ্নেও ঝড় ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুব তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আমরা এ বার দাবি জানিয়েছিলাম সংগঠনে থাকলে কাজের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ দেখাতে হবে। না হলে সংগঠন বন্ধ হয়ে যাক। দেখা যাক এ বার কেমন নজরদারি হয়।’’
যুব তৃণমূল সূত্রের খবর, এ বার সম্মেলেনর গোপন আলোচনায় দলের জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে বিধায়ক, জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সদস্যদের কড়া সমলোচনা করা হয়। যুব তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের নাম করে সমলোচনা করেন বলে খবর। আরও কয়েক জন একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। এই পরিস্থিতিতে একাধিক জেলা সহ-সভাপতি, সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, ব্লক ও অঞ্চলের একাধিক সদস্যকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। সুদীপ মণ্ডল, শঙ্কর চৌধুরী, সুরজ প্রধান, জয় রায়, দেবাশিস ভুঁইয়া-সহ প্রায় ১০ জন পুরনো সদস্য বাদ পড়েছেন বলে খবর। সংগঠনের জেলা সভাপতি শ্রীকান্তর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এখনও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হয়নি। কিছু সদস্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে কাজ করছেন বা পঞ্চায়েত, অঞ্চলে কোনও পদ সামলানোর জন্য সংগঠনে বেশি সময় দিতে পারছেন না।’’ সংগঠনের সাধারন সম্পাদক জ্ঞানাঞ্জন মণ্ডলের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এ বার নতুন কিছু দক্ষ ছেলেকে সংগঠনে ঢোকানো হবে। কড়া নজরদারি চালিয়ে জেলা জুড়ে দক্ষ সংগঠক তৈরিতেও জোর দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy