আইআইটি-র অধ্যাপককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের অভিয়োগ, দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সমর্থক ঠিকা শ্রমিকদের অন্যায় ভাবে বদলি করা হয়েছে। এই দাবিতে আইআইটি-র ‘হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’-এর কো-অর্ডিনেটিং ওয়ার্ডেন অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায়কে রবিবার রাতে ফোনে প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ হুমকি দেন বলে অভিযোগ। আইআইটি কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। আইএনটিটিইউসি পরিচালিত আইআইটি-র ঠিকাশ্রমিক সংগঠনের সভাপতি অভিযুক্ত অপূর্ব ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কি ঘোষ খড়্গপুর শহরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার অপূর্ববাবুকে খড়্গপুর টাউন থানায় ডেকে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়েও দেওয়া হয়।
আইআইটি-র পড়ুয়াদের থাকার হল (হস্টেল)-এ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠনের সমর্থকরাই ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রতি কয়েকজন ঠিকা শ্রমিককে এক হল থেকে অন্য হলে বদলি করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের বেছে বেছে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার ‘হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’-এ স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি নেয় আইএনটিটিইউসি। তার আগে রবিবার ফোনে অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায়ের সঙ্গে অপূর্ব ঘোষের কথা হয়। সেই সময় অপূর্ববাবু ফোনে অরুণবাবুকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। আইআইটি কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে পুলিশে অভিয়োগ দায়ের করেন। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অপূর্ববাবু হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অপূর্ববাবুর অভিযোগ, “যে ক’জন হল কর্মীকে বদলি করা হয়েছে তাঁদের সকলেই আমাদের সংগঠনের সদস্য। তাই তাঁদের কেন বদলি করা হল সে জন্য প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘আইআইটি কর্তৃপক্ষ প্রধান নিয়োগকারী সংস্থা হলের ঠিকাকর্মীদের স্বার্থরক্ষার কোনও দায়িত্ব নেয় না। তাই অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায়ের সঙ্গে ফোনে এ নিয়ে নরম-গরম কথা হয়েছে। কিন্তু হুমকির অভিযোগ ঠিক নয়।” এ নিয়ে অধ্যাপক অরুণবাবু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইনা।’’
দলের নেতাকে ডাকা হয়েছে শুনে সোমবার রাতে থানায় যান তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী, জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার-সহ প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী। তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর অভিযোগ, “আইআইটি-র কয়েকজন অধ্যাপক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছেন। হলের কয়েকজন সাফাই কর্মীকে বদলি করা হয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেকে আমাদের সংগঠনের সদস্য হওয়ায় অপূর্ব ঘটনার প্রতিবাদ করে। এই ঘটনায় আমরা আইনি পথে লড়াই করব।” খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি, “আইআইটি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করলেও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারছেন না। ফোনের কল রেকর্ডও তাঁদের কাছে নেই বলছেন। তাই এই অভিযোগের ভিত্তি খতিয়ে দেখা দরকার।”
হুমকির অভিযোগের ভিত্তিতে ডেকে পাঠানোর পরও কেন অপূর্ব ঘোষকে ছেড়ে দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “আইআইটি-র এক অধ্যাপককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ আইআইটির ডিরেক্টরের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘টাউন থানা ঘটনায় মামলা রুজু করে ৪১-এ ধারায় অভিযুক্তকে ডেকেছিল। তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া ধারা জামিন যোগ্য হওয়ায় ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে ছেড়ে
দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy