Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খালে তলিয়ে যাওয়া তিনজনের দেহ উদ্ধার

শনিবার পিকনিক করতে এসে খালে তলিয়ে যাওয়া তিন যুবকের দেহ উদ্ধার হল রবিবার। 

তখনও চলছে খোঁজ। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

তখনও চলছে খোঁজ। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০২
Share: Save:

শনিবার পিকনিক করতে এসে খালে তলিয়ে যাওয়া তিন যুবকের দেহ উদ্ধার হল রবিবার।

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে চন্দ্রকোনার জাড়া গ্রামের আট যুবক কাতারডাঙায় শিলাবতী নদীর শাখা কেঠে খালের পাড়ে পিকনিক করতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন দুপুরে খালে স্নান করতে নামেন। কিছু পরে দুই বন্ধু উঠে পড়েন। কিন্তু শোভনকান্তি রায় (২৯), অনিরুদ্ধ রায় (২৯) এবং শুভজিৎ মঙ্গল (২৮) তলিয়ে যান। তাদের কেউই সাঁতার জানতেন না। শনিবার রাতভর জেনারেটর চালিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হলেও তাঁদের খোঁজ মেলেনি। এদিন সকাল ৮টা থেকে ঘাটাল এবং খড়্গপুর থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা কেঠে খালে নেমে তল্লাশি চালান। আসানসোল থেকে পুলিশের ডুবুরি পৌঁছয়। সাড়ে ন’টা নাগাদ অনিরুদ্ধের দেহ উদ্ধার হয়। মিনিট পনেরো পরে শোভনকান্তি ও দুপুর ১২টা নাগাদ শুভজিতের দেহ উদ্ধার হয়।

মৃত তিনজনই এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। শোভনকান্তি কলকাতার একাধিক কলেজের অতিথি শিক্ষক, অনিরুদ্ধ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনিও কলকাতাতেই কাজ করতেন। ওদের দু’জনেরই বন্ধু শুভজিৎ কোলাঘাটে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেন। দলে থাকা বাকি বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই তিনজন ফিরছেন না দেখে বন্ধুদের কেউ কেউ খালে নেমে তল্লাশি চালায়। ওই তিনজনের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। গ্রামের লোকজন খালে জাল ফেলে তল্লাশি চালায়। তাতেও খোঁজ না মেলায় রাতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার সকাল থেকেই কয়েক হাজার লোক কাতারডাঙায় ভিড় করেন। সেখানে জাড়া গ্রাম ছাড়াও শ্রীনগর, কাসন্দ, কোচগেড়িয়া, সনপুর, নারায়ণপুর, কালাকড়ি, মানিকুণ্ডু-সহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন ছিলেন। তাঁদের অনেকেই বলাবলি করছিলেন যে তলিয়ে গেলেও ওই তিন যুবকের মৃত্যু হয়তো হয়নি। তবে দেহগুলি উদ্ধারের পরে মুষড়ে পড়েন তাঁরা। মৃত শোভনকান্তি রায়ের দাদা রামেশ্বর বলেন, “ভাই কলকাতার কলেজে অতিথি শিক্ষক হিসেবে পড়াত। জানুয়ারি থেকে মনীন্দ্র কলেজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।”

চন্দ্রকোনায় পিকনিকে গিয়ে স্নান করতে নেমে মৃত্যু এই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরই ঢলবাঁধে পিকনিকে করার সময়ে পুকুরে স্নান করতে নেমে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেঠে খালের যে অংশে গভীরতা বেশি ছিল সেখানে আগে জল না থাকলে সরকারি অনুমতি নিয়ে বালি তোলা হতো। ফলে ওই জায়গায় বড়ো বড়ো গর্ত রয়েছে। তাতে পা আটকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনুমান।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ওই জায়গায় স্নানে নামা যে বিপজ্জনক সেটা জানিয়ে কোনও বোর্ড দেওয়া নেই। তাই অনেকেই না বুঝেই খালে নেমে বিপদে পড়েন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। খালপাড়ের পিকনিক স্পটগুলিতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shilabati River Picnic Ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE