প্রতীকী ছবি।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিধানসভা ভোট। তার আগে আগে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি শুরু করেছ রাজ্য সরকার। মাস দুয়েক ধরে চলবে এই কর্মসূচি। প্রথম দেড় সপ্তাহেই এই কর্মসূচিতে জমা পড়েছে প্রায় ৩ লক্ষ আবেদন। ছবিটা পশ্চিম মেদিনীপুরের। ভিড় সামাল দিতে কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে প্রশাসনের। সূত্রের খবর, যে সংখ্যক আবেদন আসছে, তার প্রায় ৭০-৭২ শতাংশই স্বাস্থ্যসাথীর। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, স্বাস্থ্যসাথী সবার জন্য। রাজ্যের সব মানুষই ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পাবেন। তাই ওই প্রকল্পের আবেদনই বেশি পড়ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এক-একটি এলাকায় মোট চার দফায় শিবির হবে। প্রথম দফার শিবির শেষ হয়েছে শুক্রবার। ১৫ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার শিবির। জেলাশাসক রশ্মি কমলের আশ্বাস, ‘‘শিবিরে আসা আবেদনগুলির ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গেই কাজ হবে।’’
এই কর্মসূচি ঘিরে সাধারণ মানুষের সাড়া এবং প্রশাসনের তৎপরতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সম্প্রতি মেদিনীপুরে এসে কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে একটি শিবির পরিদর্শনও করেছেন তিনি। উপভোক্তাদের পরিষেবা দিয়েছেন।
স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, ঐক্যশ্রী, জাতিগত শংসাপত্র, তফসিলিবন্ধু, জয় জোহার, কৃষকবন্ধু এবং একশো দিনের কাজ— এমন সব প্রকল্পের সুবিধাই মিলছে শিবিরগুলি থেকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার শিবিরগুলিতে জমা পড়া আবেদনের সংখ্যা ২,৮৩,০৬৬। রোজ প্রায় ৪০টি করে শিবির হচ্ছে। দিনে দিনে শিবিরপিছু আবেদনের সংখ্যাও বাড়ছে। শুরুর দিকে জেলায় প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০ হাজার আবেদন এসেছে। এখন গড়ে ৪০- ৫০ হাজার আবেদন আসছে। বৃহস্পতিবারই যেমন ৪০টি শিবিরে আবেদন এসেছে ৫৪,৭৭৫টি।
জানা যাচ্ছে, প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় জমা পড়া আবেদনের সংখ্যা ছিল ১,২৯,৫৭৪।। এরমধ্যে স্বাস্থ্যসাথীর ৯০,৩৪৪ (৭০ শতাংশ), খাদ্যসাথীর ১,১১৯ (১ শতাংশ), জয় জোহারের ৫,৭৮৬ (৫ শতাংশ), ঐক্যশ্রীর ১৩,৫১৭ (১১ শতাংশ), একশো দিনের কাজের ৯,৪৬৭ (৮ শতাংশ), কৃষকবন্ধুর ১৮,৬০৪ (১৪ শতাংশ)। ৮-১০ ডিসেম্বর, এই তিনদিনে জেলায় আসা আবেদনের সংখ্যা ১,৫৩,৪৯২।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে ১১টি প্রকল্পের সুযোগ থাকলেও শিবিরে সবথেকে বেশি ভিড় থাকছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের জন্যই।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘আরও তিন দফায় শিবির হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেদনের ভিত্তিতে ওই সব শিবির থেকেই তাঁদের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।’’
ভোটের আগে এমন কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও অব্যাহত। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের ১১টি সামাজিক প্রকল্প থেকে একটি পরিবারও যাতে বঞ্চিত না- থাকে, তা নিশ্চিত করতেই টানা দু’মাস ধরে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়েছে আমাদের সরকার।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কটাক্ষ ‘‘ভোটের আগে ঠেলায় পড়ে এই কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে!’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বলা হচ্ছিল রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই না কি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে গিয়েছে। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে এত মানুষকে লাইন দিতে হচ্ছে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy