Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বিজেপি প্রার্থী করার জন্য অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি, অভিযুক্ত তৃণমূল

নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওসি অজয় মিশ্র এই মুহূর্তে ছুটিতে আছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও ওসি কী করে ছুটিতে থাকতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।

নির্যাতিতা: বুলি গুড়িয়া।

নির্যাতিতা: বুলি গুড়িয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। সেই ‘অপরাধে’ অন্তঃসত্ত্বা ওই বিজেপি কর্মী ও তাঁর শাশুড়িকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হয় বাড়িও। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের বিরুলিয়া পঞ্চায়েতের দক্ষিণ রুক্মিণীপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে বুলি গুড়িয়া নামে ওই মহিলা নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মহিলার স্বামী দেবব্রত গুড়িয়া নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবার।

নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওসি অজয় মিশ্র এই মুহূর্তে ছুটিতে আছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও ওসি কী করে ছুটিতে থাকতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কাজী সামসুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

মনোনয়ন জমার পর্ব শুরু হওয়ার পরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধর, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী বাম, বিজেপি। সোমবার প্রথম দিনই হলদিয়ার সুতাহাটায় বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি ও জেলা সম্পাদককে মারধরের অঙৃভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠে এক বিজেপি প্রার্থীকে অপহরণের। হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকেও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতি ক্ষেত্রেই পুলিশে অভিযোগের পরেও কোনও কাজ হয়নি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এদিন ফের অন্ত্বঃসত্তা দলীয় কর্মীকে মারধরের ঘটনায় জেলা জুড়ে তৃমমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

পুলিশ ও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ওই বধূকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। কয়েক দিন আগেই ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী তৃণমুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, তারই প্রতিশোধ নিতে ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার রাতে মুখে কালো কাপড় বাঁধা সশস্ত্র তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী প্রথমে বাড়িতে এসে আমার খোঁজ করে। কিন্তু আমাকে না পেয়ে স্ত্রী ও মাকে বেধড়ক পেটায়।’’ তাদের কিল-চড়, লাথি, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী লাঠি দিয়ে তাঁর পেটে মারা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বুলি।

মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রাম–২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মলিনা দাস। তাঁর দাবি, ‘‘সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রচারের আলোয় আসতে বিজেপি এই কৌশল নিয়েছে।’’

নন্দীগ্রামে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা তাপস পাঁজা রায় বলে, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে হেরে যাবে বুঝেই তৃণমূল আমাদের প্রার্থীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। পুলিশও তাদের সহযোগিতা করছে। সেই কারণে আক্রান্ত পরিবারের অভিযোগ পেয়েও তদন্ত করে দেখেনি তারা।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সহ-সভাধিপতি তৃণমূলের শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘অবাধ নির্বাচনের জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আমরা অশান্তি চাই না। আসলে বিজেপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না, তাই এ সব নাটক করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnant Midnapore মেদিনীপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE