Advertisement
E-Paper

সভায় যাবে বাস, নামানো হল যাত্রীদের       

হিসাবে যাত্রীদের জানানো হল, বাস যাবে ব্রিগেডের সমাবেশে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫০
তমলুকে বাস থেকে নামানো হল যাত্রীদের।

তমলুকে বাস থেকে নামানো হল যাত্রীদের।

একে রাস্তায় বাস কম। তার উপরে ভাড়ার ছোট গাড়িগুলিও ভিড় বেশি। তাই হলদিয়াগামী বাস আসতে দেখে উঠে পড়েছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেন না তাঁরা। তমলুকের মানিকতলা পৌঁছতেই বাস থামিয়ে যাত্রীদের ‘জোর’ করে নামিয়ে দেওয়া হল। কারণ, হিসাবে যাত্রীদের জানানো হল, বাস যাবে ব্রিগেডের সমাবেশে!

শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ মানিকতলায় যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল প্রভাবিত বাস মালিকদের সংগঠনের বিরুদ্ধে। যা ঘিরে যাত্রীদের সঙ্গে বচসাও শুরু হয় সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ওই বাসটি ঝাড়গ্রাম থেকে হলদিয়া যাচ্ছিল। অভিযোগ, মানিকতলায় কয়েকজন লোক বাসের একটি তালিকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কোন বাস ব্রিগেডে যাচ্ছে, কোন বাস যাচ্ছে না, সেই হিসাব রাখা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তাঁরাই হলদিয়াগামী বাসটিকে আটকায় এবং যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। বাসের কর্মীরা ফেরত দেন যাত্রীদের ভাড়ার টাকা। একই ভাবে হলদিয়া থেকে মেচাদাগামী একটি বাস তমলুকের হাসপাতাল মোড়ের কাছে আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

হলদিয়ার চৈতন্যপুরে কাজে যাওয়া এক যাত্রী বলেন, ‘‘মেচেদা স্ট্যান্ডে বাসে উঠেছিলাম। কিন্তু তমলুকে বাস আটকে দিয়ে বলছে ব্রিগেড যাওয়ার জন্য এই বাস দিতে হবে। জোর করে নামিয়ে দিল। টাকা ফেরত দিয়েছে, কিন্তু আমরা কাজে যাব কী করে?’’ ওই সব বাস কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘রাস্তা আটকে দিয়ে এক দল লোক ব্রিগেডের সমাবেশে যাওয়ার জন্য দাবি করে। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের নামিয়ে ভাড়ার টাকা ফেরত দিয়েছি। তবে ব্রিগেডে বাস নিয়ে যাওয়ার কথা আগে থেকে আমাদের জানানো হয়নি।’’

বাস থামানোর কথা মানছেন তৃণমূল প্রভাবিত জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন। তবে তাঁর যুক্তি আলাদা। আরেফিন বলেন, ‘‘ওই বাসগুলি তমলুক থেকে দলীয় সমর্থকদের ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু বাসের কর্মীরা নির্দিষ্ট সময়ে না এসে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল। তাই বাসগুলিকে তমলুকে আমাদের সংগঠনের সদস্যেরা গিয়ে আটক করে।’’

বাস মালিক সংগঠন নেতৃত্বের দাবি, সমাবেশে দিন অধিকাংশ রুটে বাস কম থাকায় যাত্রীদের ভিড় বেশি হয়। সেই সুযোগে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেশি টাকা আয়ের জন্য একাংশ মালিক এবং কর্মী সমাবেশে বাস নিয়ে যেতে চায় না। এ দিন এ রকমই কয়েকটি বাস তমলুকে আটকে তৃণমূল সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, কর্মীরা যদি বাস চালাতে চান, তা হলে ‘জোর’ করে সেই বাস ব্রিগেডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? আর এভাবে যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দিলে তো তাঁরা হয়রানি শিকার হচ্ছেন। সে প্রসঙ্গে আরেফিনের বক্তব্য, ‘‘বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া যাত্রীদের পরের বাসেই তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁদের জন্য অন্য কোনও বাসের ব্যবস্থা করা হয়নি।

এ দিন মেচেদা বাসস্ট্যান্ড থেকে হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, দিঘা প্রভৃতি ব্যস্ত রুটে চলা অধিকাংশ বাসই রাস্তায় ছিল না। এগরা-বাজকুলগামী রাস্তায় ১৪টি বাসের সবক’টিই ছিল বিগ্রেডমুখি। এগরার ৩৫টি দূরপাল্লার বাসের ২৯টি বাস বিগ্রেডের জন্য নেওয়া হয়েছে বলে খবর। শহরে বাস না থাকার কারণে পরিবহণ ইউনিয়ন অতিরিক্ত ১৫০টি অটো রাস্তায় নামায়।

তবে বাস মালিক সংগঠন নেতা মহম্মদ সামসের আরেফিনের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারি অফিস ছুটির দিন হওয়ায় অন্য দিনের তুলনায় যাত্রীদের ভিড় কম ছিল। ব্রিগেডে সমাবেশে বাস গেলেও বিভিন্ন রুটে প্রায় ১০০ টি বেসরকারি বাস চলছে। এছাড়াও সরকারি বাস চলছে।’’

TMC brigade Kolkata rally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy