Advertisement
E-Paper

দুই দশকের জয় ধরে রাখতে ফের ময়দানে

টানা পাঁচবার কাউন্সিলার থাকার রেকর্ড গড়ে ফের পুরভোটের লড়াইয়ের কাঁথি পুরসভার দুই কাউন্সিলার। সত্যেন্দ্রনাথ জানা ও সুবল মান্না ১৯৯০ সাল থেকে টানা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তখন অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়নি। এতদিন সুবলবাবু ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই জিতে এসেছেন। কিন্তু গত পুরভোটে ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তাঁকে অন্যত্র দাঁড়াতে হয়েছিল।

সুব্রত গুহ

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০২
প্রচারে ব্যস্ত কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন্দ্রনাথ জানা।

প্রচারে ব্যস্ত কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন্দ্রনাথ জানা।

অপরাজিত পঁচিশ বছর।

টানা পাঁচবার কাউন্সিলার থাকার রেকর্ড গড়ে ফের পুরভোটের লড়াইয়ের কাঁথি পুরসভার দুই কাউন্সিলার। সত্যেন্দ্রনাথ জানা ও সুবল মান্না ১৯৯০ সাল থেকে টানা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তখন অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়নি।

এতদিন সুবলবাবু ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই জিতে এসেছেন। কিন্তু গত পুরভোটে ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তাঁকে অন্যত্র দাঁড়াতে হয়েছিল। এ বারে অবশ্য তিনি পুরনো ওয়ার্ডেই ফিরে এসেছেন। সত্যেন্দ্রনাথ জানার কিন্তু এমনটা হয়নি কোনও বার। পঁচিশ বছরই তিনি ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নিবার্চিত হয়ে আসছেন। কাঁথি পুরসভার ৫৭ বছরের ইতিহাসে পঁচিশ বছরের অপরাজিত কাউন্সিলরের ষষ্ঠ বার নির্বাচনে লড়ার নজির আর নেই।

তবে শুধু তাঁরাই নয়, টানা পাঁচবার কাঁথির পুরভোটে জিতেছেন আরও এক তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপনকুমার পাল। কিন্তু ৪ নম্বর ওয়ার্ড এ বার মহিলা সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় স্বপনবাবুর জায়গায় তাঁর স্ত্রী মঞ্জু পাল এবার প্রার্থী হয়েছেন।

রাজনীতিতে আসবেন বা পুরভোটে কোনও দিন নামবেন এমন ভাবনা কস্মিনকালেও ছিল না কাঁথি কিশোনগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদনের শিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ জানার। সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বা বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারীর শিক্ষক সত্যেন্দ্রবাবুকে ১৯৯০ সালের পুরভোটে শিশির অধিকারী তাঁকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে পুরভোটে নামার অনুরোধ করলে তিনি না করতে পারেননি। সেই থেকে শিক্ষক সত্যেনবাবুর পুর কাউন্সিলার হওয়া।

এই পঁচিশ বছরে নিজের ওয়ার্ডে উন্নয়নের নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরে সত্যেনবাবুর দাবি, কাঁথি পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় ২০ নম্বর ওয়ার্ড। ১৯৯০ সালে কাউন্সিলর হয়ে আসার সময় দু’একটি মোরাম রাস্তা আর দু’একটি বিদ্যুতের খুঁটি ছিল। বতর্মানে সাড়ে তিনশোরও বেশি বিদ্যুৎ খুঁটি বসিয়েছেন তিনি গোটা ওয়ার্ডে। ৬-৭ কিলোমিটার পিচ রাস্তা তৈরি হয়েছে, তা ছাড়া, ১০ কিলোমিটার রাস্তায় কংক্রিট ঢালাই হয়েছে। রাস্তার ধারে খালের পাশে ২০ টি গার্ডওয়াল তৈরি করা, ৫০টি পরিবারকে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ঘর তৈরি করে দেওয়া— সবই করেছেন বলে খুশি তিনি নিজেই। তবে ওয়ার্ডে এখনও নিকাশির কিছু সমস্যা রয়েছে বলে সত্যেনবাবু স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর কথায় “সেগুলিরও সমাধান করার চেষ্টা চলছে।”

বিরোধী দল অবশ্য এই উন্নয়নের তত্ত্বকে একেবারে উড়িয়ে দিতে চান। ওয়ার্ডের একমাত্র বিরোধী প্রার্থী সিপিএমের নীলরতন সাউ অভিযোগ করে বলছেন, একজন টানা পঁচিশ বছর কাউন্সিলার থাকা সত্ত্বেও ওয়ার্ডের তেমন উন্নয়ন হয়নি। এখনও ওয়ার্ডে বহু পরিবার বিদ্যুৎহীন। নিকাশি ব্যবস্থার এমনই হাল যে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট জলের তলায় চলে যায়। এ ছাড়াও তাঁর অভিযোগ শাসক দলের স্বজন পোষণের জন্য এপিএল ও বিপিএল তালিকার সঠিক রূপায়ণ সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক আর্থিক সম্পন্ন মানুষ যেমন বিপিএল তালিকা ভুক্ত হয়ে অনায্য সুবিধা ভোগ করছেন। তেমনই অনেক গরিব মানুষ বিপিএল তালিকভুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিরোধীদের সঙ্গেই অভিযোগের অঙুল তুলছেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশও। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই কাউন্সিলারের পদে বসে আছেন। নবীনদের জন্য জায়গা ছাড়তে নারাজ সত্যেনবাবু। এ নিয়ে দলের মধ্যেই রয়েছে চোরা ক্ষোভও।

অন্য দিকে, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচবছর পর ফের তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সুবল কুমার মান্না। পুরনো ওয়ার্ডে ষষ্ঠ বারের জন্য প্রার্থী হওয়ার পর সুবলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “ফের নিজের ঘরেই ফিরে এসেছি।” ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েই গোটা ওয়ার্ডে উন্নয়নের জন্য ২৫ দফা কর্মসূচি সম্বলিত লিফলেট বিলি করছেন।

বিরোধীদের অভিযোগ, গত পুর নিবার্চনে তৃণমূলের মহিলা প্রার্থীও ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের পর তাঁকে ওয়ার্ডের বাসিন্দা আর খুঁজে পাননি। বিরোধী সিপিএম, বিজেপি-র ভিযোগ তাঁরা ওয়ার্ডের এক তৃতীয়াংশ ভোটাররের কাছেই
যেতে পারেনি।

ছবি: সোহম গুহ।

Trinamool Congress Kanthi Congress municipal election BJP Subal Manna subrata guha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy