Advertisement
০২ মে ২০২৪
Sheikh Sufian

সুফিয়ানের মানভঞ্জনে আসরে কুণাল, নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে আলোচনা দু’জনের

অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে সুফিয়ান ও তাঁর অনুগামীদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তার পর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থিতালিকায় সুফিয়ানের নাম বাদ দেওয়া হয়। তালিকায় তাঁর কাছের কারও জায়গা হয়নি।

Sheikh Sufian and Kunal Ghosh

শেখ সুফিয়ান (ডান দিকে)। কুণাল ঘোষ (বাঁ দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ২২:১৭
Share: Save:

পুরনো ব্লক কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গড়ার পর থেকেই নন্দীগ্রামে কোণঠাসা জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা তথা ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান এবং তাঁর অনুগামীরা। জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি তেমনই। সেই আবহে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকাতেও নাকি ‘ব্রাত্য’ সুফিয়ান গোষ্ঠী। এ নিয়ে ক্ষোভ চরমে উঠতেই তড়িঘড়ি আসরে নামলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে হাজির হলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ। দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকের পাশাপাশি সুফিয়ানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন কুণাল।

মঙ্গলবার বিকেলে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক সারেন কুনাল। বৈঠকে ছিলেন শেখ সুফিয়ান ও তাঁর ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাস। অন্য দিকে, হাজির ছিলেন বর্তমান ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। বৈঠকের পর সুফিয়ানের বাড়িতে গিয়েও তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেন কুণাল। পরে তিনি বলেন, ‘‘ব্লক অফিসে সবাইকে নিয়ে বসলাম। ভোট এলে যে ভাবে প্রস্তুতি আলোচনা হয়, তাই সারলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শেখ সুফিয়ান, স্বদেশ দাস, বাপ্পাদিত্য গর্গ— সবাই ছিলেন। আমাদের প্রার্থীদের জেতাতেই হবে।’’ প্রার্থিতালিকা তৈরির সময় সুফিয়ান ও তাঁর অনুগামীদের মতামত প্রাধান্য না দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সে প্রসঙ্গে কুণালের বক্তব্য, ‘‘সুফিয়ান জমি আন্দোলনের একজন জনপ্রিয় নেতা। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। তাঁদের পরামর্শেই তো দল চলছে।’’ কুনালের মতে, ‘‘বাপ্পাদিত্য গর্গ তরুণ ব্লক সভাপতি। ও ভাল কাজ করছে। সুফিয়ান, স্বদেশরা পুরনো এবং অভিজ্ঞ নেতা। তাঁরা ‘গাইড’ করছেন।’’ সুফিয়ান অবশ্য এই বৈঠক নিয়ে কিছুই বলেননি।

নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের পর দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে তৃণমূল নেতৃত্ব বলতে সুফিয়ান, আবু তাহের, স্বদেশ দাসের মতো নেতারা ছিলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন সুফিয়ান। কিন্তু মমতার হার এবং তার পর ভোট পরবর্তী হিংসা-সহ একাধিক মামলায় তাঁর নাম জড়ানো এবং সম্প্রতি ব্যাঙ্কের বিপুল টাকা ঋণ নিয়ে তা শোধ না করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সুফিয়ানের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরেই। তৃণমূলের একাংশ বলছেন, এ সব কারণেই অভিষেকের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে সুফিয়ান ও তাঁর অনুগামীদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তার পর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থিতালিকায় সুফিয়ানের নাম বাদ দেওয়া হয়। তাঁর কাছের কারও তালিকায় জায়গা হয়নি। এ সবের মধ্যে নন্দীগ্রামে বহু তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বলে খবর।

এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু মঙ্গলবার সকালে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টিতে জয় পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বলে ঘোষণা করেছেন। সেই অঙ্কের পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলকেই যে তিনি নিশানা করেছেন, তা বলাই বাহুল্য। এই পরিস্থিতিতে কুণালের তড়িঘড়ি নন্দীগ্রাম সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE