তমলুক স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
রেলের অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত জারি রইল ‘আমরা-ওরা’র বিভাজন। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘অমৃত ভারত প্রকল্পে’ জেলার পাঁচ স্টেশনের উন্নয়ন কাজের সূচনায় আমন্ত্রণ পেয়েও হাজির হলেন না তৃণমূলের অধিকাংশ বিধায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধি। ব্যতিক্রমী খালি জেলায় তৃণমূলের দুই সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং শিশির অধিকারী।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, মেচেদা, পাঁশকুড়া, দিঘা এবং হলদিয়া স্টেশনের ভোলবদল হচ্ছে ‘অমৃত ভারত প্রকল্পে’। এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ভার্চুয়ালি’ ওই প্রকল্পের কাজের শিলান্যাস করেন। এই উপলক্ষে ওই স্টেশনগুলিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রেল দফতর সূত্রের খবর, দল নির্বিশেষে এলাকার বিধায়ক, সাংসদ এবং জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এ দিন দেখা গিয়েছে, বিজেপির জনপ্রতিনিধি হাজির থাকলেও তৃণমূলের বিধায়কেরা প্রায় কেউই যাননি অনুষ্ঠানে। অধিকাংশরই দাবি, তাঁরা আমন্ত্রণ পাননি।
মেচেদা স্টেশনে অবশ্য হাজির ছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় মুখর হন। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ সফরের সময়েই তাঁর সঙ্গে দেখা করার সম্ভবনার কথাও জানান দিব্যেন্দু। দিঘায় রেলের অনুষ্ঠানে ছিলেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। তিনিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর দেখা দেশের শ্রেষ্ঠ ও যোগ্য প্রধানমন্ত্রী বলে প্রশংসা করেন। তৃণমূলের এই দুই সাংসদকে দলীয় কর্মসূচিতে সেভাবে দেখা যায়নি। দলে তাঁদের অস্বস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে তাঁদের হাজির হওয়া নিয়ে তেমন চিন্তুত নন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
পাঁশকুড়া স্টেশনের সামনে রেলের অনুষ্ঠান মঞ্চে ঘাটালের তারকা সাংসদ দেব, পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক ফিরোজা বিবি এবং পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন নন্দকুমার মিশ্রের জন্য নাম লেখা আসন রাখা ছিল। তবে এদিন এঁদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। নন্দ মিশ্রের দাবি, তিনি অনুষ্ঠানের চিঠি পাননি। এক দিন আগে একই দাবি করেছিলেন ফিরোজা বিবিও। এ দিকে, এই দিনও পাঁশকুড়ায় উড়ালপুল তৈরির দাবিতে বুকে পোস্টার নিয়ে অবস্থান করেছে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তাতে সামিল হয়েছে স্কুল পড়ুয়ারাও। যে স্কুলের বোর্ডের সদস্য হিসাবে রয়েছেন পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্র। ওই অবস্থানে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন, উড়ালপুল তৈরি না হলে অমৃত ভারত স্টেশনের সার্থকতা কোথায়?
উল্লেখ্য, পাঁশকুড়া একটি জংশন স্টেশন হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এই শাখা দিয়ে দিনে গড়ে ৪০০টিরও বেশি ট্রেন চলাচল করে। উড়ালপুল না থাকায় অফিস টাইমে এই লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট হয়। এ দিন অবস্থানে অংশ নেয় বিবেকানন্দ মিশন হাইস্কুলের পডুয়া। ওই স্কুলের বোর্ডের সদস্য সুমনা মহাপাত্র বলেন, ‘‘পাঁশকুড়ায় ফ্লাইওভার এবং একটি আন্ডারপাস তৈরি না হলে অমৃত ভারত স্টেশনের কোনও গুরুত্ব নেই। এই প্রকল্পের মধ্যে ফ্লাইওভার এবং আন্ডারপাসের বিষয়টিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হোক।’’’
এ দিন, হলদিয়ার অনুষ্ঠানে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল এবং রেলের অন্য আধিকারিকেরা। তবে ছিলেন না জেলা প্রশাসনের কেউই। তাপসী বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিধায়করা আসেননি। আসলে ওরা রাজনৈতিক সংকীর্ণতা থেকে বের হতে না পারায় এমনটা করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy