Advertisement
E-Paper

ঘুষ কাণ্ডে রা নেই তৃণমূলের

১৪ মার্চ তারিখটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাছে ২০০৭ সাল থেকেই একটু আলাদা। নন্দীগ্রামের সেই অভিশপ্ত দিনের কথা কারও মন থেকে মুছে যায়নি। তারপর থেকে প্রতি বছরই এই দিন ছুটে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৬ ০১:২৮
প্রতিবাদ মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবাদ মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

১৪ মার্চ তারিখটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাছে ২০০৭ সাল থেকেই একটু আলাদা। নন্দীগ্রামের সেই অভিশপ্ত দিনের কথা কারও মন থেকে মুছে যায়নি। তারপর থেকে প্রতি বছরই এই দিন ছুটে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

ওই একই তারিখ ফের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছে এই জেলার। কারণ নন্দীগ্রাম দিবসেই প্রকাশিত হয়েছে নারদ নিউজ এজেন্সির স্টিং অপারেশনের সেই ভিডিও। যাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মুকুল রায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাস হাকিমের মতো তৃণমূল নেতার হাতে লক্ষ-লক্ষ টাকার বান্ডিল বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাদরে টাকা নিয়ে নিচ্ছেন তৃণমূলের শীর্ষ সব নেতা-নেত্রীরা। আর এখানেই রয়েছে জেলার সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ছবিও। আর তাতেই সরগরম পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা রাজনীতি।

অধিকারী গড় কাঁথির ছবিটা দিয়েই শুরু করা যাক। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আলোচনা পাড়ায় পাড়ায়, চায়ের দোকানে। কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক দল ছাত্রছাত্রী তো কলেজে বসেই এই আলোচনায় মশগুল। একজল ছাত্রের কথায়, ‘‘রাজনীতির লোকেরা টাকা নিয়ে কাজ করে জানি। কিন্তু তাতে আমাদের শুভেন্দু অধিকারীও য জড়িত সেটা বিশ্বাস করতে অবাক লাগছে।’’ তাদের কথা থামিয়ে অন্যদলের দাবি, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী ঘুষ নিয়েছেন এমন কথা জেলার কেউ বিশ্বাস করবে না। উনি যে টাকার জন্য রাজনীতি করেন না, তা জেলার মানুষজন জানেন।’’ মস্ত সমস্যায় পড়েছেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। সন্দেহের কথা চাপা রাখেননি তাঁরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দেখুন, যা রটে তার কিছু তো ঘটে। ফলে এটাকে অস্বীকার কী করে করি বলুন তো! লোককে ভোটের মুখে কী বোঝাব সেটাই ছাই বুঝতে পারছি না।’’

ভগবানপুরের গোয়ালাপুকুর এলাকার এক যুব তৃণমূল কর্মী বললেন, “এতদিন সারদা নিয়ে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছি যে অভিযোগের প্রমাণ নেই। কিন্তু এখন নিজের চোখে মানুষ যা দেখছেন তাকে জোর করে মিথ্যা বলি কী করে।” পটাশপুরের প্রতাপদিঘির এক যুব তৃণমূল নেতা হতাশা নিয়ে বললেন, “সারদা কাণ্ডের ঘা এখনও শুকোয়নি। আবার নারদা। এ যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া।” এগরা শহরের এক প্রৌঢ় তৃণমূল নেতা বললেন, “ জেলায় এখনও আমাদের দলের ভোট হয় অনেকটা অধিকারীদের সামনে রেখে। যুবদের পাশাপাশি আমরাও শুভেন্দু অধিকারীর ইমেজকে ভোট ও সংগঠনের কাজে লাগাতাম। শুভেন্দুবাবুর নাম জড়িয়েছে। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।”

বামফ্রন্টের ভগবানপুর বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুব্রত মহাপাত্র বলেন, “বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের নানা কেলেঙ্কারির মধ্যে এটি একটি। এক্ষেত্রে ভিডিও প্রমাণ রয়েছে। আমাদের দাবি উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।” এই দাবিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় সিপিএমের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বিকালে ও সন্ধ্যায় ধিক্কার মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাতে যোগ দিচ্ছে তাদের নানা গণ সংগঠন। এগরা শহরের বিজেপির শক্তি সেলের যুবক নেতা আশিস নন্দ বলেন, “ভোটে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। সাধারণভাবে আমাদের সর্বদলীয় বন্ধুমহলে যে আলোচনা চলছে তাতে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের যুবরাও যুবনেতার এই কীর্তিতে বিপাকে পড়েছে।”

যদিও গোটা বিষয়টিকে আমল দিতেই চাইছেন না শহর তৃণমূলের যুক নেতা সুদীপ রায়। তিনি বলেন, “বিরোধীরা চক্রান্ত করে মানুষকে সাময়িকভাবে ভুল বোঝাতে পারে। কিন্তু এর প্রভাব ক’দিনেই মিলিয়ে মিলিয়ে যাবে।”

TMC bribe leaders narada
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy