E-Paper

ভরসা পুরনো উত্তমেই, নয়া মুখ সুহাসিনী

সেপ্টেম্বরে সভাধিপতি পদে বসানো হয় উত্তম বারিককে। পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম সভাধিপতির পদে কয়েক মাস কাটানোর পরেই জুলাইয়ে পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০০
উত্তম বারিক এবং সুহাসিনী করকে শুভেচ্ছা।

উত্তম বারিক এবং সুহাসিনী করকে শুভেচ্ছা। —নিজস্ব চিত্র।

জেলা পরিষদের পরিচালনায় পুরনো মুখেই আস্থা রাখলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে বসলেন উত্তম বারিক। আর সহ-সভাধিপতির পদে আনা হল নন্দীগ্রাম থেকে জেতা সুহাসিনী করকে।

গত বছর মে মাসে জেলা পরিষদের তৎকালীন সভাধিপতি দেবব্রত দাসের মৃত্যুতে সভাধিপতির পদ শূন্য হয়েছিল। সেই থেকে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সহ-সভাধিপতি। সেপ্টেম্বরে সভাধিপতি পদে বসানো হয় উত্তম বারিককে। পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম সভাধিপতির পদে কয়েক মাস কাটানোর পরেই জুলাইয়ে পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ৭০টি আসনের মধ্যে ৫৬টি তৃণমূল এবং বিজেপি ১৪ টি আসনে জয়লাভ করেছে। বুধবার ছিল সেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন।

আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে সভাধিপতি পদে উত্তম বারিক ছাড়াও দলের আরও কয়েক জন নেতার নাম ভাসছিল। তবে উত্তম এবার ভোটে নিজের দেশপ্রাণ (কাঁথি-২) ব্লকের বদলে খেজুরি-১ ব্লকে লড়েছিলেন। বিজেপির শক্তঘাঁটি থেকে জিতেছেন তিনি। ফলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জেলা সভাধিপতি পদে ফের উত্তম বারিকের উপরেই আস্থা রাখতে পারেন বলে দলের একাংশ মনে করেছিলেন। সেই প্রত্যাশাইএদিন পূরণ হয়েছে। সহ-সভাধিপতির পদে অবশ্য রদবদল হয়েছে। গত দু’বারের জেলা পরিষদে সহ-সভাধিপতি থাকা নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানকে এবার ভোটে প্রার্থীই করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই ওই পদে এবার নতুন মুখ আসত। সেই মতো তফসিলি সংরক্ষিত ওই পদে নন্দীগ্রাম থেকেই জয়ী সুহাসিনী করকে বসানো হয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে রাজ্য নেতৃত্ব চিঠি দিয়ে উত্তম এবং সুহাসিনীর নাম জানান জেলা নেতৃত্বকে। দুপুরে জেলা পরিষদ অফিসে সভাধিপতি নির্বাচনের জন্য বোর্ড গঠনের আগে নিমতৌড়ি স্মৃতি সৌধে তৃণমূলের সমস্ত জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠকও করেন দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি। সেখানে রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন তাঁরা। তবে এদিন তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য তরুণ জানা বোর্ড গঠনের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন ।

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপসী মণ্ডল দলের ১৪ জন সদস্যকে নিয়ে জেলা পরিষদ অফিসে যাওয়ার সময় তৃণমূলের সমর্থকরা তাঁদের উদ্দেশে ‘চোর, চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিজেপির জেলা পরিষদ সদস্যরা। বোর্ড গঠনের সভায় সরকারি নিয়ম মেনে সব জেলা পরিষদ সদস্য শপথ নেওয়ার পরেই তাঁরা সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উত্তম বারিক এবং সুহাসিনী কর জিতে যান। বিজেপির জেলা পরিষদ সদস্যদের নেতৃত্ব দেওয়া বামেদব গুছাইতের দাবি, ‘‘আমরা মানুষের রায়ে জয়ী হয়েছি। তাই মাথা উঁচু করে জেলা পরিষদ অফিসে প্রবেশ করেছিলাম। সংবিধান মেনে আমরা শপথ নিয়েছি। কিন্তু সভাধিপতির নামের ঘোষণার পরেই আমরা বেরিয়ে এসেছি।’’

জেলা পরিষদে বিজেপির জয়ী ১৪ জন সদস্যকে তমলুকের মানিকতলায় সাংসদ কার্যালয়ে এ দিন সংবর্ধনা দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ‘‘জেলা প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনে চলার পরেও আমাদের স্থির বিশ্বাস, এই মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের (ভোটের) রি-কাউন্টিং করা যায়। তাহলে ১৪ নয়, আমরা অন্তত ৩০টি আসনে জিতেছি।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘‘২০১৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জেলা পরিষদকে কার্যত পার্টি অফিসে পরিণত করে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঠিকাদারের রাজত্ব কায়েম করেছে তৃণমূল।’’

শুভেন্দুর অভিযোগ নিয়ে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ’’জেলা পরিষদ অফিস যদি গত ১০ বছর ধরে দলীয় অফিসে পরিণত হয়, তাহলে গত আড়াই বছর হল শুভেন্দু আমাদের দল ত্যাগ করেছেন। তার আগে সেই সময় তিনিই তো দায়িত্ব নিয়ে চালাতেন। তাই যদি দলীয় আখড়া হয়, সেটা কে করেছেন তা ভেবে নিয়ে বলতে হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

East Midnapore zilla parishad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy