অপেক্ষায়: হাসপাতালে রান্নাঘরের সামনে অজিত, দীনেন, সুজয়রা। বুধবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুরে এলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সার্কিট হাউসে রাত কাটালেন। তবে সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার ‘সুযোগ’ পেলেন না জেলা তৃণমূলের কেউই। নেত্রী কি জেলায় দলের গোষ্ঠী কোন্দলে বেজায় ক্ষুব্ধ, তাই কি এ বার সাক্ষাৎ এড়ালেন, জল্পনা দলের অন্দরেই।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সওয়া ছ’টা নাগাদ সার্কিট হাউসে পৌঁছন মমতা। রাতে এখানেই ছিলেন। বুধবার দুপুর সওয়া বারোটা নাগাদ সার্কিট হাউস ছাড়েন তিনি। হেলিকপ্টারে মেদিনীপুর থেকে ফেরেন কলকাতা।দলনেত্রী তো এ বার আলাদাভাবে কারও সঙ্গে দেখা করলেন না? কারণ কী? সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘দিদির সঙ্গে হাসপাতালেই দেখা হয়েছিল। খানিক কথাও হয়েছে।’’ দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার যুক্তি, ‘‘দিদি এ বার দলীয় কর্মসূচিতে আসেননি, এসেছিলেন দুর্ঘটনায় জখমদের সঙ্গে দেখা করতে। এটা ওঁর প্রশাসনিক কর্মসূচি ছিল।’’
বালেশ্বরের বাহানাগায় ট্রেন দুর্ঘটনায় জখম বেশ কয়েকজন মেদিনীপুর মেডিক্যালে রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যখন জখমদের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন ওয়ার্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ‘পাশে’ দেখা গিয়েছিল মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া প্রমুখকে। ওই সময়ে হাসপাতাল চত্বরে ছিলেন জেলা সভাধিপতি তথা গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি, খড়্গপুরের (গ্রামীণ) বিধায়ক দীনেন রায়, নারায়ণগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখ। তবে এঁরা কেউ ওই সময় মুখ্যমন্ত্রীর ‘কাছে’ যেতে পারেননি। এঁদের হাসপাতালের কিচেনের সামনে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। পরে ওখানেই অজিতদের সঙ্গে দেখা হয় দলনেত্রীর। জানা যাচ্ছে, মমতা তখন স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘তোমরা আর ঝামেলা, ঝগড়াঝাটি করবে না। সবাই মিলেমিশে কাজ করবে কিন্তু।’’
কয়েক দিন আগেই শালবনিতে তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচির অধিবেশনে এসেছিলেন মমতা। সে দিনও কোন্দল জিইয়ে রাখায় দলনেত্রীর বকুনি খেয়েছিলেন কয়েকজন নেতা, বিধায়ক। মমতার বার্তা ছিল, ‘‘গ্রুপবাজি বন্ধ করো। সবাইকে নিয়ে কাজ করো।’’
সূত্রের খবর, বুধবার সকালে সার্কিট হাউসে গিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তলব পেয়েই না কি তাঁর যাওয়া। পুলিশ সুপারের কাছে জেলার কয়েকটি বিষয় জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। বেলা সওয়া বারোটা নাগাদ সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান কুইকোটার হেলিপ্যাডে। সেখানেও সঙ্গে দেখা গিয়েছে জেলা পুলিশ সুপারকে। ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরীও। তবে সেখানে গিয়েও ‘দিদি’র দেখা পাননি তৃণমূলের ‘ভাই’রা। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ বলছেন, ‘‘দিদির সঙ্গে দেখা করতে আমরা হেলিপ্যাডে গিয়েছিলাম। আবহাওয়া খারাপ হতে পারে, এই ভেবে হেলিকপ্টার খানিক আগে উড়ে গিয়েছে। তাই আর দিদির সঙ্গে দেখা হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy