E-Paper

মন্দিরে খুলেছে অর্থনীতির দিগন্ত, প্রচার তৃণমূলের

একাধিক পোস্টারে জগন্নাথ মন্দিরের ছবি দিয়ে নীচে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এলাকার পরিকাঠামো, ব্যবসা ও অর্থনীতি রাতারাতি বদলে গিয়েছে।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ০৯:১৫
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পর্যটকদের ভিড়।

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পর্যটকদের ভিড়। —ফাইল চিত্র।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় বিধানসভা ভোটের আগে দিঘার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে একেবারে আটঘাট বেঁধে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

হিন্দু ভোট দখলের লড়াইয়ে গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দিতে মন্দির গড়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক পরিকাঠামো ব্যবহার করে সেখানকার প্রসাদ বিলি তো ছিলই। এ বার জগন্নাথ মন্দিরের জন্য গোটা জেলার সাংস্কৃতিক-অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং সামগ্রিক পরিকাঠামোর কী ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে, সেটা নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্টার দিয়ে প্রচার করা শুরু করেছে শাসক দল। কিছু দিনের মধ্যে লিফলেট ছাপিয়ে এর প্রচার হবে বলে দলীয় সূত্রের খবর।

একাধিক পোস্টারে জগন্নাথ মন্দিরের ছবি দিয়ে নীচে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এলাকার পরিকাঠামো, ব্যবসা ও অর্থনীতি রাতারাতি বদলে গিয়েছে। অর্থাৎ ধর্মীয় ও সামস্কৃতিক কাজকর্ম গোটা এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ও কর্মসংস্থানের সহায়ক হয়েছে। একে কটাক্ষ করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেন,"সরকার কখনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে না। জগন্নাথ দেবকে শাসক দল ভোটের আগে বিপণনের কাজে লাগাতে চাইছে। এটা জগন্নাথভক্ত হিন্দুরা কেউ মেনে নেবেন না।’’

পাল্টা রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষোর মন্তব্য, "বিজেপি নেতারা বরং তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে ভুলে গিয়ে জগন্নাথ দেবের সঙ্গে লড়াই করছেন। বিরোধী দলনেতার বাড়ি থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে জগন্নাথ দেবের মন্দির। একটিবারও তিনি গিয়ে মন্দিরে প্রণাম করতে পারেননি। হিন্দুত্ব আর প্রভু জগন্নাথ দেবের সেবা বিজেপির কাছ থেকে তৃণমূলকে শিখতে হবে না।"

তৃণমূল সমাজমাধ্যমে দেওয়া তাদের পোস্টারে দাবি করেছে, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের কারণে ভক্তের ঢল নেমেছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। নতুন তীর্থক্ষেত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে দিঘার। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে প্রায় ৩০ লক্ষ ভক্ত ঘুরে গিয়েছেন দিঘার জগন্নাথ মন্দির। বাংলার পাশাপাশি ওড়িশার বালেশ্বর, ময়ূরভঞ্জ, ভদ্রক, কেওনঝড় এবং জাজপুর জেলা থেকে মানুষ এসেছেন। এরফলে আর্থিক পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে, ব্যবসার নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, দিঘার ৮৫০ টি হোটেল প্রতিদিন গড়ে ৭৫-৮০ হাজার মানুষ অতিথি হিসেবে থাকছেন। এ ভাবে সাংস্কৃতিক অর্থনীতিতে জোয়ার এসেছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে, ছোট ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। সব মিলিয়ে তৃণমূলের তরফে স্লোগান তৈরি করা হয়েছে— ‘আধ্যাত্মিকতার আলোয় উন্নয়ন এখন উজ্জ্বল। ভক্তি-বিশ্বাস ই গড়ছে ভবিষ্যৎ।’

প্রসঙ্গত, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের পর গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে গেরুয়া শিবিরের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি। সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভোট বৈতরণী পার হয়েছিল বিজেপি, যদিও খোদ অযোধ্যায় তারা হেরেছিল। পশ্চিমবঙ্গে শাসক দলের দিকে হিন্দু সমর্থনে ভাটা এসেছে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় আবেগে হাওয়া দেওয়া পাশাপাশি অর্থনীতির জোয়ারকে তুলে ধরে প্রচারে ঝড় তুলতে চাইছে তৃণমূল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

digha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy