Advertisement
০৬ মে ২০২৪

নেই সতর্কীকরণ, স্কুলের সামনে দেদার বিক্রি গুটখা, তামাক

সংস্থার রিপোর্ট বলছে, বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর ৫৪ শতাংশই দৃশ্যমান সতর্কীকরণ বার্তা ছাড়াই তামাকজাত পণ্য বিক্রি করে। আরেকটি তথ্য, স্কুলের আশপাশের অর্ধেকের বেশি দোকানদার তামাকজাত পণ্য বিক্রি করে।

আকর্ষণ: এক স্কুলের সামনে তামাকজাত পণ্য বিক্রি। —নিজস্ব চিত্র।

আকর্ষণ: এক স্কুলের সামনে তামাকজাত পণ্য বিক্রি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২৮
Share: Save:

ভারতের বিভিন্ন স্কুলের সামনে দেদার বিকোচ্ছে গুটখা, সিগারেট, বিড়ি-সহ বিভিন্ন তামাকজাত পণ্য। এই সব পণ্য বিক্রি করা দোকান বা গুমটির সামনে নেই কোনও সতর্কীকরণ বার্তা। সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্কুলের সামনে তামাকজাত পণ্যের বিক্রি নিয়ে সমীক্ষা করেছিল। সমীক্ষার ফল আশঙ্কাজনক। সংস্থার রিপোর্ট বলছে, বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর ৫৪ শতাংশই দৃশ্যমান সতর্কীকরণ বার্তা ছাড়াই তামাকজাত পণ্য বিক্রি করে। আরেকটি তথ্য, স্কুলের আশপাশের অর্ধেকের বেশি দোকানদার তামাকজাত পণ্য বিক্রি করে।

জেলার কী চিত্র? হলদিয়া এলআইসি মোড়ে বাসুদেবপুর হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুল। বা রানিচক হাইস্কুলের সামনে। দুর্গাচক নিউ মার্কেট এলাকায় হলদিয়া পুনর্বাসন স্কুল। পূর্ব মেদিনীপুরের এই স্কুলের কাছে গুটখা, সিগারেট-সহ বিভিন্ন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি হয় বলে অভিযোগ।

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের নয়াবসত হাইস্কুল, ডাবচা হাইস্কুল সহ কয়েকটি স্কুলের সামনেও একই চিত্র। গোয়ালতোড়ের আমলাশুলি হাইস্কুল-সহ কয়েকটি স্কুলের সামনের দোকানগুলিতে তামাকজাত পণ্য বিক্রি হয়। ঝাড়গ্রাম শহরে প্রধান রাস্তার ধারে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বয়েজ স্কুল ‘কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন’। এই স্কুলের কাছেই রাস্তার ধারে গুটখা ও তামাকজাত দ্রব্যের একাধিক দোকান রয়েছে। অরণ্যশহরের ননীবালা বয়েজ স্কুলের সামনেই দু’টি দোকানে তামাকজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। লালগড় রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের ঠিক উল্টোদিকে রয়েছে পানের দোকান। সেখানে গুটখা ও তামাকজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। রামগড়ে হাইস্কুলের কাছেও তামাকজাত দ্রব্যের দোকান রয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি দেশের ২০টি শহরে ২৪৩টি স্কুলের সামনে খোঁজখবর করেছে। তাদের অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, সমীক্ষা করা সংস্থাটি দাবি করেছে, খুব সুপরিকল্পিত ভাবেই স্কুলের সামনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করে পসার বাড়াচ্ছে বহুজাতিক সংস্থাগুলো। অথচ সিগারেট এবং অন্য তামাকজাত পণ্য আইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে তামাকজাত পণ্য বিক্রি করা নিষিদ্ধ।

কম বয়সিদের খদ্দের হিসেবে পেতে বিক্রেতারা নানা কৌশল করছে। কী সেই কৌশল? সমীক্ষা বলছে, তারা দামে ছাড় দিয়ে বিক্রি করছে এই সব পণ্য। অনেক সময়ে বিনামূল্যেও দেওয়া হয় কিছু পণ্য। বিধিসম্মত সতর্কীকরণ সংক্রান্ত বোর্ড বা লেখা এমন জায়গায় লাগানো থাকে যা সহজে চোখে পড়ে না। বেশির ভাগ দোকানে সেই বার্তা থাকে মাত্র এক মিটার উচ্চতায়। যা একমাত্র শিশুদের চোখে পড়ার কথা। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই বার্তা থাকে লজেন্স, মিষ্টি, খেলনাপাতির সঙ্গে মিশে। ভারতে প্রতি তিনজন পূর্ণ বয়স্কদের একজন কোনও না কোনও তামাকজাত পণ্য খান। ২০১১ সালের হিসেব বলছে, শুধু বিড়ির কারণে ৫.৮ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলেন সেই বছরে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের তথ্য বলছে, ভারতে ক্যানসার আক্রান্তদের ৩০ শতাংশ তামাকজাত পণ্যের নেশা করেন। মুখের ক্যানসার আর ফুসফুসের ক্যানসার হয় সবথেকে বেশি। তামাকে ৪৮০০ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার হয়। যেগুলোর ৬৯টি ক্যানসারের জন্য দায়ী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tobacco
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE