Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পণের দাবিতে নির্যাতন, যৌনাঙ্গে আঘাতের অভিযোগ, ধৃত স্বামী-শ্বশুর 

প্রিয়াকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসেন তাঁর পরিজন। সোমবার প্রিয়াকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রিয়ার সারা শরীরে কালসিটের দাগ, সিগারেটের ছ্যাকা রয়েছে।  গোপনাঙ্গে আঘাত করার ফলে রক্তক্ষরণও হচ্ছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:


পণের দাবিতে তরুণীকে নির্যাতন এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হল তাঁর স্বামী এবং শ্বশুর। ধৃত সুতনু এবং তার বাবা অভিরাম সিংহ রায়ের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের ইটলা গ্রামে। বুধবার ভোরে ইটলা থেকেই তাদের গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার পুলিশ। ওই ঘটনার আরও চার অভিযুক্ত পলাতক।

ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবার বাসিন্দা বছর বাইশের প্রিয়া সিংহ রায়কে সম্প্রতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা। পরিবার সূত্রের খবর, মানিকপাড়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রিয়ার সঙ্গে গত সেপ্টেম্বরে সুতনুর বিয়ে ঠিক হয়। এর পরে সুতনু প্রায়ই ঝাড়গ্রামে এসে দেখা করতেন প্রিয়ার সঙ্গে। বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার আগেই বাড়িতে কিছু না জানিয়ে গত ১১ অক্টোবর সুতনুর সঙ্গে ইটলায় হবু শ্বশুর বাড়িতে যান প্রিয়া। সেখানে মন্দিরে তাঁদের বিয়ে হয়। প্রিয়ার বাপের বাড়ির লোকজন সেই বিয়ে মেনে নেন।

প্রিয়ার আইনজীবী তপন সিংহ জানান, পাত্র পক্ষের দাবি ছিল নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা, ১৫ ভরি সোনার গয়না এবং যৌতুক দিতে হবে। প্রিয়ার বাবা দিলীপ সিংহ পেশায় শিক্ষক। তিনি তিন লক্ষ নগদ টাকা, ১৩ ভরি সোনার গয়না ও যৌতুক সামগ্রী দিয়েছিলেন। বাকি টাকা ও যৌতুক পরে মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দিলীপ।

প্রিয়ার পরিবার জানাচ্ছে, কয়েকদিন আগে দিলীপবাবু খবর পান যে, প্রিয়াকে শ্বশুরবাড়িতে মারধর করা হয়েছে। রবিবার ইটলায় যান প্রিয়ার পরিজনরা। অভিযোগ, সে সময় সেখানে প্রিয়ার খোঁজ মেলেনি। তাঁদের জানানো হয়, প্রিয়াকে কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও দিলীপ মেয়ের হদিস পাননি বলে দাবি। শেষে খবর মেলে কলকাতার সিঁথি মোড় এলাকার একটি নার্সিংহোমে প্রিয়াকে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে প্রিয়ার বাড়ির লোকজন হাজির হতেই চম্পট দেন সুতনুর বাড়ির লোকজন।

প্রিয়াকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসেন তাঁর পরিজন। সোমবার প্রিয়াকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রিয়ার সারা শরীরে কালসিটের দাগ, সিগারেটের ছ্যাকা রয়েছে। গোপনাঙ্গে আঘাত করার ফলে রক্তক্ষরণও হচ্ছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় প্রিয়ার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি- সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন দিলীপ। বুধবার ভোরে প্রিয়ার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর শাশুড়ি, ভাসুর, ননদ ও নন্দাই পলাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dowry Molestation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE