সপ্তাহান্তে ভিড় বাড়ছে দিঘা। আর তারই সুযোগ নিতে ব্যস্ত এলাকার ব্যবসায়ীরা, তা সে হোটেল মালিক হোন বা ফাস্ট ফুডে বিক্রেতা।
পর্যটকদের অভিযোগ ভিড়ের অজুহাতে একশ্রেণির হোটেল লজের ভাড়া একলাফে বেড়ে কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিন গুণ হয়েছে। শনি ও রবিবারের ছুটিতে দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের বিস্তর ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আগে থেকে হোটেল বুক না-করে যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা অনেকেই আর থাকার জায়গা পাননি। তাই অনেকেই সারাদিন কাটিয়ে রাতের ট্রেনে ফিরে গিয়েছেন।
যাঁরা থেকে গিয়েছেন তাঁদের অনেক বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। কলকাতা থেকে আসা এক পর্যটক জানালেন, ‘‘যে ঘরের ভাড়া ৭০০-৮০০ টাকা ছিল, সেই ঘরের ভাড়াই হঠাৎ করে ১২০০-১৪০০ টাকা চাইছে।’’ তাঁদের অভিযোগ, সৈকত পর্যটনকেন্দ্র দিঘায় অধিকাংশ হোটেল, লজে ভাড়ার তালিকা টাঙানো নেই। তারই সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির হোটেল মালিক যেমন খুশি ভাড়া আদায় করছেন।
অথচ দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ভাড়ার তালিকা হোটেলের রিসেপশনে টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু তা মানেন না প্রায় কেউই। পর্যটকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
বারাসাতের একটি পরিবার দু’দিনের জন্য উঠেছিলেন ওল্ড দিঘার একটি বিলাসবহুল হোটেলে। কলকাতা থেকেই তাঁরা তিনটি ঘর বুক করে এসেছিলেন। কিন্তু পরিবারের সকলে না-আসায় দিঘায় এসেই একটি ঘর তাঁরা ছেড়ে দেন হোটেল কর্তৃপক্ষকে। সেই ঘর অন্য পর্যটকেক ভাড়াও দেন মালিক। কিন্তু রবিবার ওই পরিবারটি ঘর ছাড়তে গেলে তাঁদের কাছে তিনটি ঘরের ভাড়াই দাবি করা হয় বলে অভিযোগ।
একই ঘরের ভাড়া দু’বার নেবেন কেন, সে কথা জানতে চাইলেই বচসা বাঁধে দু’পক্ষের। অভিযোগ শেষ পর্যন্ত ওই পরিবারটিকে তৃতীয় ঘরটি জন্য ৫০ শতাংশ ভাড়া দিতে বাধ্য করা হয়। হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ও দিঘা মোহনা থানাও বিষয়টির মিমাংসা করতে পারেনি।
এমন নানা ঘটনায় দিঘা নিয়ে তিক্ততা বাড়ছে পর্যটকদের মধ্যে। দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম যুগ্ম সচিব বিপ্রদাস চক্রবর্তী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘‘পর্যটকদের ভিড় বাড়লেই একশ্রেণির হোটেল মালিক অস্বাভাবিক ভাবে ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এতে বদনাম এবং ক্ষতি হচ্ছে দিঘারই।’’
তা হলে সব জেনেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় অসাধু হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে? বিপ্রদাসবাবু অবশ্য দায় ঠেলে দিলেন পর্যটকদের ঘাড়েই। তাঁর সাফাই, ‘‘দু’দিনের জন্য বেড়াতে এসে ঝামেলায় পড়তে চান না পর্যটকরা। তাই তাঁরা লিখিত অভিযোগ করেন না। লিখিত অভিযোগ ছাড়া আমরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারি না।’’
পর্যটক হেনস্থা ও অবৈধ ভাবে বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়েও কোনও উত্তর মেলেনি। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি কোনও সদস্যকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy