Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দোলের আগে বসন্তের বাদলায় উতল দিঘা

ঢেউ সাঁতরে আসছে পাড়ে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথার উপর। বৃষ্টি পড়ে লাফিয়ে উঠছে বালির দানা, সূঁচের মতো বিঁধছে পায়ে।

উল্লাস: দিঘার সৈকতে দুই খুদের হুটোপাটি। —নিজস্ব চিত্র।

উল্লাস: দিঘার সৈকতে দুই খুদের হুটোপাটি। —নিজস্ব চিত্র।

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

ঢেউ সাঁতরে আসছে পাড়ে।

ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথার উপর। বৃষ্টি পড়ে লাফিয়ে উঠছে বালির দানা, সূঁচের মতো বিঁধছে পায়ে। আর মাতাল হাওয়ায় এলোমেলো চুল— ‘‘এমন রোমান্টিক আবহাওয়া আগে কবে পেয়েছি মনে নেই’’, বলেই ফেললেন মালদার সমর রায়। ব্যস্ত দিনে অফিস ছুটি নিয়ে দিঘায় এসেছেন তিনি, সপরিবারে। তাই একটু ফাঁকায় ফাঁকায় উপভোগ করছেন বসন্তের বাদলা।

আর হোটেল মালিকরা অঙ্ক কষছেন আবহাওয়া এমন মনোরম থাকলে সপ্তাহান্তে ভিড় বাড়তে পারে দ্বিগুণ। এ বার দোল রবিবার। এমনিতেই শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বেশিরভাগ ঘরই বুক হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তীর মতে, ‘‘আবহাওয়া এ রকম মনোরম থাকলে অনেক বেশি মানুষ আসবেন দোলের আগে পরে। এমনকী দোলের দিনও অনেকে আসেন।’’

তবে দোলে না হলেও, তার আগেই মেঘলা দিঘা উপভোগ করছেন কলকাতা ও অন্য জেলার পর্যটকরা। হোটেল থেকে বেরিয়ে নিউ দিঘার ঝাউবনে মধ্যে বসেছিলেন নদিয়ার সুপ্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে’, গলায় সুর উঠছিল গুনগুনিয়ে। কেমন লাগছে দিঘা? প্রশ্ন শুনে মৃদু হাসলেন সুপ্রিয়াদেবী। বলেন “আগে অনেকবার দিঘা এসেছি। কিন্তু এত উপভোগ করিনি। ঝাউবনের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে অনেক দিন আগের কথা।’’

বেহালার সুমিত পোদ্দারের কাছে দিঘা মানেই সমুদ্র। ঢেউয়ের টানেইর ছুটে আসেন তিনি। তাই ওল্ড দিঘার হোটেলে এসে উঠেছেন। বললেন “গতবারে দিঘায় এসে সমুদ্র স্নান করতে পারিনি। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। এ বার বৃষ্টিতে সমুদ্র স্নানটা দারুণ লাগছে।’’ মেঘলা আকাশ হলেও সমুদ্র উত্তাল ছিল না বুধ, বৃহস্পতিবার। ফলে নিশ্চিন্তেই সমুদ্র দাপিয়েছেন সুমিতবাবুর মতো অনেকেই।

মেঘলা হাওয়া সবাই এমন উপভোগ করেননি। কোচবিহারের রায় দম্পতি বুধবার সকাল থেকে হোটেলে বন্দি করে রেখেছিলেন তাঁদের ত্রয়োদশী কন্যাকে। বৃষ্টি ভিজে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে, সেই ভয়ে। রোদের ঝিলিক দেখা দিতেই দাদাকে নিয়ে সোজা সৈকতে হাজির সপ্তম শ্রেণির মৌমিতা। জলেই নেমেই আদুরে গলায় বলে উঠল মেয়ে, ‘‘কখন থেকে বলছি কিছু হবে না। মা, বাবা শুনছেই না।’’

বৃহস্পতিবার এসে পৌঁছলেন সোনারপুরের এক শিক্ষক দম্পতি। এক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। বলা যায় মধুচন্দ্রিমাই। শনিবারই ফিরবেন। বললেন, বাকি দু’দিনও যেন এমনই বৃষ্টি পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digha Tourists Holi Celebration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE