—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শব্দ বাজি বিক্রিতে রয়েছে কড়াকড়ি। ছাড় মিলেছে সবুজ বাজি বিক্রিতে। কিন্তু তারও দাম আকাশছোঁয়া। ফলে এক সময় বাজির হাব বলে গ্রামও এবার বিমুখ হয়েছে বাজি ব্যবসায়।
পাঁশকুড়ার পশ্চিমচিল্কা, সাধুয়াপোতা এই দু'টি গ্রাম বাজির হাব নামে পরিচিত ছিল। রাজ্যে একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশি ধরপাকড় জোরদার হয়। তাই এবার জেলার বেআইনি বাজি তৈরির এলাকাগুলি কার্যত নিরুত্তাপ। রাজ্য সরকার সবুজ বাজি বিক্রির লাইসেন্স দিয়েছে এলাকার কারবারিদের। কিন্তু সবুজ বাজির দাম অত্যধিক হওয়ায় সেই ব্যবসায় অনীহা দেখা দিয়েছে। পেশা বদল করছেন বাজির কারবারিরা।
সবুজ বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি বিক্রি করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।এবার দুর্গাপুজোর আগে থেকে রাজ্য সরকারও এ ব্যাপারে কড়া মনোভাব নেয়। রাজ্য সরকার রাজ্য জুড়ে বাজি তৈরির ক্লাস্টার গড়ে তোলার কথা বললেও, তা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলে সবুজ বাজির জন্য ব্যবসায়ীদের নির্ভর করতে হচ্ছে ভিন্ রাজ্যের উপরে।কলকাতায় সবুজ বাজি মিললেও চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি তাদের।
বাজি ব্যবসায়ীদের দাবি, এ ভাবে বাইরে থেকে বাজি আমদানি করতে খরচ বাড়ছে। পাশপাশি, সাধারণ বাজির তুলনায় সবুজ বাজির দাম প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে বাজি বিক্রি কতটা হবে তা নিয়েও ধন্দে কারবারিরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, আগে একটি বড় আকারের সাধারণ চরকি ব্যবসায়ীরা কিনে আনতেন ৬ থেকে ৮ টাকায়। সবুজ চরকি কিনতে দাম পড়ছে ২২ টাকা। পশ্চিম চিল্কা গ্রামের বাজি ব্যবসায়ী অসিত মাইতি বলেন, ‘‘১০ বছর ধরে বাজি ব্যবসা করছি। আমার বাজি বিক্রির লাইসেন্স রয়েছে। আগে কালীপুজোর সময় ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকার বাজি কিনে আনতাম। সবুজ বাজির দাম এতটাই বেশি যে ২০ হাজার টাকা বাজি কিনে এনেছি এবার। দাম বেশির কারণে ক্রেতারা খুব কম বাজি কিনছেন। ভাবছি বাজির কারবার ছেড়ে চাষবাসেই মন দেব।’’
গত বছর সাধুয়াপোতা গ্রামে শ্রীকান্ত ভক্তা নামে এক বাজি কারবারির বাড়িতে বিস্ফোরণে দু'জনের মৃত্যু হয়। শ্রীকান্তের ছোট ছেলে অতনু বাজি ব্যবসা ছেড়ে বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ব্যবসা করছেন। অতনুর কথায়, ‘‘বাজি বিক্রির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। তবে সবুজ বাজির যা দাম তাতে ব্যবসা দাঁড় করানো মুশকিল। তাই অন্য পেশায় মন দিয়েছি।’’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যে সবুজ বাজি তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হবে। বাজি ব্যবসায়ীদের দাবি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এখনও কোনও সবুজ বাজির কারখানা গড়ে ওঠেনি। ফলে বাইরে থেকে বাজি বেশি দাম দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে। এতে বাজি বিক্রির পরে তাদের তেমন লাভ থাকবে না বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। পশ্চিম চিল্কার বাজি ব্যবসায়ী প্রবীর মাইতি বলেন, ‘‘সরকারি উদ্যোগে জেলায় জেলায় সবুজ বাজির কারখানা গড়ে উঠলে কম দামে বাজি পাওয়া যাবে। তবে তার আগে বাজি বিক্রি করে খুব একটা লাভের মুখ দেখা যাবে না।’’
আপাতত তাই সবুজ বাজি বিমুখ হয়েছেন বাজি বিক্রেতাদেরই একটা বড় অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy