Advertisement
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
চার মাস বেতন মেলেনি

উৎসবেও নুলিয়াদের ঘরে আঁধার

টানা চার মাস বেতন মেলেনি বলে অভিযোগ। আসা ছিল পুজোর আগে মিলবে বেতন। কিন্তু সেই আশাপূরণ হল না। ফলে পুজোতেও বেতন ছাড়ায় কাজ করতে হচ্ছে দিঘার নুলিয়াদের। হতাশ তাজপুর, শঙ্করপুর এবং মন্দারমণির নুলিয়ারাও।    

দিঘার সৈকতে কতর্ব্যরত নুলিয়ারা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

দিঘার সৈকতে কতর্ব্যরত নুলিয়ারা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

শান্তনু বেরা
দিঘা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

টানা চার মাস বেতন মেলেনি বলে অভিযোগ। আসা ছিল পুজোর আগে মিলবে বেতন। কিন্তু সেই আশাপূরণ হল না। ফলে পুজোতেও বেতন ছাড়ায় কাজ করতে হচ্ছে দিঘার নুলিয়াদের। হতাশ তাজপুর, শঙ্করপুর এবং মন্দারমণির নুলিয়ারাও।

পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে মোট ৫৫ জন নুলিয়া রয়েছে। এঁদের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা। কমলা রঙের পোশাক পরে ওই নুলিয়ারা দৈনিক ৪২৭ টাকা বেতনে কাজ করেন। মাসে ২৮ দিন তাঁদের কাজ করতে হয়। অভিযোগ, জুন থেকে সেপ্টেম্বর— টানা চার মাস ওই নুলিয়ারা বেতন পাননি।

এ দিকে, পুজোর মরসুমে দিঘা-সহ সৈকত শহরে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। বেতন না মেলার কষ্ট ভুলে সমুদ্রে স্নান করতে নামা পর্যটকদের নিরাপত্তার কাজ করছেন নুলিয়ারা। এঁদের অনেকেরই পুজোর পোশাক হয়নি। দুঃখী রয়েছে পরিবারের কচিকাঁচারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নুলিয়া বলেন, “বাড়ির বাবা-মা এবং ছোট ছেলেমেয়েদের এবার পুজোয় কিছু কিনে দিতে পারলাম না। মনটা খুব খারাপ লাগছে।’’

আর এক নুলিয়ার কথায়, ‘‘অনেক পর্যটক তাঁদের পরিবার ও শিশুদের নতুন পোশাক পরিয়ে দিঘায় এসেছেন। সেই সব দেখে আরও হতাশ লাগছে। বাড়ির কথা মনে পড়ছে। আমরা ক্যাজুয়াল কর্মী। তাই কিছু বলতে পারছি না। বোনাস নাই বা জুটুক, এক মাসের বেতনও তো এতদিনে পেলাম না।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নুলিয়ারা প্রতি থানার পরিচালনায় কাজ করে থাকেন। মাসের শেষে থানা থেকে নুলিয়াদের কাজের হিসাব পাঠিয়ে দেওয়া হয় রামনগর ১ ব্লকে। সেখান থেকে কাঁথি মহকুমাশাসকের দফতর ঘুরে তাঁদের কাজের ওই ফাইল যায় তমলুকে ট্রেজারি বিভাগে।

তা হলে এত দিন ধরে নুলিয়ারা বেতন পাননি কেন? রামনগর ব্লক প্রশাসনের দাবি, বেতন সংক্রান্ত কাজ তাঁদের তরফ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রামনগর-১ এর বিডিও আশিসকুমার রায় বলেন, “আমাদের কাছে ফাইল এলে আমরা তা খতিয়ে দেখে একদিনের মধ্যে ছেড়ে দেই। আমরা নুলিয়াদের বেতনের ফাইল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করে দিয়েছি।’’

একই কথা কাঁথি মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্যেরও। তিনি বলেন, “সিভিল ডিফেন্স দফতর থেকে নুলিয়াদের বেতন হয়। তমলুক ট্রেজারিতে তাই নথি পাঠানো হয়। আমরা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফাইল তমলুকে পাঠিয়েছি। তবে যতটুকু তথ্য পেয়েছি, তাতে জেনেছি, তমলুকেও বরাদ্দ টাকা আসেনি। রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। টাকা এলেই দিয়ে দেওয়া হবে।’’

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) শেখর সেন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE