Advertisement
E-Paper

টাকা পেতে ভোগান্তি, রক্তদান শিবিরে অনীহা

ব্যাজ, শংসাপত্র দেওয়া কবেই উঠে গিয়েছে। রক্তদাতাদের টিফিন খরচের জন্য বরাদ্দ ২৫ টাকাও কবে মিলবে কেউ জানে না। ধারদেনা করে রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করে বিপাকে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। টাকা, ব্যাজ, শংসাপত্র না দিয়ে ‘ডিউ স্লিপ’ ধরাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০২:৪৬

ব্যাজ, শংসাপত্র দেওয়া কবেই উঠে গিয়েছে। রক্তদাতাদের টিফিন খরচের জন্য বরাদ্দ ২৫ টাকাও কবে মিলবে কেউ জানে না। ধারদেনা করে রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করে বিপাকে পড়ছেন উদ্যোক্তারা। টাকা, ব্যাজ, শংসাপত্র না দিয়ে ‘ডিউ স্লিপ’ ধরাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। এত ঝক্কি সামলাতে হওয়ায় শিবির করার আগ্রহ কমছে উদ্যোক্তাদের। ফল, গরম পড়তেই বাড়ছে রক্তের আকাল।

রক্তদান করলে সরকারি সিলমোহর দেওয়া শংসাপত্র পেয়ে থাকেন রক্তদাতারা। শিবিরের আয়োজক সংস্থাও শংসাপত্র পেয়ে থাকে। সেই সঙ্গে রক্তদাতা পিছু টিফিন খরচ বাবদ ২৫ টাকা করে দেওয়া হয় আয়োজক সংস্থাকে। এই টাকা দিয়েই রক্ত দেওয়ার পর রক্তদাতাকে টিফিন দেওয়া হয়। টিফিনে থাকে ডিম, কলা, ফলের রস, যা রক্তদাতার শরীরের জন্য প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে শিবিরের উদ্যোক্তারা নিজেরাই টাকা খরচ করে এই টিফিনের বন্দোবস্ত করেন। পরে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে শিবিরে রক্তাদাতার সংখ্যা জানালে টিফিন খরচের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় ব্যাজ, শংসাপত্র।

মেদিনীপুরে অবশ্য এখন এ সব কিছুই মিলছে না। জানানো হচ্ছে, শংসাপত্র পরে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, রক্তদানের পরে রক্তদাতাদের কার্ড-সহ রক্তের গ্রুপ জানানোর কথা। সেটাও সময় মতো জানানো হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, পরে কোনও দিন এসে জেনে যেতে! অথচ, প্রয়োজনের সময়ে এই কার্ড নিয়েই অনেকে রক্তের খোঁজ করেন।

গরম পড়তেই রক্তসঙ্কটে ধুঁকছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সব বড় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক। সমস্যায় অন্য ব্লাডব্যাঙ্কগুলিও। আকাল কাটাতে শিবিরের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রশ্ন উঠছে, শিবির করতে যদি এত সমস্যা হয়, তাহলে দিনে দিনে তো শিবির আরও কমবে। মেদিনীপুরের শপথ চক্রবর্তী বলছিলেন, “কার্ড- শংসাপত্র মিলবে না। এটা অনুচিত। এ সব না মিললে শিবির আয়োজনে উৎসাহ তো কমেই।” প্রতি বছর রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে, এমন সংস্থার এক কর্তা বলছিলেন, “এক সময়ে রক্তদাতাদের অশোকস্তম্ভ উৎকীর্ণ ব্যাজ দেওয়া হত। এটা দিত সরকারই। কিন্তু বছর কয়েক হল সেই ব্যাজ, কার্ড, শংসাপত্রও মিলছে না।’’

সমস্যার কথা মানছেন মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের চেয়ারম্যান অসীম ধরও। অসীমবাবুর কথায়, “গ্রামাঞ্চলে অনেক সংস্থাই রক্তদাতাদের জন্য বরাদ্দ টাকার উপর ভরসা করে শিবিরের আয়োজন করে। ধারে টিফিন নিয়ে আসে। ব্লাড ব্যাঙ্ক টাকা দিলে ধার মিটিয়ে দেয়। এখন তো সব কিছুই অনিয়মিত।’’

সমস্যার কথা মানছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের আশ্বাস, “এই সমস্যা আর বেশিদিন থাকবে না। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলেছি। কার্ড, শংসাপত্র শেষ হয়ে গিয়েছিল। টাকা থাকলে দেওয়া হয়। না হলে কিছু দিন হয়তো দেরি হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ বার থেকে সব কিছু যাতে নিয়মিত দেওয়া সম্ভব হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।” একই আশ্বাস মেদিনীপুর মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার বাঁশরীমোহন মাইতিরও। তিনি বলছেন, “কয়েক হাজার কার্ড, শংসাপত্র আসছে।
আমরা তা শিবিরের আয়োজক সংস্থাদের দিয়ে দেব।’’

Blood Donation Camp Blood Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy