Advertisement
E-Paper

কলেজে দুষ্প্রাপ্য বই সংরক্ষণে আর্থিক সাহায্য

অবহেলায় নষ্ট হচ্ছিল মেদিনীপুর কলেজের বহু দুষ্প্রাপ্য বই। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে থমকে ছিল সংরক্ষণের কাজও। পরিস্থিতি দেখে ইউজিসি-র কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন কলেজ- কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে ইউজিসি। কলেজের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্প্রসারণ ও বহু মূল্যবান বই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০১:১১

অবহেলায় নষ্ট হচ্ছিল মেদিনীপুর কলেজের বহু দুষ্প্রাপ্য বই। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে থমকে ছিল সংরক্ষণের কাজও। পরিস্থিতি দেখে ইউজিসি-র কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন কলেজ- কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে ইউজিসি। কলেজের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্প্রসারণ ও বহু মূল্যবান বই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, “মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য বইগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি ছিল। ইউজিসি অর্থ সাহায্য করেছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শুরু হবে।”

মেদিনীপুর কলেজের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বইপত্রের সংখ্যা খুব কম নয়, সবমিলিয়ে প্রায় ৬৩ হাজার। কলেজে আরও ২৫টি বিভাগীয় গ্রন্থাগার রয়েছে। বরাদ্দ অর্থে কী কী কাজ হবে? কলেজ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মূল্যবান বইগুলো সংরক্ষণের জন্য একাধিক যন্ত্রপাতি কেনা হবে। কোন কোন যন্ত্রপাতি কেনা যেতে পারে? কলেজ সূত্রে খবর, বই সংরক্ষণের জন্য একাধিক যন্ত্রপাতি কেনা যেতে পারে। যেমন, ‘এজিং চেম্বার’, ‘ব্রাইটনেস টিজার’, ‘ইনকিউবেটর’, ‘ডেটালগার’ প্রভৃতি। কোনওটার দাম ৩০ লক্ষ, কোনওটার ৪০ লক্ষ। গ্রন্থাগারে যেখানে বইগুলো সারি দিয়ে রাখা রয়েছে, সেখানকার তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার উপরে নিয়মিত নজরদারির জন্য ‘ডেটালগার’ রাখা যেতে পারে। পোকামাকড় বহু বই নষ্ট করে দেয়। পোকামাকড় থেকে বইপত্র রক্ষা করার জন্য ‘ইনকিউবেটর’ রাখা যেতে পারে।

অন্য দিকে, বইয়ের পাতার রঙ ও উজ্জ্বল্য ধরে রাখার জন্য ‘ব্রাইটনেস টিজার’ কেনা যেতে পারে। অনেক বইয়ের পাতা ক্ষয়ে যায়। তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা থেকে বইয়ের পাতা রক্ষা করার জন্য ‘এজিং চেম্বার’ কেনা যেতে পারে। যদিও কোন কোন যন্ত্রপাতি কেনা হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে। কলেজ সূত্রে খবর, ইউজিসি- র কাছে প্রায় ৪ কোটি টাকা অর্থ সাহায্যের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এই অর্থে কী কী কাজ করা হবে, তাও জানানো হয়েছিল। আপাতত, ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন গোপালচন্দ্রবাবু। তার আগে মেদিনীপুর কলেজের টিচার ইন চার্জ ছিলেন সুধীন্দ্রনাথ বাগ। সুধীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার কলেজের সম্পদ। গ্রন্থাগারের বহু মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য বই সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি। এখানে দেড়শো বছরের পুরনো বইও রয়েছে।”

১৮৭৩ সালে পথ চলা শুরু মেদিনীপুর কলেজের। মেদিনীপুর কলেজের প্রতিষ্ঠা বর্ষের কথা জানা যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮৮৯ সালের ক্যালেন্ডারের ২৬০ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে। কলেজের দীর্ঘ উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতার বাইরে প্রথম কোনও কলেজ হিসেবে মেদিনীপুরকেই অনুমোদন দেয়। স্বাধীনতার পরে ১৯৫৬ সালে কলেজটি ‘গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড’ হয়।

১৯৮৫ সালে মেদিনীপুর কলেজ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসে। ২০০৪ সালে এই কলেজ ‘ন্যাক’ বিচারে এ-প্লাস গ্রেড পায়। ইউজিসি- র কাছ থেকে ‘কলেজ উইথ পোটেনশিয়াল ফর এক্সিলেন্স’ (সিপিই) স্ট্যাটাস মেলে। এখন অবশ্য গ্রেড প্রথা নেই। ন্যাকের বিচারে ৪ পয়েন্টের মধ্যে কলেজের প্রাপ্ত ৩.৫৮ পয়েন্ট। গত বছর, অর্থাত্‌ ২০১৪ সালে মেদিনীপুর কলেজকে স্বশাসিতের মর্যাদা দিয়েছে ইউজিসি।

কলেজ- কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে কলেজ স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হোক। আরেকটা ক্যাম্পাস তৈরি হোক। ইতিমধ্যে এই ক্যাম্পাসের জন্য আবেদনও জানানো হয়েছে। মূল্যবান বইয়ের সংরক্ষণ হলে গবেষণার ক্ষেত্রে অনেকে সাহায্য পেতে পারেন। কলেজের এক শিক্ষকের কথায়, “একাধিক যন্ত্রপাতি কেনা হলে অন্তত বহু মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য বইগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হবে।”

ugc mdinipur college library one crore rupees college books books preservation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy