E-Paper

ফিন সাঁতারের প্রশিক্ষণ নুলিয়াদের!

গত মাসে রাজ্য ‘আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি রমেন্দ্রচন্দ্র বিশ্বাস, সম্পাদক কঙ্কন পানিগ্রাহী মহিষাদলে এসেছিলেন।

আরিফ ইকবাল খান

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪৭
মহিষাদল রাজ স্কুল পুকুরে মনোফিন নিয়ে এক সাঁতারু।

মহিষাদল রাজ স্কুল পুকুরে মনোফিন নিয়ে এক সাঁতারু। নিজস্ব চিত্র ।

জেলার উপকূলের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা মাঝে মধ্যে সামনে আসে। সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নুলিয়ারা থাকলেও অনেক সময় বিপদ এড়ানো যায় না। তাই নুলিয়াদের আরও প্রশিক্ষিত করতে চাইছে ‘আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন’। বিশেষ ধরনের সাঁতারের প্রশিক্ষণ ছ’থেকে সাত দিন পেলেই নুলিয়ারা আরও দক্ষ হবে বলে অভিমত সংস্থার।

‘আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে’র অধীন ‘ফিন সুইমিং’ ভারতে জনপ্রিয় হচ্ছে। ওই সাঁতার বিশ্বস্তরে প্রতিযোগিতামূলক ভাবেও আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতার অন্তর্গত একটি বিশেষ বিভাগের সাঁতার হল ‘মনোফিন সুইমিং’ এবং ‘বাই ফিন সুইমিং’। যেখানে মাছের পাখনার মতন একটি অংশ পায়ে পরে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন প্রতিযোগীরা। মাছের মতো জলের নীচ দিয়ে পুরো সাঁতারটি হয়।

গত মাসে রাজ্য ‘আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি রমেন্দ্রচন্দ্র বিশ্বাস, সম্পাদক কঙ্কন পানিগ্রাহী মহিষাদলে এসেছিলেন। রাজ পুকুর, কয়েকটি পুকুরে সাঁতার শেখার পরিকাঠামো ঘুরে দেখেন। কঙ্কন জানান, এই ধরনের সাঁতার প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই রাজ্যে সাড়ে চারশোর বেশি সাঁতারু পাখনা নিয়ে সাঁতার কাটতে পারেন। যার মধ্যে কয়েকজন পূর্ব মেদিনীপুরের। সম্প্রতি ১,২০০ প্রতিযোগীর মধ্যে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ফিন সুইমিংয়ে এ রাজ্য সেরা হয়েছে। এর পরেই এই সাঁতার প্রতিযোগিতা ছাড়া বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগের বিষয়টিও সামনে আসছে।

মহিষাদলের সাঁতারের পরিকাঠামো পরিদর্শনের ফাঁকে সংস্থার আধিকারিকেরা দিঘা, মন্দারমণিতেও গিয়েছিলেন। সেখানে উদ্ধার কাজে নুলিয়াদের ভূমিকা দেখে তাঁদের মনে হয়েছে, ফিন সুইমিংয়ের প্রশিক্ষণ পেলে নুলিয়ারা আরও ভাল কাজ করতে পারবেন। কঙ্কন নিজে মহিষাদলের মানুষ। তিনি বলছেন, ‘‘প্রতি বছর তাজপুর, দিঘা, মন্দারমণি এলাকায়বহু পর্যটত অসতর্কবশত সমুদ্রে ডুবে যান। উদ্ধার করতে নুলিয়ারা এগিয়ে আসেন। আমরা দেখেছি নুলিয়াদের কাছে এই ধরনের পাখনা (ফিন) এবং ফিন সাঁতারে প্রশিক্ষণ থাকলে তাঁরা অনেক দ্রুত উদ্ধার কার্য করতে পারবেন।’’ কঙ্কন জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতে তাঁরা প্রশাসনিক সহায়তায় ফিন দিয়ে সমুদ্র ও নদীতে কীভাবে দ্রুত উদ্ধারকার্য করা যায়, তার প্রশিক্ষণ দিতে চান। এই মর্মে তাঁরা পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছেন। এতে জীবন যেমন দ্রুত বাঁচানো যাবে, তেমনই এই ধরনের ‘আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস’ আরও জনপ্রিয়ও হবে।

এই উদ্যোগ অবশ্য একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানাচ্ছে সংস্থা। এই ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তা হলে পাশে থাকবে প্রশাসন? দিঘা-শঙ্কপুর উন্নয়ন পর্ষদের এগজিকিউটিভ অফিসার নীলাঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও সংস্থা যদি প্রশিক্ষণ দিতে চায়, তবে তারা আমাদের আবেদন করলে সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সব নুলিয়াকে এককালীন প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে কখন, কতজন নুলিয়াকে এ ধরনের প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে, তা ওই সংস্থার তরফে প্রস্তাব আকারে জমা দিলে বিবেচনা করে দেখা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Under Water Sports Association

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy