দুর্গাপুজোর পরেই মেতে ওঠা আর এক পুজোর আনন্দে। ঐতিহ্য, উৎসব, আড়ম্বর, থিম— কোনও কিছুই বাদ পড়ে না হলদিয়ার লক্ষ্মীপুজোয়। সুতাহাটা-মহিষাদলের চাউলখোলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০-১২টি পুজো হয়। প্রতিযোগিতায়ও পুজো কমিটিগুলি কেউ কাউকে একচুল জমি ছাড়তে নারাজ। থিমের টক্কর সমানে সমানে লড়ছেন সকলে।
উরি সেক্টরে ভারতীয় সেনাদের ওপর পাক হামলার থিমে পুজো করে চমকে দিয়েছে হলদিয়ার কিসমত শিবরামনগর শোভরামপুর সমন্বয় লক্ষ্মী পুজো কমিটি। তাদের মণ্ডপ ভাবনায় উঠে এসেছে এক মঙ্গলদীপ। ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এই প্রদীপ গড়া হয়েছে বলে জানালেন, পুজো কমিটির সম্পাদক বিপুল মান্না। তাঁর কথায়, প্রায় তিনশো মাটির ভাঁড়, তিনশো মাটির প্রদীপ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে ৩০ ফুট/৪০ ফুট। কাঠের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি হয়েছে লক্ষ্মী প্রতিমা। এ বার এই পুজোর ৬০তম বর্ষ। বাজেট তিন লক্ষ টাকা।
চাউলখোলা গ্রামের অগ্রণী সঙ্ঘের পুজোর এ বার হীরক জয়ন্তী বর্ষ। ৬ লাখ টাকা বাজেটের পুজোতে রয়েছে বিশেষ চমক। ১৬ ফুট উচ্চতার লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ে তোলা হয়েছে ছোলা-মটর দিয়ে। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে রঙিন কাগজ, থার্মোকল দিয়ে, মধ্যপ্রদেশের মহাকালেশ্বর মন্দিরের আদলে।
শিবরামনগরের বিনয়ী সঙ্ঘে আবার পুজো পাচ্ছেন দশ হাতের মহালক্ষ্মীর প্রতিমা। মণ্ডপ সজ্জায় দেশের বিভিন্ন মন্দিরের কোলাজ। সেটাই থিম, জানালেন, পুজো কমিটির সম্পাদক শ্যামল ভৌমিক। সেখানে রয়েছে কালীঘাটের মন্দির থেকে শুরু করে কামাখ্যা মন্দিরের আদলও।
থিমের পাশাপাশি সাবেকিয়ানার ছোঁয়াও দেখা রয়েছে কোনও কোনও পুজোয়। শিবরামনগরে ঋষি বঙ্কিম স্মৃতি সঙ্ঘের পূজো এ বার ৪০ বছরে পড়ল। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপে পুজোর ঐতিহ্যই দেখার মতো। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে বিশাল মেলারও আয়োজন করা হয় এখানে। প্রায় সব পুজো কমিটির সদস্যরাই লক্ষ্মী পুজো বস্ত্রদান, কৃতী পড়ুয়াদের সাহায্য করেন।