বাঁ দিকে উর্জাস্বতী। ডান দিকে অভিমন্যু সাউ। — নিজস্ব চিত্র
একজনের বয়স সাত। অন্য জনের চুয়াল্লিশ। প্রথম জন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। অন্য জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁদের দু’জনেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। যদিও প্রতিবন্ধকতার বাধাকে দূরে ঠেলে তাঁরা দু’জনেই পরিচয় দিয়েছেন দক্ষতার। তাই তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। গত ৩ ডিসেম্বর প্রতিবন্ধী দিবসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে দু’জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যপাল।
খড়্গপুর শহরের খরিদার বাসিন্দা বছর সাতের উর্জস্বতী রায়চৌধুরী সঙ্গীত ও অঙ্কনের জন্য পুরস্কার পেয়েছে। দাঁতন-২ ব্লকের বছর চুয়াল্লিশের অভিমন্যু সাউকে কর্মক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতার জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে।
জন্মের পর থেকেই লড়াইটা কঠিন ছিল উর্জস্বতীর। সে ‘স্পাইনোমাসকুলার অ্যাট্রোফি’ রোগে আক্রান্ত। প্রতিবন্ধকতার দরুন সাত বছর বয়সেও উর্জস্বতী দাঁড়াতে পারে না। হাতও চলে ধীরে। দু’বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা রায়চৌধুরীর কাছে গান শেখার হাতেখড়ি উর্জস্বতীর। আর এখন সেই খুদে শিল্পীই গান গেয়ে সকলের নজর কাড়ছে। তার বাবা উত্তীয় রায়চৌধুরী বলেন, “আমার মেয়ের ফুসফুসেও সমস্যা রয়েছে। তারপরেও এত কম বয়সে যে কোনও গান সহজেই তুলে নেয় মেয়ে। উৎসাহ দিতে ওর সাথে আমরাও লড়াই করছি। সাফল্য পেলে তবেই এই লড়াইয়ের সার্থকতা।”
দাঁতন-২ ব্লকের বামনাসাই এলাকার বাসিন্দা অভিমন্যুবাবু বামনাসাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছোট থেকেই পোলিওতে আক্রান্ত অভিমন্যুবাবু ভাল করে হাঁটতে পারেন না। তারপরেও শিক্ষকতার কাজে প্রতিবন্ধতাকে বাধা হতে দেননি তিনি। অভিমন্যুবাবু বলছেন, “স্কুল আর সংসার ঘিরেই আমার সবকিছু। সকলের শুভেচ্ছায় এই পা নিয়েও থেমে না থেকে কাজ করে গিয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি চাই আমার স্কুলকে রাজ্য সরকার মডেল স্কুল হিসাবে ঘোষণা করুক। তবেই আসল সার্থকতা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy