Advertisement
E-Paper

ভোটের মুখে মশার হুল ঠেকানোর লড়াই

মশা মারতে নালা-নর্দমায় ছাড়া হচ্ছে গাম্বুসিয়া ও গাপ্পি মাছ। নিয়ম করে পরিষ্কার করা হচ্ছে হাট-বাজারও। কেন হঠাৎ এই তৎপরতা?

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০০:২৫
মশার লার্ভা নষ্ট করতে চন্দ্রকোনায় পুকুরে ছাড়া হচ্ছে মাছ। নিজস্ব চিত্র

মশার লার্ভা নষ্ট করতে চন্দ্রকোনায় পুকুরে ছাড়া হচ্ছে মাছ। নিজস্ব চিত্র

জেলা জুড়ে ডেঙ্গির থাবায় মাসকয়েক আগেই নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল। প্রশাসনের গাফিলতির নালিশ শুনতে শুনতে নাজেহাল হয়ে গিয়েছিলেন শাসকদলের অনেক নেতাও! গত বছর অবশ্য কোনও ভোট ছিল না। এ বার দরজায় কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে যাতে ফের মশা হুল ফোটাতে না পারে, সে জন্য আগাম তৎপর জেলা প্রশাসন।

মশা মারতে নালা-নর্দমায় ছাড়া হচ্ছে গাম্বুসিয়া ও গাপ্পি মাছ। নিয়ম করে পরিষ্কার করা হচ্ছে হাট-বাজারও। কেন হঠাৎ এই তৎপরতা? ইতিমধ্যেই গড়বেতা-সহ দু’একটি ব্লকে বিক্ষিপ্ত ভাবে ডেঙ্গির লক্ষণ দেখা দিয়েছে। তাই আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মাঠে নেমে অভিযান শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, “শান্তিতে ভোট প্রক্রিয়া শেষ করতে মশা নিধন জরুরি। ভোটের নানা কাজের সঙ্গে মশার সঙ্গেও লড়াই করছেন বিডিও-রা!”

ভোটের আগে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক নেতাদের পাড়ায় পাড়ায় ঢুঁ মারা শুরু হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে গল্পের ফাঁকে নতুন নালা তৈরি বা মাটির রাস্তায় মোরাম ফেলা‌-এ রকম নানা আবদারও উঠে আসছে। এমনিতেই ডেঙ্গি নিয়ে গত বছর তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রশাসনের। ক’দিন আগে মেদিনীপুর সফরে এসে প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকেই ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়। সতর্ক করা হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকেও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে মশা মারতে তাই নানা কর্মসূচি চলছে ব্লকগুলিতে।

দিন কয়েক আগেই চন্দ্রকোনা-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার নালা-ছোট ডোবা গুলিতে গাপ্পি ও গাম্বুসিয়া মাছ ছাড়া হয়েছে। ডেঙ্গির বাহক এডিস মশা জন্মানোর আগেই মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে গাপ্পি মাছ। জেলা প্রশাসন বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনকে তাই দ্রুত নালা-নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়ার আর্জি জানিয়েছে। শুধু গাপ্পি বা গাম্বুসিয়া মাছই নয়, মশা মারতে নেওয়া হয়েছে আরও নানা কর্মসূচি। শহরাঞ্চলের মতো এ বার বছরের শুরুতেই ডেঙ্গি নিয়ে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার।

জনবহুল এলাকার প্রতিটি বাড়িতেই হাজির হচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতর ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। গত বছর যে সব গ্রামে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল, সেখানেও চলছে প্রচার। পরিদর্শনে বেরিয়ে কোথাও আবর্জনা বা জমা জল নজরে এলেই এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। নোংরা সাফ করে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং। প্রত্যন্ত গ্রামের হাট-বাজার গুলির দিকেও নজর রেখেছে পঞ্চায়েত প্রশাসন। বিডিওদের নির্দেশ মেনে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ হাটের নোংরা-বর্জ্যগুলি মাটি খুঁড়ে গর্তে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। পাড়ার অলিগলি থেকে মোরাম রাস্তার দু’ধারে স্প্রে করা হচ্ছে মশানাশক তেলও।

মশা মারতে ব্লক ও পঞ্চায়েতের আচমকা এই ‘ভোলবদলে’ খুশি গ্রামবাসীরা। মুচকি হেসে ঘাটাল ব্লকের মনসুকার এক তরুণী বলেই ফেললেন, “মে মাসেই তো ভোট সারা হয়ে যাবে। আর তখনই ডেঙ্গির ভরা মরসুম। ভোটের সঙ্গে মশাও বিদায় হলেই ভাল!”

Dengue Mosquito Water pollution ডেঙ্গি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy