Advertisement
E-Paper

ফের বৃষ্টিতে ডুবল জেলা হাসপাতাল

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২৪
রোগীদের ওয়ার্ডেও ঢুকেছে জল। মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

রোগীদের ওয়ার্ডেও ঢুকেছে জল। মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

নিম্নচাপের জেরে বজ্রপাত সহ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার ভোররাতে। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ফেরে জলে ডুবল তমলুক জেলা হাসপাতাল চত্বর। এমনকী হাসপাতাল চত্বর ছাপিয়ে সেই জল ঢুকে পড়ল রোগীদের ওয়ার্ডেও। হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে রোগী দেখতে হল চিকিৎসকদের। বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার চত্বরও। কদিন আগেই ভারী বৃষ্টির জেরে জমা জলে পাইকারী আনাজ বাজার বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ফের নতুন করে জল জমায় ভোগান্তির শিকার ব্যবসায়ী থেকে শহরবাসী।

মঙ্গলবার সকালে খোদ জেলা হাসপাতালে জলমগ্ন অবস্থার জেরে নাকাল হতে হয়েছে রোগী, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সহ রোগীর পরিজনদের। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে। জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতাল চত্বরে মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের কাজ চলায় জলনিকাশি ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে বৃষ্টি হলে জমা জল বেরোতে সমস্যা হচ্ছে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সপ্তাহ খানেক আগেও নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টিতে জেলা হাসপাতালের চত্বর জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। অন্তর্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের সামনে জল জমায় রোগীদের হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল রোগীর বাড়ির লোকদের। পরে পাম্প বসিয়ে জমা জল সরানোর ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। ফের নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার ভোররাত থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। একটানা প্রায় তিন ঘণ্টা বৃষ্টিতে হাসপাতাল চত্বরে জল জমতে শুরু করে। হাসপাতালের অন্তর্বিভাগের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের শয্যার নীচে হাঁটুসমান জল দাঁড়িয়ে যায়। জল ভেঙেই রোগীদের দেখেন চিকিৎসকরা। রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসা লোকজন ৈভোগান্তিতে পড়েন। পরে বেলা গড়ালে পাম্প বসিয়ে জমা জল বের করার ব্যবস্থা হয়। বেলা ১২টা নাগাদ হাসপাতালের ভিতর থেকে জল নামে। তবে হাসপাতাল চত্বরে জল জমে রয়েছে।

রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের স্বাস্থ্য শাখার জেলা সম্পাদক নীলকান্ত নায়েকের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের চত্বরে জল নিকাশির সমস্যা দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আগেই দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি।’’ হাসপাতালের বেহাল নিকাশি নিয়ে সুপার গোপাল দাস মন্তব্য করতে চাননি। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতাল চত্বরে মেডিক্যাল কলেজের নির্মাণ কাজ চলায় নিকাশিনালাগুলি অকেজো হয়ে গিয়েছে। তবে এ দিন আটটি পাম্প বসিয়ে জল দ্রুত বের করার ব্যবস্থা হয়েছে।’’

জল জমে যাওয়ায় এদিন সমস্যায় পড়েন পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের আনাজ ও মাছ ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত থেকে উঠে রাস্তার উপরেই শুরু হয় বেচাকেনা। ফলে পাঁশকুড়া স্টেশন-প্রতাপপুর রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘শহরের প্রতিটি নিকাশি নালা আবর্জনায় ভর্তি। ২০১৭ সালে পুরসভার নির্বাচনের আগে জেলা তৃণমূলের নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভোটে জিতলে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা সচল করে দেবেন। কিন্তু কথা রাখেনি তৃণমূলের পুরবোর্ড।’’ দিন কয়েক আগে জমা জলের কারণে শহরের পাইকারী আনাজ বাজার বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। পুরপ্রধান নন্দ কুমার মিশ্র বলেন, ‘‘এই এলাকায় জল জমার সমস্যা দীর্ঘদিনের। চাঁপাডালি এলাকায় একটি স্লুইস দিয়ে জল ঢুকে পাঁশকুড়া স্টেশন এলাকা জলমগ্ন হয়। আমরা সেচ দফতরকে বলেছি ওই স্লুইস গেটেরে মাধ্যমে জল সুরার ক্যানালে ফেলার ব্যবস্থা করতে। পাশাপাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পাঁশকুড়া মাস্টার ড্রেনেজ স্কিম দ্রুত বাস্তবায়িত করার প্রক্রিয়া চলছে।’’

District Hospital Rainfall Midnapore Depression
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy